দুর্যোগ মাথায় নিয়ে ৬ দিনে জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যভবন 'সাফাই' অভিযান, ধর্নামঞ্চ থেকে শুরু উৎসব

আরজি কর হাসপাতালে গত ৯ আগস্ট উদ্ধার হয়েছিন তরুণী চিকিৎসকের দেহ। সেই দিন থেকেই নির্যতিতার বিচার ও তৎকালীন অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। দেখতে দেখতে একমাসেরও বেশি সময় পার হয়েছে।

জুনিয়র ডাক্তাররা তাদের পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আগেই লালবাজার অভিযান করেছিল। গত মঙ্গলবার থেকে তারা রয়েছে স্বাস্থ্য ভবন সাফাই অভিযানে।

মঙ্গলবার বিকেল থেকে শুরু হয়েছিল স্বাস্থ্য় ভবন সাফাই অভিযান। যা এখনও অব্যাহত। দাবি না মানা পর্যন্ত চলবে সাফাই অভিযান-দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের।

প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা মাথায় নিয়েই রাস্তায় বসে রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সপ্তাহের প্রথম ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হতে হয়েছে। আর সপ্তাহের শেষে প্রবল বৃষ্টি। তবে প্রকৃতির কাছেই তারা হারতে রাজি নয়।

এক সপ্তাহে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিন-তিন বার আলোচনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু একবারও সফল হয়নি।

জুনিয়র ডাক্তার বনাম প্রশাসন- ইমেলের পাল্টা ইমেল টানটান স্নায়ুর লড়াই চলছে। বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং বা ভিডিওগ্রাফি দুটি দাবিতে অনড় থেকেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু কালীঘাটের বাড়িতে সেই দাবি থেকেও সরে আসেন। তারপরেও প্রশাসন হাত তুলে নেয়।

জুনিয়র ডাক্তাররা নবান্নেই গিয়েছিলেন আলোচনার জন্য। কিন্তু তাদের শর্তে প্রশাসন রাজি না হওয়ায় তারা সভাঘরে না ঢুকে বাইরে থেকেই চলে আসে। কালীঘাটে অনেকটাই নিচে নেমে বৈঠকে রাজি হয়েছিলয়। কিন্তু 'দেরির' কারণ দেখিয়ে হাত তুলে নেয় প্রশাসন।

কালীঘাট থেকে স্বাস্থ্য ভবন বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্রতিবাদে সামিল কয়েক শো জুনিয়র ডাক্তার। বসে রয়েছে রাতদিন।

তবে জুনিয়র ডাক্তাররা একা নয়, তাদের পাশে রয়েছে রাজ্যের সাধারণ মানুষ। ধনী- দরিদ্র নির্বিশেষে এগিয়ে দিয়েছে সাহায্য়ের হাতে। ধরা পড়েছে অন্য বাংলার ছবি।

আরজি করের নির্যতিতার বিচারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন এখান আর শুধুমাত্র 'জাস্টিস ফর আরজি'-এ থেকে নেই। স্লোগানে যোগ হয়েছে হাওয়াই চটি, ১৪তলাও। নতুন নতুন স্লোগাও দিচ্ছেন পড়ুয়ারা।

জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চ 'মিলনমেলা'। পুজোর মাস খানেক আগেই শুরু হয়েগেছে উৎসব। ঢাঁক থেকে শাঁখ- সবকিছুই মজুত রয়েছে। গান, বাজনা- নতুন এক শান্তিপূর্ণ অবস্থান দেখছে গোটা বিশ্ব।

আরজি কর মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জুনিয়র ডাক্তারদের মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে কাজে ফিরতে বলেছিল। কিন্তু সেই মঙ্গলবার থেকেই তারা নতুন করে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়িয়ে স্বাস্থ্য ভবন অভিযান শুরু করেছিল। যা এখনও চলছে।