মৃত ছাত্র আহিদুর রহমান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমটেকের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সাগরদিধির বাসিন্দা। তবে বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলেই থাকতেন।
কলকাতায় আবারও ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু। এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পডুয়ার। সোমবার বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ছাত্রের। মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গুর উল্লেখ রয়েছে বলেও জানিয়েছে পরিবারের সদস্যরা। গত ৩১ অগাস্ট থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিল ২৩ বছরের আহিদুর রহমান। এদিন বেলা তিনটে নাগাদ মৃত্যু হয়।
মৃত ছাত্র আহিদুর রহমান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমটেকের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সাগরদিধির বাসিন্দা। তবে বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলেই থাকতেন। গত মাস থেকেই জ্বরে ভুগছিলেন ছাত্র। প্রথমে যাদবপুরের কেপিসি হাসাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তঁকে নিয়ে যাওযা হয় ৩ সেপ্টেম্বর মধ্যকলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হয় ছাত্রের। তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কোনও কথা বলেনি। তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে মাশার উপদ্রোব নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাহু বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে মাশার উপদ্রব নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছিলেন। কিন্তু প্রশাসন সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
অহিদুর রহমানের মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গুর উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি লেখা হয়েছে, সেপসিস উইথ সেপটিক শক, যকৃৎ বিকল হওয়ার কথাও। হাসপাতাল সূত্রের খবর অহিদুর রহমানকে যখন ভর্তি করা হয়েছিল তখনই তাঁর অবস্থা খুব সংকটজনক ছিল।
তবে কলকাতা শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। শনিবার দক্ষিণ দমদমের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। কিশোরীর নাম মধু সিং। বেলেঘাটা আইডিকে চিকিৎসা চলছিল। মৃতার মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা হয়েছে ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম ও ডেঙ্গু হেমারেজিক ফিভার। কলকাতার সঙ্গে রাজ্যের একাধিক জেলাগুতেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনায়। বনগাঁ ও চন্দননগরেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে ডেঙ্গু। নিত্য দিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক। বিশেষজ্ঞদের মতে অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসকে ডেঙ্গুর জন্য বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই রোগের প্রকোপ থাকে। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের মতে নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে এডিস মশার জন্মগ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের হাওয়া অফিস জানিয়েছে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে প্রচুর বৃষ্টি হতে পারে। যা ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে পারে। তবে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা সাধারণ মানুষকে এখনও সচেতন করে দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, আগামী মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে তাপমাত্রা ও আদ্রতার বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর এই মারাত্মক বাড়বাড়ন্তের জন্য দায়ী।