মুখ্য়মন্ত্রীর নির্দেশেই অশান্তি, সরাসরি মমতাকেই দায়ী করছেন লকেট

  • নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে অশান্তি
  • বিক্ষোভের নামে চলছে তাণ্ডব
  • পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়
  • মমতার নির্দেশেই অশান্তি, দাবি বিজেপি সাংসদের

debamoy ghosh | Published : Dec 15, 2019 9:33 AM IST / Updated: Dec 15 2019, 03:09 PM IST

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের নামে রাজ্য জুড়ে বেনজির তাণ্ডব শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা দিলেও পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বিরোধীদের অভিযোগ, গোটা পরিস্থিতি প্রশাসনের হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। এই অরাজক পরিস্থিতির জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই আঙুল তুললেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। এশিয়ানেট নিউজ বাংলা সিনিয়র এডিটর দেবজ্যোতি চক্রবর্তী- কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই অশান্তি চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শরণার্থী হিন্দু, জৈন, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধদের পাশে নেই বলেও কটাক্ষ করেন লকেট। একনজরে দেখে নিন নাগরিকত্ব বিক্ষোভ নিয়ে কী বলছেন হুগলির বিজেপি সাংসদ-

প্রশ্ন: নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তাণ্ডব চলছে। মুর্শিদাবাদ, উত্তর চব্বিশ পরগণার অনেক জায়গায় কার্যত দাঙ্গা পরিস্হিতি তৈরি হয়েছে। এর দায় কার?

লকেট: নাগরিকত্ব বিল এখন আইনে পরিণত হয়েছে। সব রাজ্য তা মানতে বাধ্য। অসমের মতো যে রাজ্যগুলির আপত্তি আছে, তারাও তো বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কিন্তু সেখানে মোমবাতি মিছিল হয়েছে, মানুষ পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কিন্তু এখানে যা হচ্ছে, তাতে সেই তোষণের রাজনীতির কথাই মাথায় আসতে বাধ্য। যে মুখগুলোকে এতদিন এই রাজনীতি করতে দেখা যেত, এখন তাদেরকেই বিক্ষোভ করতে দেখা যাচ্ছে। এই আইনে তো কোথাও নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়নি। উল্টে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈনদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাহলে অপত্তিটা কীসের? এতেই স্পষ্ট এর পিছনে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশ রয়েছে। উনি বলছেন বলে বিক্ষোভ হচ্ছে, আবার উনি বললেই বন্ধ হয়ে যাবে। 

প্রশ্ন: মনে হচ্ছে না এই আইনের বিরোধিতা করে তৃণমূল নতুন আন্দোলনে একটা গতি পেয়ে গেল?

লকেট: আন্দোলনের নামে আজকে কী হচ্ছে সবাই দেখছে। বাংলাকে দেখে লাহোর মনে হচ্ছে। কোথায় বিক্ষোভ বেশি হচ্ছে দেখুন। মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর চব্বিশ পরগণার মতো সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশি ঝামেলার খবর আসছে। তার মানে কি ওখানে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা নিজেদের ভারতবর্ষের নাগরিক বলে ভাবেন না? এতো ঠাকুরঘরে কে, আমি তো কলা খাইনির মতো ব্যাপার হয়ে গেল।

আরও পড়ুন- বহিরাগতদের দিকে আঙুল মুখ্যমন্ত্রীর, উপদ্রুত জেলায় বন্ধ হল ইন্টারনেট

আরও পড়ুন- সিএবি-র প্রতিবাদে অশান্ত রাজ্য, রবিবারও উত্তাল বিভিন্ন জেলা

প্রশ্ন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাল থেকে নিজে রাস্তায় নামছেন। জ্যোতি বসু  দাঙ্গাকারীদের দেখলেই গুলি করতে বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর থেকে সেরকম কড়া বার্তা তো শোনা গেল না?

লকেট: সব কিছু তো ওনার অঙ্গুলি হেলনেই হচ্ছে। বাংলাতে আগুন জ্বালিয়ে রেখে দিয়েছেন। গোটা দেশের মানুষ দেখছে। এই ভাবে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার অধিকার বিক্ষোভকারীদের কে দিয়েছে? উনি মিছিল করবেন তো। কীসের বিরুদ্ধে করবেন? আমরা তো বলছি নাগরিকত্ব দেব। তার মানে কি অন্যান্য দেশ থেকে অত্যাচারিত হয়ে যে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখরা রয়েছেন, উনি তাঁদের পাশে নেই? উনি চান না তাঁরা নাগরিকত্ব পান!

প্রশ্ন: মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় এখনও পুলিশের তরফ থেকে মাইকিং বলা হচ্ছে আন্দোলন করুন, কিন্তু হিংসা ছড়াবেন না। ওই এলাকায় বহু মানুষ এখন আতঙ্কে গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন। তাঁদের প্রশ্ন, এতকিছুর পরেও পুলিশ আন্দোলন করতে বললে কি আদৌ পরিস্থিতি শান্ত হবে?

লকেট: এর থেকেই স্পষ্ট হয় পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ মানুষের পাশে মুখ্যমন্ত্রী নেই। উনি শুধু পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘুদের পাশে আছেন। উনি এখানে সংখ্যালঘু, সংখ্যালঘু করে চেঁচাচ্ছেন, অথচ অন্য দেশের অত্যাচারিত সংখ্যালঘুদের কথা বললে বোবা হয়ে যাচ্ছেন। আজকে এই বিক্ষোভ, তাণ্ডবের ফলে কত মানুষ আহত হচ্ছেন। আমি তো দেখলাম স্টেশনেও অনেকের শুশ্রূষা করা হচ্ছে, তাঁদের পাশে কিন্তু কেউ নেই। এখানকার পুলিশও নেই।

প্রশ্ন: এই আন্দোলনের পাল্টা কোনও কর্মসূচি কি রাজ্য বিজেপি থেকে নেওয়া হবে? আপনারাও কি পথে নামবেন?

লকেট: ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, খ্রিষ্টানদের পাশে নেই সেটা এখন স্পষ্ট। আমরা এঁদের পাশে আছি। এঁদের আমরা নিরাপত্তা দেব। তার জন্য যা যা করণীয় আমরা করব। গোটা বাংলা জুড়ে তাণ্ডব, ডাকাতি চলছে। সম্পত্তি লুঠ হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না।মানুষের পাশে থেকে যে প্রতিবাদ করার আমরা করব।
 

Share this article
click me!