এই পোস্টারে বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাঁতের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাই এর পিছনে বড় কোনও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
বেড়াদার পর এবার ধাল্যাত বামু। ১৭ অগাস্টের পর আজ ফের মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার পড়ল পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার ধাল্যাত বামু গ্রাম পঞ্চায়েতের বদলডি মোড়ে। বরাবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থান থেকে পোস্টারগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এদিকে কয়েকদিনের মধ্যে ফের পুরুলিয়ায় মাওবাদী পোস্টার পড়াকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
এই পোস্টারে বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাঁতের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাই এর পিছনে বড় কোনও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। পোস্টারে লাল কালীতে লেখা, "যে বিজেপি মেম্বার টিএমসি পার্টিকে সমর্থন করবেন, সেই মেম্বারের স্বামীদের হাত দুটো কাটা যাবে। কারণ, বিজেপি পার্টির সম্মান যদি ঘুচাও, তাহলে তোমাদের খেলা শেষ। ধেলাত বামু অঞ্চল মনে রেখো, মাও জিন্দাবাদ।"
যদিও পুলিশের দাবি, এলাকায় মাওবাদীদের কোনও সংগঠন নেই। তাই এলাকার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রাম পঞ্চায়েতের অনাস্থার কারণে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করার জন্যই ওই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। বরাবাজার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি বিশ্বজিৎ মাহাত বলেন, "এলাকায় মাওবাদীদের কোনও সংগঠন নেই। বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতে বিজেপির ২ সদস্যার সমর্থনে তৃণমূল সদস্যরা অনাস্থা ডেকেছেন। তাই বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার জন্য বিজেপি এই কাজ করেছে।"
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে ধেলাত বামু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান একজন নির্দল সদস্য বিন্দুমতী মাহাত। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখানকার ১০টি আসনের মধ্যে ৪টি তৃণমূল, ৪টি বিজেপি এবং ২টি নির্দল দখল করেছিল। এরপর নির্দলের সমর্থনে সেখানে বোর্ড গড়েছিল বিজেপি। প্রধান হন নির্দলের বিন্দুমতী মাহাত। আর উপপ্রধান হন বিজেপি সদস্য ধনেশ্বরী মাজি। তবে বোর্ড গঠনের ২ বছরের মধ্যে প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনা হয়। তখন হাইকোর্ট সেই অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিল। এরপর বৃহস্পতিবার বরাবাজারের বিডিওর কাছে তৃণমূলের ৪ সদস্য ও বিজেপির ২ সদস্য, মোট ৬ জন প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। সেই তালিকায় উপপ্রধানও রয়েছেন। আর বিডিও-র কাছে অনাস্থা জমা পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মাওবাদীদের নামে হুমকি পোস্টার পড়ল এলাকায়। তাতেই দানা বাঁধছে সন্দেহ।
আরও পড়ুন- বিয়ের পর থেকেই লেগে থাকত ঝামেলা, শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ মালদহে
আরও পড়ুন- আফগানিস্তান থেকে বন্ধ আমদানি, হু হু করে বাড়ছে ড্রাই ফ্রুটসের দাম
আরও পড়ুন- ভাসানের ভিড় এড়াতে বন্দুক তুলেছিলাম, তৃণমূল সভাধিপতির আজব যুক্তিতেও কাটছে না বিতর্ক
বরাবাজার এলাকার সিপিএম নেতা প্রত্যূষ আনসারি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ওসব মাও ফাও কিছু নেই। তাই এটা মাওবাদীদের না ফাওবাদীদের সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এলাকায় শান্তির পরিবেশ নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে। অতীতে আমাদের বহু নেতা কর্মী মাওবাদীদের হাতে খুন হলেও এভাবে পোস্টার পড়ত না। এলাকায় শান্তিও বিঘ্নিত হয়নি।" তবে মাওবাদীদের নামে এলাকায় একের পর এক পোস্টার উদ্ধার হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মনে।