রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে বিজেপি জানিয়েছে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী নামেই রাজ্য সরকারের প্রকল্প। এটি আসলে চালু হয়েছে দিদিকে বলো নামের তৃণমূল কংগ্রেসের নম্বরে। তাই বকলমে ভোটের আগে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে তৃণমূল এই সরকারি প্রকল্প থেকে।
জুন মাসেই ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ হেল্পলাইন চালু করেছে রাজ্য সরকার। দিদিকে বলো হেল্পলাইন নম্বরেই চালু করা হয়েছে এই নয়া প্রকল্প। রাজ্যের মানুষের অভাব অভিযোগের কথা সরাসরি জানতে চালু করা হয়েছে একটি নম্বর, যেখানে মানুষ নিজেদের সমস্যার কথা সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাতে পারবেন। এবার এই প্রকল্প নিয়ে সরব হল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই সরকারি কর্মসূচি চালিয়ে গেলে তা ভোটারদের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে বিজেপি জানিয়েছে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী নামেই রাজ্য সরকারের প্রকল্প। এটি আসলে চালু হয়েছে দিদিকে বলো নামের তৃণমূল কংগ্রেসের নম্বরে। তাই বকলমে ভোটের আগে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে তৃণমূল এই সরকারি প্রকল্প থেকে। অবিলম্বে এটি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি তোলা হয়েছে বিজেপির তরফে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে বিজেপির তরফে অভিযোগ জানাতে যান দলের নেতা শিশির বাজোরিয়া এবং আইনজীবী লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়।
রবিবারই পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির তরফে জানানো হয়েছিল, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পরেও আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভেঙে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচি চালানো হচ্ছে। সাংবাদিক বৈঠকে দলের নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, “টেলিকম মন্ত্রকের তরফে দেশের প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ জানানোর জন্য একটি শুল্কহীন নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কেন অন্য নম্বর ব্যবহার করা হল?”
উল্লেখ্য, এই প্রকল্প চালু করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে ছিলেন, এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, প্রাক্তন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্য প্রশাসনের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
হেল্পলাইন নম্বরটি হল ৯১৩৭০৯১৩৭০। এই নম্বরে ফোন করলে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে একটি বার্তা শোনা যাবে। ওই বার্তার পর যিনি ফোন করবেন, তাঁকে নিজের সমস্যার কথা জানাতে হবে।
কিন্তু হঠাৎ এই উদ্যোগ কেন! রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা আসন্ন পঞ্চায়েত ও আগামী বছর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই আবার নতুন মোড়কে এই কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি রাজ্যের মানুষের সমস্যার সমাধান করছেন, এমন ঘটনা ঘটলে রাজ্যের শাসকদলের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচির ঘোষণা হয় নবান্ন থেকে। এই কর্মসূচির মূলত দায়িত্বে রাখা হয়, আধিকারিক পি বি সেলিমকে। ২০১৯ সালে যখন যখন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল, তখন তা পরিচালনার দায়িত্ব ছিল ভোটকুশলী প্রশান্তের সংস্থা আইপ্যাক। কিন্তু এ বার রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের হাত দিয়ে এই কর্মসূচি রূপায়ণে পদক্ষেপ করেন মমতা। তবে তা নিয়ে ভোটের আগে বিতর্ক দানা বাঁধল।