
Dilip Ghosh on Srinjoy Dasgupta: মায়ের বিয়ের একমাসের মধ্যেই রিঙ্কু পুত্র সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের রহস্যমৃত্যু। নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার দেহ। এটি নিছক আত্মহত্যা নাকি এর পিছনে বড় কোনও রহস্য রয়েছে? সেই উত্তর অবশ্য এখনও অজানা। এদিকে রিঙ্কু মজুমদারের ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে বুধবার মুখ খুলেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh News)।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ''প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্তের সম্পূর্ণ রিপোর্ট পেলে বুঝতে পারব। বন্ধু বান্ধব নিয়ে থাকত। একা থাকেনি সেইভাবে। ড্রাগের সমস্যা ওর আগে থেকেই ছিল। ওর কাউন্সেলিং চলছিল। ওর অফিসের ডাক্তার দেখত। হঠাৎ করে কেন হল কি হল রিপোর্ট এলে বুঝতে পারব। একটা তরতাজা ছেলে। আজকের যুবসমাজের মধ্যে নেশার যে কি প্রভাব, তার এটা একটা নমুনা। ঠিক কি হয়েছিল বলার আগেই তো ছেলেটা শেষ হয়ে গেল। আমাদের সবার কাছে এটা একটা বড় শিক্ষা। আমাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় যাচ্ছে কি করছে? তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়না। তারপরেও এতবড় রিস্ক থেকে যায়। এটাই চিন্তার বিষয়।''
জানা গিয়েছে, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের নববিবাহিতা স্ত্রী রিঙ্কু ঘোষের একমাত্র পুত্র সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের রহস্যমৃত্যু। মঙ্গলবার নিউটাউনের যে আবাসনে তিনি থাকতেন সেখান থেকেই উদ্ধর হয় ২৭ বছরের সৃঞ্জয়ের নিথর দেহ। প্রথমে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় বিধাননগরের সেবা হাসপাতালে। সেখানেই মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কী কারণে মৃত্যু তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। মৃতদের ময়না তদন্তের জন্য আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় দেহ। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত জানা যায়নি মৃত্যুর সঠিক কারণ।
এদিকে ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, সৃঞ্জয় যে ঘরে থাকতেন সেখানেই তাঁর দেহ ছিল। শায়িত অবস্থায় ছিল দেহ। মৃত্যুর আসল কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার একটি পার্টি ছিল। তারপরই উদ্ধার হয় দেহ। আত্মহত্যা না খুন তাও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। পুলিশ ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে।
পেশায় আইটি কর্মী ছিলেন সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত। তাঁর অন্য নাম প্রীতম। সল্টলেকের একটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। গত ১৮ এপ্রিল বিজেপি নেতা সৃঞ্জয়ের মা রিঙ্কুদেবীকে বিয়ে করেন। সেই সময় তিনি শহরে ছিলেন না। সেই সময় ছুটি থাকার কারণে তিনি বেড়াতে গিয়েছিলেন। যদিও দিলীপ ঘোষের সঙ্গে ইডেনে কেকে আরএর ম্যাচও দেখেছিলেন তিনি। কলকাতায় ফিরে মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। দিলীপ ও রিঙ্কুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপহারও দেন। যদিও একাধিক সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মায়ের বিয়ের সিদ্ধান্তে তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। বেশ কয়েক বছর আগে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ৪৭ বছরের রিঙ্কুর। দিলীপের সঙ্গে রিঙ্কুর বিয়ের আগেই সৃঞ্জয় জানিয়েছিলেন তাঁর মা ১৩ বছর ধরে সামাজিক ও পারিবারিক দায়িত্ব পালন করছেন।
উল্লেখ্য, বিয়ে হয়েছে মাত্র ২৫ দিন। তারই মধ্যে ছেলেকে হারালেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার। মঙ্গলবার সকালে রিঙ্কুর একমাত্র ছেলে সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের দেহ উদ্ধার হয়েছিল তাঁরই ফ্ল্যাট থেকে। রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের ছেলে সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত। ছেলের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রিঙ্কু মজুমদার। কিন্তু এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষকে। রাজ্য বিজেপিতে যাঁর পরিচয় আয়রন ম্যান হিসেবেই। শববাহী গাড়িতে মাত্র ২৭ বছরের সৃঞ্জয় দাশগুপ্তর নিথর দেহ দেখে রীতিমত থমথমে মুখ ছিল দিলীপ ঘোষের।
দিলীপ ঘোষ সৃঞ্জয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথাও বলেন। তিনি বলেন তাদের দুজনেরই অনেক স্মৃতি রয়েছে। নানা বিষয়ে কথা হত। গল্পও করেছেন অনেক সময় ধরে । তিনি আরও বলেন, 'সর্বগুণসম্পন্ন ছেলে। আমিতো সন্দেহ করিনি এমন হবে। এর কোনও বর্ণনা হয় না। আমাকে খুব ভালবাসত। আমি তো ওকে খেলা দেখাতেও নিয়ে গিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্য আমার পুত্র-সুখ হল না। পুত্রশোক হল। '
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।