অশান্ত ভাঙড়ে গিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের রোষে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁকে আক্রমণ করতে গিয়ে মাত্রা ছাড়িয়েছেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র।
শুক্রবারের পর শনিবার, পরপর ২ দিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। শুক্রবার ভাঙড়ে যাওয়া নিয়ে রাজ্যপালকে আক্রমণ করেন মদন। তিনি রাজ্যপালের গায়ের রং নিয়েও কটাক্ষ করেন। শনিবার একধাপ এগিয়ে রাজ্যপালকে শকুনের সঙ্গে তুলনা করলেন কামারহাটির বিধায়ক। তিনি বলেন, 'রাজ্যপালকে একটাই কথা বলব, আপনি রাজভবনে বসুন। আপনি ভালো কাজ করুন। আপনাকে তো আমরা অ-আ-ক-খ শেখাতে গিয়েছিলাম। অ-এ অজগর আসছে তেড়ে, আমটি আমি খাব পেড়ে। বাংলার আম কেমন খেতে আপনি জানেনই না। তা না করে, শকুন থাকে আকাশে আর নজর থাকে ভাগাড়ে জানতাম। এখন দেখছি, শকুন থাকে আকাশে, নজর থাকে ভাঙড়ে। এ তো মহা মুশকিল! আপনার নজর ভাঙড়ে কেন? একটু মণিপুরের রাস্তায় যান। একটু উত্তরপ্রদেশের জেলাগুলিতে যান।'
রাজ্যপালকে আক্রমণ করেন মদন আরও বলেছেন, 'আপনি কি নিজেকে হেমেন মণ্ডল তৈরি করবেন ভাবছেন? বাংলার নয়া হেমেন মণ্ডল! তবে একটা কথা আমি রাজ্যপালকে বলব। আপনি এ লাইনে না এসে কানে একটা বিড়ি গুঁজে চশমাটা উল্টে পড়লে সাউথের হিরো রজনীকান্তের বাজার খারাপ হয়ে যাবে। কারণ, রাজ্যপাল এত ভালো অভিনয় করছেন। অ-আ-ক-খ শিখে শুরু করে সোজা ভাঙড়ে বোমা-গুলিতে ঢুকে গিয়েছেন। যত পারেন মারুন, গুলি করুন। যত পারেন করুন। মনে রাখবেন, শেষ কথা কিন্তু জনগণ বলবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী কতক্ষণ? রেজাল্ট বেরোচ্ছে যতক্ষণ। আমরা আছি ততক্ষণ, জিন্দেগি আর শ্বাস যতক্ষণ।'
শুক্রবার ভাঙড়ের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে যান রাজ্যপাল। তিনি বিজয়গঞ্জ বাজার, মেলার মাঠ, ভাঙড় ১ ও ২ নম্বর ব্লকের পরিস্থিতির ব্যাপারে খোঁজ নেন। ভাঙড় মহাবিদ্যালয়ে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গেও কথা বলেন রাজ্যপাল। তাঁর সঙ্গে প্রশাসনের কোনও আধিকারিক ছিলেন না। এমনকী, পুলিশ সুপারকেও দেখা যায়নি। প্রোটোকল অনুযায়ী, রাজ্যপাল কোথাও গেলে স্থানীয় জেলাশাসক, বিডিও, পুলিশ সুপারের থাকার কথা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কেউ ছিলেন না। রাজ্যপালের নিরাপত্তারক্ষীরা রাস্তায় পড়ে থাকা বোমা সরান। শান্তি প্রতিষ্ঠা ও হিংসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন রাজ্যপাল। এরপরেই তাঁকে আক্রমণ করে শাসক দল। কুণাল ঘোষ, মদন রাজ্যপালকে নিশানা করেন। মদনের মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। কিন্তু তাতে থোড়াই কেয়ার কামারহাটির বিধায়কের। তিনি ফের রাজ্যপালকে আক্রমণ করলেন।
আরও পড়ুন-
'নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য আলাদা কিছু না, তৃণমূল যা চাইছে, রাজীব সিনহা সেটাই করছেন' -বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ
সন্ত্রাস বিধ্বস্ত বিজেপি কর্মীকে সাহায্যের আশ্বাস, হিংসা থামাতে অমিত শাহকে চিঠি সুকান্ত মজুমদারের