ভদ্র স্বভাবের তমালই আসলে বাংলাদেশের জামাত জঙ্গি ম্যাক্সন? ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর হতবাক হরিদেবপুরের বাসিন্দারা

বাংলাদেশের জামাত জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ ছিল ম্যাক্সনের। তাঁর আত্মহত্যার পর পুরো ব্যাপার খোলসা হতেই হতবাক পরিচারিকা থেকে শুরু করে এলাকার লোকজন।

Web Desk - ANB | Published : Dec 1, 2022 7:53 AM IST / Updated: Dec 01 2022, 04:52 PM IST

হরিদেবপুরের মতিলাল গুপ্ত রোডে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন তমাল রায় চৌধুরী। স্বভাবে এবং ব্যবহারে এলাকার মানুষজনের কাছে যথেষ্ট সমাদৃত ছিলেন তমাল। ওই এলাকায় প্রায় ৭-৮ মাস যাবৎ বাস করছিলেন তিনি। হঠাতই মঙ্গলবার তাঁর লিভ ইন সঙ্গিনী বেরিয়ে যাওয়ার পর ফের ফ্ল্যাটে ফিরে এলে উদ্ধার করা হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন বলে প্রথমে জানিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু, এরপরই খোলসা হয় রহস্যের জাল।

দেখা যায়, এই তমালই আসলে বাংলাদেশের জামাত উল মুজাহিদিন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য নুর উন লতিফ নবি ওরফে সারওয়ার ম্যাক্সন। চট্টগ্রামের চাঁদগাঁওয়ে বাস করতেন এই যুবক। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তিনি বাস করতেন বরানগরের নর্দান পার্ক এলাকায়। সেখানকার মানুষজন এমনকি বাড়ির পরিচারিকার সাথেও অত্যন্ত ভালো ব্যবহার ছিল তাঁর। কিন্তু, ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে ডানলপ থেকে পাকড়াও করে সিআইডি। ভোটার, আধার, ইত্যাদি বহু জাল ভারতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে তমাল সেজে কলকাতায় লুকিয়েছিল এই দুষ্কৃতী। বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ, জাল নথি তৈরি এবং ষড়যন্ত্র সহ একাধিক ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে সিআইডি। এপ্রিলে জামিনে ছাড়া হয় তাকে।

অবশ্য তার দুষ্কর্ম শুরু হয়েছিল আরও বহুকাল আগে থেকে। জানা গেছে, জামাত ইসলামি সংগঠনের শাখা ছাত্র শিবিরের অ্যাকশন স্কোয়াড কর্মী ছিল সারওয়ার ম্যাক্সন। ২০১১ সালে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবেড়িয়া থেকে সে ও তার এক সঙ্গীকে এ কে-৪৭ এবং গুলি-সহ গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে জামিনে ছাড়া পেয়ে ওমান এবং কাতারে চলে যায় এই কুখ্যাত ম্যাক্সন। ধীরে ধীরে সে সেখানকার বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ত্রাস হয়ে ওঠে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর সেখানে সে তোলা আদায় করত বলে অভিযোগ। দু’বছর পর আবার বাংলাদেশে ফিরে আসার সময় ম্যাক্সনের সঙ্গীকে সেখানকার পুলিশ ধরে ফেললে ম্যাক্সন গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে আসে ভারতে, এবং একেবারে কলকাতায়। ২০১৯ থেকেই নাম ভাঁড়িয়ে ডানলপে বাড়ি ভাড়া নেয় ছদ্মবেশী তমাল।

বরানগরের বাড়ির পরিচারিকার দাবি, মাঝে মাঝেই তমালের কাছে আসতেন তার স্ত্রী, স্ত্রীয়ের বোন এবং কোনও এক ভাই। তার স্ত্রীয়ের প্রথম পক্ষের স্বামী থাকতেন মধ্যমগ্রামে। সেখান থেকেই এসে তিনি মাঝে মাঝে তমালের সঙ্গে থাকতেন বলে জানিয়েছেন পরিচারিকা। অন্যদিকে, হরিদেবপুরে তমালের সাথে থাকতেন একজন লিভ ইন পার্টনার, তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। ঘটনার দিন তিনি ফ্ল্যাটে এসে দেখেন দরজা বন্ধ। এরপর প্রতিবেশীদের ডেকে এনে দরজা ভাঙলে দেখা যায় গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে তার মৃতদেহ। প্রাথমিকভাবে এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই অনুমান করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। কী কারণে মাক্সনের মৃত্যু এবং কারা তার সঙ্গে জড়িত ছিল, তা খতিয়ে দেখছে সিআইডি। খবর দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের দূতাবাসে।


আরও পড়ুন-
মৃতদেহকে কেটে টুকরো টুকরো করে লোপাটের চেষ্টা, দিল্লিতে বাবার কাটা মাথা হাতে নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছিল ছেলে
শুরু হল গুজরাত নির্বাচন, মোদী-শাহের গড়ে সকাল আটটা থেকে শুরু মসনদ দখলের মহারণ
মেরামতির কাজের জেরে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাতিল একাধিক লোকাল ট্রেন, ব্যাপক ভোগান্তির আশঙ্কায় নিত্যযাত্রীরা

Share this article
click me!