সংক্ষিপ্ত
বেশ কয়েকদিন ধরেই তিনি বিজেপি বিরোধী সুর তুলে সংবাদ শিরোনামে রয়েছেন। এরই মধ্যে বাড়ছে দলবদলের জল্পনা। কারণ কিছুদিন আগেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের জুট শ্রমিকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্য চেয়ে চিঠি দেন তিনি।
বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের সুর ফের বেসুরো। এবার রীতিমত রাস্তায় নেমে মঞ্চ বেঁধে বিজেপি বিরোধী বক্তব্য রাখতে শোনা গেল ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংকে। বেশ কয়েকদিন ধরেই তিনি বিজেপি বিরোধী সুর তুলে সংবাদ শিরোনামে রয়েছেন। এরই মধ্যে বাড়ছে দলবদলের জল্পনা। কারণ কিছুদিন আগেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের জুট শ্রমিকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্য চেয়ে চিঠি দেন তিনি।
তবে শুধু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নন, চিঠি গিয়েছে আরও চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তালিকায় রয়েছেন বাংলা, বিহার, ওডিশা ও অসমের মুখ্যমন্ত্রীরাও। বুধবার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে ১৫টি জুটমিল বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন অর্জুন সিং। তিনি বলেন একের পর এক জুটমিল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই জুটমিলগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের তত্বাবধানে ছিল। তিনি স্থানীয় সাংসদ হয়ে যদি এদের পাশে না দাঁড়ান, তবে কী করে চলবে। এই ইস্যুতে বিজেপি সরকারের প্রচ্ছন্ন সমালোচনাও করেন তিনি।
অর্জুন সিংয়ের বুধবারের বক্তব্য থেকে বিজেপির সঙ্গে তার দূরত্ব যে বাড়ছে বই কমছে না, তা স্পষ্ট। এদিন নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে অর্জুন সিং বলেন এরা তাঁর ভোটার। এদের ভালো মন্দ দেখার দায়িত্বও তাঁর। এজন্য যদি দলের সমালোচনা করা ভুল হয়, তবে সেই ভুল তিনি করতে রাজি।
এর আগে পাটের দাম নিয়ে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কার্যত সাত দিন সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। মমতাকে চিঠিতে বিজেপি সাংসদ লেখেন, "পাটের দাম বেঁধে দেওয়ার কেন্দ্রীয় জুট কমিশনারের সিদ্ধান্তের জেরে আমাদের রাজ্যের পাটচাষি, জুটমিলের কর্মী এবং পাটশিল্পকে যে কতটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে, তা আপনি অবশ্যই জানবেন। বাধ্য হয়ে কেন্দ্রের জুট কমিশনারের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছি। আমি অনুরোধ করছি, দয়া করে আপনি কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিতে হস্তক্ষেপ করুন।"
এদিকে এভাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অর্জুনকে সরাসরি সরব হতে দেখে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। একাংশের মতে, তাহলে কি এবার ঘরওয়াপসি হতে চলেছে অর্জুনের? আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি বেড়ে গিয়েছে। এই বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি এই শিল্পকে বাঁচানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশেও চেয়েছিলেন। আর এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছিলেন তিনি। তারপরই তড়িঘড়ি তাঁকে দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল।
সেখানে বস্ত্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক 'ইতিবাচক' হয়েছে বলেও টুইট করে জানিয়েছিলেন। এরপর অনেকেই ভেবে নিয়েছিলেন যে এবার হয়তো অর্জুনের মান ভাঙল। কিন্তু, সেই আশায় সম্পূর্ণ জল ঢেলে দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ নিজেই। আবারও 'বেসুরো' বাজলেন তিনি। জানিয়েছেন, লড়াই তিনি ছাড়ছেন না। যতক্ষণ না তাঁর দাবি পূরণ হচ্ছে ততক্ষণ আন্দোলন জারি রাখবেন তিনি।
আরও পড়ুন- বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে বিজেপিতে গণইস্তফা, তথাগত-অনুপমের কথাই কি সত্যি হল এবার