করোনা সতর্কতায় খোলা আকাশের নিচে রাত্রিবাস, সচেতনতার নজির পরিযায়ী শ্রমিকের

 

  • লকডাউনের মাঝে ফিরেছেন বাড়িতে
  • খোলা আকাশে নিচে রাত্রিবাস পরিযায়ী শ্রমিকের
  • স্বাস্থ্য পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি যাবেন না তিনি
  • করোনা সচেতনতার নজির রায়গঞ্জে

Asianet News Bangla | Published : May 17, 2020 7:19 PM IST / Updated: May 18 2020, 12:52 AM IST

কৌশিক সেন, রায়গঞ্জ: গ্রিনজোনের তকমা ঘুচে গিয়েছে। ৯ জন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে উত্তর দিনাজপুরে। অসাবধানতায় তো বিপদ আরও বাড়বে! স্বাস্থ্য পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত গ্রামে ঢুকতে রাজি নন এক পরিযায়ী শ্রমিক। বাড়ির লোককেও ফিরিয়ে দিলেন তিনি। রাত কাটালেন খোলা আকাশের নিচে। 

আরও পড়ুন: ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা বাংলার ধুপগুড়িতে, আহত ৩২ পরিযায়ী শ্রমিক

রায়গঞ্জ ব্লকের বরুয়া পঞ্চায়েতে শীশগ্রামে থাকেন রঞ্জিত বর্মন। মাস ছয়েক আগে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যান তিনি। কাজকর্ম ভালোই চলছিল, রোজগারও মন্দ হচ্ছিল না। কিন্তু লকডাউন জারি হওয়ার পর উলটপালট হয়ে গেল সবকিছু! বাড়ি ফেরা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, বারাণসী থেকে স্পেশাল ট্রেনে শুক্রবার রাতে বিহারের কাটিহারে পৌঁছন রঞ্জিত। সেখান থেকে গাড়ি না পেয়ে শেষপর্যন্ত পায়ে হেঁটেই শনিবার ফেরেন নিজের গ্রামে। কিন্তু বাড়িতে ঢোকেননি, গ্রামে লাগোয়া পুকুর পাড়ে খোলা মাঠে চলে যান ওই পরিযায়ী শ্রমিক। 

কেন? রঞ্জিত বর্মনের জবাব, 'গ্রামে ফেরার পর এখনও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়নি। তাই বাড়ি যাব না। খোলা আকাশের নিচে রাতটা কাটিয়ে দেব। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।' এমনকী, পরিবারের লোকেরা যখন বাড়ি যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন, তখন তাঁদেরও ফিরিয়ে দেন ওই পরিযায়ী শ্রমিক। স্ত্রী রাধা বর্মন জানিয়েছেন, 'স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিলাম। ও বলেছে, যতক্ষণ না স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে, ততক্ষণ বাড়ি যাব না।  না আসতে চাইলে, কী করব বলুন!'

আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে মৃত বাংলার শ্রমিকদের সংখ্যা বেড়ে ৬, পরিবারের পাশে রাজ্য় সরকার

আরও পড়ুন: খোলা জায়গা থেকে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে, পশ্চিম মেদিনীপুরে এক সঙ্গে ৩২টি 'করোনা কিয়স্ক'

করোনা সতর্কতায় পরিযায়ী শ্রমিকের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মানস ঘোষ। তিনি বলেন, 'বহু চেষ্টা করেও মানুষকে সচেতন করতে পারছি না। হোম কোরায়েন্টাইনে নোটিশ দেওয়ার পর অনেকেই বাইরে বেরিয়ে পড়ছে না। ওই পরিযায়ী শ্রমিক নিজে উদ্যোগ নিয়ে সচেতনতার দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন।'
 

Share this article
click me!