পশ্চিমবঙ্গে শেষ দফা লোকসভা নির্বাচনের আগে রীতিমতো সরগরম রাজ্য রাজনীতি। মেটিয়াবুরুজের সভা থেকে বিরোধীদের একযোগে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গে শেষ দফা লোকসভা নির্বাচনের আগে রীতিমতো সরগরম রাজ্য রাজনীতি। মেটিয়াবুরুজের সভা থেকে বিরোধীদের একযোগে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী ১ জুন শনিবার, রাজ্যে সপ্তম তথা শেষ দফার লোকসভা নির্বাচন। মোট ৯টি লোকসভা কেন্দ্রে হবে ভোটগ্রহণ। যার মধ্যে রয়েছে বারাসাত, বসিরহাট, ডায়মন্ডহারবার, দমদম, জয়নগর, মথুরাপুর, দক্ষিণ কলকাতা, উত্তর কলকাতা এবং যাদবপুর। আর এই শেষ দফা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেষমুহূর্তের প্রচারে যেন ঝড় তুলতে চাইছে ঘাসফুল শিবির।
বুধবার, মেটিয়াবুরুজের নির্বাচনী জনসভা যেন তারই প্রমাণ দিল আবারও। এই সভা থেকেই বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মোদীজি কাল যেখানে গেছিলেন, আমিও আজ সেই রাস্তায় মিছিল করে এখানে এসেছি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তির সামনে থেকে মিছিল করে স্বামীজির বাড়ি পর্যন্ত গেছি। নেতাজির জন্মদিনে জাতীয় ছুটি দেয়না কেন্দ্র। উনি কাল ওখানে গেছিলেন রাজনীতি করতে, আর আমি গেছিলাম প্রতিবাদ করতে। নেতাজিকে স্যালুট জানাতে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও যোগ করেছেন, “এইরকম মিথ্যেবাদী প্রধানমন্ত্রী আমি জীবনে দেখিনি। আজকে সকালেও কাকদ্বীপে গিয়ে বলে এসেছেন, উনি নাকি টাকা দিয়েছেন নদীর ধার বাঁধানোর। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম এক পয়সাও দেয়নি।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছেনা। তিনি বলেন, “রাস্তা করতে টাকা দাওনি, বাড়ি করতে টাকা দাওনি। মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলো আমরা তৈরি করেছি। আগে মাত্র ১২টা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, এখন সেই সংখ্যা ৪০ থেক ৪৫-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার বলে বাংলায় কিছু কাজ হয়নি। লজ্জা করেনা? লজ্জা বলে কিছু আছে?”
তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, “বিজেপি দেশ বিক্রি করে দিয়েছে। ভোটের সময় শুধু বড় বড় কথা। একবার করে আসে আর বসন্তের কোকিলের মতো উড়ে চলে যায়।” সেইসঙ্গে, তিনি সিপিএমকেও তীব্র আক্রমণ করেন। তাঁর মতে “বামফ্রন্টের সবাই খারাপ ছিল না। কিন্তু সিপিএম-টা সবথেকে বেশি অত্যাচারী ছিল। আমরা বামফ্রন্টকে উপড়ে ফেলতে পারলে, মোদীকেও পারব।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “আমি একটা তথ্য দিচ্ছি আপনাদের। দমদমে সিপিএম ঠিক করেছে, তাদেরও এবারের এমপি ভোটটা বিজেপিকে দেবে। আপনার এলাকাতে টাকা পাঠাচ্ছে নাকি? এটা আসলে বিজেপির একটা ছলনা। আর ওদিকে সবথেকে বড় কুলাঙ্গার পার্টির নাম সিপিএম। ওদের ছাড়ব না, ৩৪ বছর ধরে লড়াই করেছি। তাই মনে রাখবেন হাম লড়েঙ্গে, লেকিন হাম ডরেঙ্গে নেহি। বিজেপি হাটাও।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি সবাইকে অনুরোধ করব অভিষেকের পাশে থাকুন। ওর যখন আড়াই বছর বয়স, তখন থেকে ও পার্টি করে। সিপিএম-এর হার্মাদগুলো বিজেপির ওস্তাদ হয়ে গেছে। তাই ওদের কোনও ক্ষমা নেই। আমরাই দেশ গড়ব। সবাই ভালো থাকুন। আবার দেখা হবে মোদীকে বিদায় করে।”
সবমিলিয়ে নির্বাচনের আগে, রাজ্য রাজনীতি রীতিমতো সরগরম। তার মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।