
Kolkata Police News: ভোটের আগেই রাজ্যজুড়ে পুলিশ প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করল নবান্ন। এসডিপিও ও এসিপি-স্তরে বহু আধিকারিকের নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মোট ৫৭ জন পুলিশ কর্তাকে বদলি করা হল । এই বদলির তালিকায় ব্যারাকপুর, বিধাননগর, আসানসোল-দুর্গাপুর, চন্দননগর, হাওড়া-সহ বিভিন্ন পুলিশ কমিশনারেট এবং সুন্দরবন, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং সহ একাধিক পুলিশ জেলায় পুলিশ কর্তাদের বদল করা হয়েছে ।
নবান্ন সূত্রে খবর, তনয় চ্যাটার্জিকে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি থেকে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার বিষ্ণুপুরের এসডিপিও করা হয়েছে। প্রসেনজিৎ দাসকে বারাসত পুলিশ জেলার হাবড়ার এসডিপিও পদ থেকে সুন্দরবনের মন্দিরবাজারের এসডিপিও পদে পাঠানো হয়েছে। দীপ কুমার দাস বিধাননগর কমিশনারেটে এসিপি পদ থেকে বনগাঁ পুলিশ জেলার এসডিপিও হয়েছেন। ইপ্সিতা দত্ত আসানসোল-দুর্গাপুর থেকে বদলি হয়ে বিধাননগরে এসিপি পদে যাচ্ছেন। ব্যারাকপুর কমিশনারেটে পার্থ রঞ্জন মণ্ডলকে হাওড়া কমিশনারেটে এসিপি করা হয়েছে । সাকিব আহমেদকে ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও পদ থেকে ব্যারাকপুরে এসিপি করা হয়েছে ।
অন্যদিকে, গত শনিবার অর্থাৎ ২২ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে আয়োজিত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও ওয়েলফেয়ার কমিটির উদ্যোগে মহিলা পুলিশ কর্মীদের দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রকাশ্য মঞ্চে শাসক শিবির প্রসঙ্গে কথা বলে বিতর্কে জড়ান পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এক জন সাব ইন্সপেক্টর, একজন ইন্সপেক্টর, আরেক জন এসইপি পদমর্যাদার পুলিশ। "২০২৬ সালে পুনরায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার পরে আমাদের লড়াই থামবে এমনি বার্তা উঠে আসে পুলিশের রাজ্য সম্মেলনের অনুষ্ঠান থেকে "।
অভিযোগ, ভাইরাল এই অডিয়ো নির্বাচন কমিশনের দফতরের পাঠিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁদের নামে ইতিমধ্যেই তিনি CEC জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি করেছেন। কলকাতা পুলিশের ৩২৪ জন, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ৫৯১ জন, মোট ৯১৫ জনের কথা উল্লেখ করেছিলেন শুভেন্দু। এবার ভোটের আগে রাজ্য পুলিশের এসপি পদমর্যাদার একাধিক পুলিশ পদে রদবদল করল নবান্ন।
সূত্রের খবর, বদলি পুলিশ অফিসারদের তালিকায় রয়েছেন WBPS মিতুন দে। তাঁকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বদলি করা হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেও একাধিক আইসিকে বদল করে নতুন আইসিদের নিয়ে আসা হয়েছে। যার পেছনেও রয়েছে বিশেষ অঙ্ক, দাবি পুলিশ মহলের একাংশের।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির আয়োজিত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও ওয়েলফেয়ার কমিটির উদ্যোগে মহিলা পুলিশ কর্মীদের দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠানে। জা নিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি।
সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা ওয়েলফেয়ার কমিটির উদ্যোগে মহিলা পুলিশ কর্মীদের দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় দীঘা রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের মাঠে। ওই অনুষ্ঠানে একাধিক মন্ত্রিসহ পুলিশের পদাধিকারীরা ও উপস্থিত ছিলেন।
যদিও এই বিষয়ে মঞ্চে উপস্থিত ও এলাকার বিধায়ক অখিল গিরি বলেন, ‘’এই পুলিশকর্মীরা ভালোভাবে কাজ করছেন। তারা ১২ মাস কাজ করে চৌদ্দ মাসের বেতন পান তাই তারা মুখ্যমন্ত্রীকে ভালোবেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার তারা চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চাইছেন। তাই জন্য এই ধরনের বক্তব্য দ্বারা রেখেছেন।''
যেখানে বারবার বলা হয় পুলিশ সর্বদা নিরপেক্ষ এবং নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করা উচিত। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পুলিশের ওই বক্তব্য অনেকটাই ভোটের আগে বিরোধীদের কাছে প্রচারের হাওয়া তুলো দিল বলে এমনটাই মনে করা হচ্ছে।। এ বিষয়ে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মন্ডল বলেন, ‘’রাজ্যের কাছে আরেক বার প্রমাণ হয়ে গেল যে উর্দিধারীরা কীভাবে দলের হয়ে কাজ করে এবং তা সমাজের কাছে আরেক বার স্পষ্ট হল।''
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।