সরস্বতী পুজোর আগের দিন দক্ষিণ কলকাতার প্রাণকেন্দ্র গড়িয়াহাটের ফুটপাতে ব্যবসায়ীদের প্রতিমা বিক্রিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে সরব ব্যবসায়ীরা।
কয়েক দশক ধরে গড়িয়াহাটের ফুটপাতে সরস্বতী প্রতিমা বিক্রি করছেন। কেউ প্রথম প্রজন্মের ব্যবসায়ী আবার কারও পূর্বপুরুষরাও প্রতিমা বিক্রি করতেন। কিন্তু হঠাৎই পায়ের তলা থেকে সরে গিয়েছে জমি। গড়িয়াহাটের ফুটপাতে বসে সরস্বতী প্রতিমা বিক্রি করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। অন্তত এমনটাই অভিযোগ এই ব্যবসায়ীদের। তাঁদের দাবি, এখান থেকে সরে যেতে বলছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। শুধু এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারাই গড়িয়াহাটের ফুটপাতে বসে সরস্বতী প্রতিমা বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। পাশের ওয়ার্ডের বাসিন্দাদেরও প্রতিমা বিক্রিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক নেতাদের লাল চোখ দেখেও ভয় পাচ্ছেন না। তাঁদের দাবি, ব্রিগেড-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সভায় তাঁরাই ভিড় জমান। এখন তাঁদেরই ব্যবসা করতে বাধা দেওয়া হলে সেটা মেনে নেবেন না। প্রয়োজন হলে মুখ্যমন্ত্রীকেও এ বিষয়ে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সবমিলিয়ে সরস্বতী পুজোর আগের দিন উত্তপ্ত গড়িয়াহাট।
এক ব্যবসায়ী জানালেন, 'আমরা ৩০ বছর ধরে এখানে ঠাকুর বিক্রি করছি। এর আগে দাদারা আমাদের বলেছিল, তোরা করে খা। আমরা ৩০ বছর ধরে ছোট ছোট ঠাকুর বিক্রি করা। কিন্তু গত বছর থেকে আমাদের ঠাকুর নিয়ে বসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এর কারণ কী? আমরা তো খেটে খাওয়া মানুষ। আমরা তো বাড়তি টাকা উপার্জন করতে পারি না। ধর্মতলার মিটিংয়ে আমরাই তো যাই। অন্য কোনও লোক তো যায় না। কোনও বড়লোক বাড়ির ছেলে কি ধর্মতলায় যায়? যার বিএমডব্লু গাড়ি আছে তার ছেলে কি ধর্মতলায় যায়? তাদের পরিষেবা দেবে সরকার আর আমাদের ফুটপাতে ঠাকুর নিয়ে বসতে দেবে না! আমরা দিদির কাছে অভিযোগ জানাব। প্রতিবাদ তো করতেই হবে।'
এক মহিলার সরাসরি অভিযোগ রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে। তাঁর বক্তব্য, 'আমরা গরিব লোক যদি করে খেতে না পারি, তাহলে সরকারকে ভোট কেন দেব? ওরা যখন পার্টি করত না তখন থেকে আমরা এখানে বসে ঠাকুর বিক্রি করি। ওরা এখন পার্টি করে মস্তান হয়েছে। আমাদের এখান থেকে তুলে দেবে বলছে। আমি বলেছি, মাকে যদি তুলে নিয়ে যায়, তাহলে আমাকেও তুলে নিয়ে যেতে হবে।'
স্থানীয় নেতারা অনুমতি নেই বলে ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের তুলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, এমনই অভিযোগ অনেকের। কিন্তু ব্যবসায়ীরাও পাল্টা বলছেন, বাপ-ঠাকুর্দার আমল থেকে যে ব্যবসা করছেন সেটা চালিয়ে যাবেন। হুমকিতে তাঁরা মাথা নোয়াবেন না।
আরও পড়ুন-
সরস্বতী পুজোয় চাহিদা তুঙ্গে ফুলের, কত দামে বিকোচ্ছে কোন ফুল? জানুন