দেহব্যবসা সংক্রান্ত আর্থিক ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বাকবিতণ্ডা চরমে ওঠার জেরেই রাগের বশে ওই তরুণীকে খুন করে দেওয়া হয়েছিল বলে অনুমান।
দোলের দিন কাকভোরে কলকাতার রাস্তায় পড়ে গিয়েছিল শোরগোল। হরিদেবপুর থেকে উদ্ধার গিয়েছিল এক অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর মৃতদেহ। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, নিহত তরুণী নরেন্দ্রপুরের বাসিন্দা, তাঁর নাম ডালিয়া চক্রবর্তী। পুলিশ প্রথমে অনুমান করেছিল যে, গলায় ফাঁস দিয়েই খুন করা হয়েছে ওই তরুণীকে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার সকালে অরুণাভ পাত্র এবং অর্জুন দাস নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ডালিয়া চক্রবর্তী বিবাহিতা ছিলেন। তাঁর স্বামীর নাম রাহুল চক্রবর্তী। তিনি আগেই অরুণাভ-সহ আরও বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তদন্তে জানা গেছে যে, ডালিয়া ‘এসকর্ট সার্ভিস’-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওই ব্যবসায় ক্রমশ জড়িয়ে পড়ার পর তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় অরুণাভর। পুলিশের তরফে একথা অফিশিয়ালি ঘোষণা না করা হলেও সূত্র মারফৎ এই তথ্য জানতে পেরেছে সংবাদ সংস্থা।
প্রথমে একটি ‘সিকিউরিটি এজেন্সি’-তে কাজ করতেন অরুণাভ পাত্র। তিনি হাওড়ার জগাছা এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বয়স মোটামুটি ৩৫ বছর। এরপর তিনি ডালিয়ার এজেন্ট হিসাবে কাজ করতে শুরু করেন। পুলিশের অনুমান, দুজনের মধ্যে টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়েই দ্বন্দ্ব শুরু হয়, তারপর রোষের বশে ডালিয়াকে খুন করে দেন অরুণাভ। সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ নরেন্দ্রপুরে নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ডালিয়া। তার পর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ লাইভ লোকেশনের মাধ্যমে শেষবারের মতো তাঁর অবস্থান জানতে পেরেছিলেন তাঁর স্বামী রাহুল।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেচে, সোমবার হরিদেবপুর এলাকার একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে অরুণাভর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ডালিয়া। সেখানেই দুজনের বাকবিতণ্ডা চরমে ওঠে। রাগের বশে ডালিয়াকে শ্বাসরোধ করে খুন করে দেওয়া হয়। পুলিশের ধারণা, এরপর ডালিয়ার দেহ সরানোর উদ্দেশেই অর্জুনকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন অরুণাভ। দত্তপুকুর এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে হরিদেবপুরে এসেছিলেন অর্জুন। তাঁর বয়স ৫১ বছর। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে ডালিয়ার।
দোলের দিন সকালে হরিদেবপুরের জীবনমোহিনী ঘোষ পার্ক রোডের এক বাসিন্দা প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে দেখতে পান যে, রাস্তার কোণে পড়ে রয়েছেন বাইরের এলাকার কোনও এক তরুণী। কাছে গিয়ে দেখা যায়, মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তাঁকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা কাছে গিয়ে দেখেন, তাঁর শরীরে কোনও সাড় নেই। তড়িঘড়ি তাঁকে বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহটি খতিয়ে দেখে পুলিশ অনুমান করে যে, গলায় ফাঁস দিয়ে তরুণীকে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্ত অরুণাভ এবং অর্জুনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এই ঘটনার কিনারা করতে চাইছে পুলিশ।
আরও পড়ুন-
হরিদেবপুরে প্রকাশ্য রাস্তায় চিৎ হয়ে পড়ে রয়েছেন তরুণী, দোল উৎসবের শুরুতেই কলকাতায় ছন্দপতন
‘এক সপ্তাহে প্রায় ২০ কোটি টাকার গরু পাচার হত’, নয়াদিল্লিতে অনুব্রত মণ্ডলকে প্রশ্ন করে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল ইডি
ইউনেস্কোর হাত ধরে ফের লাভবান হতে চলেছে বাংলা, শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জরুরি চিঠি
মার্ক জ়াকারবার্গের ‘মেটা’ থেকে আবার হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই? চলতি মাসেই আশঙ্কায় কর্মীরা