পড়ুয়াদের বাগে আনতে বেছানো হত ষড়যন্ত্রের জাল, করা হত যৌন হেনস্থা, সন্দীপ ঘোষের আরও কুর্কীতি ফাঁস
এক মহিলা চিকিৎসকের খুনের তদন্তে আর্থিক দুর্নীতি থেকে শুরু করে শব ব্যবসার মতো ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগও উঠেছে।
Sayanita Chakraborty | Published : Sep 18, 2024 7:04 AM IST / Updated: Sep 18 2024, 01:02 PM IST
মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা একের পর এক চাঞ্চল্য তথ্য খুঁজে পান। আর্থিক দুর্নীতি থেকে শবদেব নিয়ে দুর্নীতির তথ্য সামনে আছে।
জানা যায়, সন্দীপ ঘোষ আর্থিক তছরূপ করেছেন আরজি করে অধ্যক্ষ থাকাকালীন। হাসপাতালের খাট থেকে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি না কেনা হলেও তার বিল দেখিয়ে টাকা নিতেন। তেমনই চাড়া দামে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির থেকে সকল সরঞ্জাম কিনতেন সন্দীপ। আর সেই টাকা যেত তার পকেটে।
হাসপাতালের বেড খারাপ হয়ে গেলে তা সারিয়ে ব্যবহার করা হত। কিন্তু, বিলে দেখানো হত নতুন খাট কেনা হয়েছে। তেমনই ওষুধ নিয়ে হত দুর্নীতি। মেয়াদউত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করা হত। আর জাল বিল বানিয়ে টাকা নিত সরকারের থেকে।
এরই সঙ্গে মর্গে শবদেহ নিয়ে তৈরি হত পর্নগ্রাফি। আন্দাজ তা বিদেশে চড়া দামে বিক্রি হত। তেমনই দেহ থেকে একাধিক অঙ্গ বের করে তা বিক্রি করেও টাকা নিতেন।
এরই সঙ্গে প্রকাশ্যে এল সন্দীপ ঘোষের আরও এক দুর্নীতির কথা। পড়ুয়াদের বাগে আনতে যৌন হেনস্থার দাবি উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ফাঁস হল মারাত্মক অভিযোগ। অভিযোগ করেছেন ইন্টার্ন বা পিজিটিরা।
কর্মস্থলে মহিলাদের যৌন হেনস্থা বন্ধ করতে ২০২১ আর জি করে কমিটি গঠন করা হয়। নিয়ম অনুসারে, এই কমিটির প্রধান নিয়োগ করা হয় মহিলা অধ্যাপককে। কিন্তু সন্দীপ ঘোষের সময় ২০২২ সালে যে কমিটি গঠন বয় তার প্রধান প্যাথোলজির অধ্যাপক ডা. অঞ্জলি বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু, ১৪ জন সদস্য কমিটির প্রথমে ছিলেন ডা. সন্দীপ ঘোষ। ছিলেন বিতর্কিত উপাধ্যক্ষ ডা. সঞ্জয় বশিষ্ঠ। কমিটির ৭ নম্বরে ছিলেন সন্দীপ ঘোষের স্ত্রী ডা. সঙ্গীতা দাস ঘোষ।
এমন কমিটির সামনে কোনও অভিযোগ এলে তা নিয়ে দিনের পর দিন জিজ্ঞাসাবাদ চলত। অভিযোগ, কার্যত বিধস্ত হয়ে কিছু গ্র্যজুয়েট পড়ুয়া নতিশিকার করত। বাকিরা ফেল করেছে কেউ কেউ।
জানা গিয়েছে, যে সব ছাত্রদেরল বিরুদ্ধে কর্মস্থলে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করা হত তাদের নামের তালিকা থাকত। এই অভিযোগ আনত অধ্যাপকদের ভরসার ছাত্রীরা।
জানা গিয়েছে, ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটির সামনে সাজানো অভিযোগে নিয়ে জেরা করতেন আশিস পাণ্ডে, সৌরভ মাঝি, প্রণয় মাইতির মতো হাউস স্টাফ, ইন্টার্ন বা তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা।
এদিকে উঠে এসেছে ডা. তনুশ্রী থাপার নাম। তিনি নাকি বেয়াড়া পড়ুয়াদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্রিয় হতেন। কলেজ বা হাসপাতালের যেখানে ক্যামার নেই, সেখানে তাদের শাস্তি দেওয়া হত। এমনকী, এই সকল ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যত ঝুলে থাকত সন্দীপ ঘোষের মর্জির ওপর।
এমনই একের পর এক তথ্য এসেছে সামনে। কমিটির কাছে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করতে তাঁকেই পরে বিপদে পড়তে হত বলে অনুমান করছে সকলে।