দিন কয়েক আগেই সামনে এসেছিল সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে অশালীন পোস্ট। এই অসভ্যতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী আত্রেয়ী হালদার। সেই ঘটনার রেশ মেলাতে না মেলাতেই সামনে এল স্বামী বিবেকানন্দকে নিয়ে অসালীন মিম।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে এল নতুন কুরুচিকর মন্তব্য। এবার স্বামী বিবেকানন্দকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ দুই নেটিজেনের। স্বামী বিবেকানন্দকে নিয়ে একাধিক আশালীন মন্তব্য করা হয়েছে। শেয়ার করা হয়েছে একাধিক মিম। যা রীতিমত আপত্তিজনক। এবারই এই বিষয়টি নিয়ে রুখে দাঁড়ালেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী আত্রেয়ী হালদার। ইতিমধ্যেই তিনি এফআইআর দায়ের করেছেন দুই অভিযুক্ত অভিষেক সাহা ও অন্তরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে।
ফেসবুকে তাঁরা বিবেকানন্দকে নিয়ে একাধিক মন্তব্য করেছেন আর মিম শেয়ার করেছেন। যেখাবে রীতিমত অপমানকর মন্তব্য করা হয়েছে স্বামীজির নামে। আত্রেয়ী হালদার অন্তরা আর অভিষেকের নাম উল্লেখ করেছেন। বলেছেন দুই তরুণ তরুণী স্বামীজিকে নিয়ে একাধিক অশালীন পোস্ট করেছেন। এটি একটি ঘৃণ্য কাজ। তিনি আরও বলেছেন স্বামীজি দেশের আদর্শ, তরুণ প্রজন্মের কাছে এখনও তিনি পথপ্রদর্শক। অন্যদিকে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুও স্বামীজির আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন। তিনি স্বামীজির আদর্শে দেশ গঠনের স্বপ্ন দেখতেন। তাই অন্তরা ও অভিষেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন পুলিশের কাছে। তিনি কলকাতা সাইবার ক্রাইমের হাতে তথ্য প্রমাণ তুলে দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
স্বামী বিবেকানন্দকে নিয়ে এই অশ্লীল মিম শেয়ার করার আগে নেতাজি সুভাষকে নিয়েও কয়েকটি অশালীন মিম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। জাপান ও জার্মানির ম্যাচে নিয়ে এই মিমগুলো তৈরি হয়েছিল। পৃথ্বী বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি ম্যাচের দিন একটি পোস্ট শেয়ার করেন। মিমে লেখা হয়েছিল 'নেতাজী বলছেন এবার কাকে সাপোর্ট করি?' পৃথ্বীশ বিশ্বাস লিখেছিলেন- সুভাষকে বোঝা বড় শক্ত। এই পোস্টটি অনেকেই শেয়ার করে আর নিজেদের মন্তব্য জানায়। এখানে অনেকে তোজো আর নেতাজীর সম্পর্ক নিয়ে অনেক রকমের কুরুচিকর মন্তব্য করেন। সুভাষচন্দ্র বসু শুধুমাত্র একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী নন, তিনি নেতাজি। এখনও দেশের কোটি কোটি মানুষ তাঁকে দেশনায়ক বলে পূজা করেন। এহেন একজন দেশনায়ককে নিয়ে অশ্লীল মিম-এর বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি আইনজীবী আত্রেয়ী হালদার। তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন এবং তাঁর অভিযোগের পরই নেটিজেনরা কিছুটা হলেও পিছু হটে। তেমনই এক নেটিজেন রাজদীপ বিশ্বাস একটি লম্বা-চওড়া ফেসবুক পোস্টে পুরো বিষয়টির জন্য ক্ষমা চান।
নেতাজিকে নিয়ে এমন অশ্লীলতার রেশ মেলাতে না মেলাতেই স্বামী বিবেকানন্দকে নিয়ে অশ্লীলতা। একজন বাঙালি কীভাবে এমন কাজ করতে পারে তাতে প্রশ্ন তুলেছেন আত্রেয়ী। বাংলার সমাজজীবনে এ কোন অবক্ষয় যার জেরে প্রণম্য বাঙালি মণীষিরাও ছাড় পাচ্ছে না! অথচ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে স্বামী বিবেকানন্দ- এঁরা বাঙালি জাতির মুখ। বাঙালি সমাজের এমন দৃষ্টিভঙ্গিতে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ আত্রেয়ী।