একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকেই বঙ্গ বিজেপিতে শুরু হয়েছে বিরাট চাপানউতোর। একের পর বিধায়ক নেতারা সঙ্গ ত্যাগ করেছেন। সম্প্রতি দলের অন্দরের এই ক্ষোভের মাঝেই ২ দিনের বঙ্গ সফরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এবার অমিত শাহ ফায়ার যাওয়ার পরই বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিরটুইট ঘিরে শুরু নয়া জল্পনা।
বঙ্গ বিজেপিতে দলের অন্দরের ক্রোধ যেন কিছুতেই মিটছে না, কখন ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তো কখনও বাবুল সুপ্রিয় ইতিমধ্যেই বিজেপি ছেড়ে শাসক দল অর্থাৎ তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন অনেকেই। বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের অবস্থান ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা। পাটশিল্প নিয়ে 'সরব' অর্জুনকে দিল্লিতে তলব ও করেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে এরপর মেতে নি সমস্যা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই ধারণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণ পেলেই যে কোনও সময় পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলের পথ অনুসরণ করতে পারেন অর্জুন সিং। তবে এবার শুধু অর্জুন সিং নন, আর বিজেপি নেতার টুইট ঘিরেও শুরু হয়েছে নয়া জল্পনা।
কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া আসানসোল লোকসভার উপনির্বাচনে বিজেপির হারের কারণ অনুসন্ধানে নেমে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার কারণেই আসানসোল লোকসভার উপনির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে তৃণমূল। এমন কি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের ব্যাপক প্রভাব ভোটের ফলাফলে পড়েছে বলেও মনে করেছিলেন তিনি। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বঙ্গ সফরের ফের টুইটারে জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিতর্কিত মন্তব্য শোরগোল শুরু রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন- ঘূর্ণীঝড়ের আশঙ্কায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনির কর্মসূচি বদল, পিছিয়ে গেল মমতার জেলা সফর
আরও পড়ুন- অসম সফরে যাচ্ছেন অভিষেক, 'যেটুকু আছে, তাও যাবে', কাকে নিশানা সুস্মিতাদের
আরও পড়ুন- 'ভয়ের কী আছে, সন্দেহ হলে আমাদেরও ডাকতে পারে', রুজিরার গ্রেফতারি পরোয়াণা নিয়ে বোঝালেন দিলীপ
টুইটে ঠিক কী লিখেছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি?
অমিত শাহের বাংলা থেকে ফিরে যাওয়ার মাত্র ২ দিন যেতে না যেতেই টুইটারে জিতেন্দ্র তিওয়ারি লিখেছেন, 'বাংলায় জিততে চান? আগে বাংলার মানুষের হৃদয় জিততে শিখুন।' ঠিক কাকে উদ্দেশ্য করে এমন মন্তব্য করেছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি? তবে কি এবার অর্জুন সিংয়ের পথেই হাঁটছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি? এই নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। প্রসঙ্গত, অমিত শাহের বঙ্গ সফরের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে 'রাজনৈতিক টুরিস্ট' বলে কটাক্ষ করেছিলেন বিরোধীরা।
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে ভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আনাগানো দেখা গিয়েছিল বাংলায় তা প্রায় অনেকটাই থমকে যায় বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের এক তরফ জয়ের পর। তবে শুধু বিধানসভাই নয়, রাজ্যের উপনির্বাচনগুলিতেও কার্যত ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির কেন্দ্রেই ৯৮ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। এক সময়ে তৃণমূলের হাত ছেড়েই বিজেপির হাত ধরেছিলেন অর্জুন সিং এবং জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এবার যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিজেপি পদাধিকারীদের মধ্যে রোষ ক্রমশ বড় আকার ধারণ করছে তারই মাঝে জিতেন্দ্র তিওয়ারির এহেন টুইট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।