শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত খোদ প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের বিরুদ্ধে উঠছে চাকরির বিক্রির মতো গুরুত্বর অভিযোগ। যা নিয়ে মঙ্গলবার আদালতে সরব হলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী।
210
বিচারপতির ভর্ৎসনা
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘’চাকরি বিক্রিতে প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা জড়িত রয়েছেন, তা দেখেও কী একজন বিচারপতি চুপ করে বসে থাকবেন?''
310
৩২ হাজার চাকরি বাতিল !
মঙ্গলবার হাইকোর্টে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় এমনই প্রশ্ন তুলে সরব হন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। তিনি জানান, সবাই চুপচাপ থেকে গিয়েছে। দুর্নীতি হয়ে গিয়েছে অথচ হস্তক্ষেপ করতে বারণ করেছে।
জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ২০১৭ সালে যাঁরা নিয়োগ পেয়েছিলেন তাঁদের একাংশের চাকরি চলে গিয়েছে। ২০২২ সালে যখন অনুর্ত্তীর্ণ প্রার্থীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে চাকরি বাতিলের দাবি তোলেন। মঙ্গলবারের শুনানিতে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাতে ৭০৫ জন চাকরি প্রার্থীর হয়ে সওয়াল করেন সিনিয়র আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র।
510
বোর্ডের দায় কেন প্রার্থীদের ঘাড়ে?
এদিন আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র আদালতে সওয়াল করে বলেন, ‘’এই ৭০৫ জন চাকরি প্রার্থী ২০১৬ সালে নিয়োগ পরীক্ষায় বসেছিলেন এবং উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ২০১৭ সালে এদের নিয়োগ হয়। এরপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ পাঁচ বছর। বোর্ড যদি পদ তৈরি করে নিয়োগ দেয় তার দায় কী এদের ঘাড়ে চাপানো যায়?''
610
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর প্রশ্ন
এরপরই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী প্রশ্ন করে জানতে চান যে, কতজন অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী নিয়োগ পেয়েছেন? উত্তরে আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র জানান, প্রায় ৩৫ হাজার অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা চাকরিও পেয়েছেন। আজ তাঁদের চাকরি প্রশ্নের মুখে।
710
প্রমাণ নেই দুর্নীতির !
আইনজীবীর আরও যুক্তি যে, বোর্ডের দেওয়া রিপোর্টে কোথাও বলা হয়নি যে, এই নিয়োগ বাতিল যোগ্য। দুর্নীতি হয়েছে। এবং তদন্তেও কোথাও প্রমাণ মেলেনি যে দুর্নীতি হয়েছে। যার ভিত্তিতে এঁদের বাদ দেওয়া যায়।
810
নম্বর বিভাজনে বিভ্রান্তি
এছাড়াও প্রার্থীদের নম্বর বিভাজনেও দুর্নীতি হয়েছে। অনেকেই প্রভাবিত হয়েছেন কিন্তু তাঁদের পার্টি করা হয়নি। বিভিন্ন জেলার মধ্যে অ্যাপটিটিউড টেস্ট এবং ইন্টারভিউয়ের মধ্যেও বিভাজন রয়েছে। ফলে নম্বরের ভিত্তিতে কারও নিয়োগ বাতিল করে দেওয়া ঠিক নয়।
910
আদালতে প্রশ্নের মুখে বোর্ড
এরপরই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘’অর্থাৎ আমরা সাইলেন্ট স্পেকটেটর ছিলাম। বোর্ড কী কোথাও জানিয়েছে তাদের ভুল ছিল। তখন কিছু বলেনি। আর এখন বলছে বুল হয়েছে।''
1010
ফের পুরো বিষয় খতয়ে দেখার দবি
এই বিষয়ে আদালতের সাফ জবাব, আপনারাই তো বলছেন দুর্নীতি হয়েছে, টাকা দিয়ে চাকরি হয়েছে। তাহলে আদালত কেন বলবে না পুরো চাকরি বাতিল হোক! এরপরই আইনজীবী চান, একটি স্বাধীন সংস্থা দিয়ে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হোক। যদিও বিচারপতির সন্দেহ ওই সংস্থাও যদি প্রভাবিত হয় তাহলে কী হবে? মামলার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার।