‘লড়াইয়ের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম এবং লড়াই করেই বেঁচে আছেন।’ আট বছর পর দিদির বাড়িতে ভাইফোঁটা নিতে গিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ মুকুল রায়।
মূল লক্ষ্য ২০২৪, তার আগে ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বঙ্গে ভালো ফল করে সাংগঠনিক ভিত আরও মজবুত করে নিতে চায় ঘাসফুল শিবির। আর, পূর্বের মতো এবারেও মুকুল ঘুরেফিরে তৃণমূলেই। তাই, তাঁর মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে ২০২৩-এর ঘুঁটি সাজিয়ে নিতে চাইছে জোড়াফুল পক্ষ। বছর ঘুরলেই বাংলায় পঞ্চায়েত ভোট। এই নির্বাচনে জোরালো সাফল্য ধরে রাখতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যে মুকুল রায়কেই কাজে লাগানো হতে পারে বলে রাজনৈতিক সূত্রে খবর। তাহলে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ঘাসফুল শিবিরে কি বড় ভূমিকায় ফিরতে চলেছেন মুকুল রায়? দু’দিন আগেই দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ভাইফোঁটা নিতে গিয়েছিলেন তিনি। তার আগে তাঁকে সেপ্টেম্বর মাসে তৃণমূল কংগ্রেস ভবনে গিয়ে বৈঠকও করতে দেখা গেছে। সম্প্রতি অর্জুন সিং, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিকরাও গিয়েছিলেন মুকুল রায়ের বাড়িতে। এইখানেই উঠছে ঘুঁটি সাজানোর তত্ত্ব।
যদিও এবিষয়ে কোনও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করতে চাননি মুকুল রায়। প্রায় আট বছর পর ২০২২-এর ভাইফোঁটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এসেছিলেন মুকুল রায়। বিজয়া দশমীর পরেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যেতে। দু’বারই দুই বিচক্ষণ নেতৃত্বের মধ্যে পৃথক পৃথক বৈঠক হয়েছে বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর। বঙ্গের জেলাগুলির রাজনৈতিক সমীকরণ সম্পর্কে মুকুল রায়ের ওপর বেশ অনেকটাই ভরসা করে তৃণমূল। সেই কারণেই হয়তো পঞ্চায়েত নির্বাচনও তাঁর হাত ধরেই পেরিয়ে যেতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই উদ্দেশ্যে তাঁকে বেশ বড়সড় স্থানেই রাখা হবে বলে সূত্রের খবর।
এই বিষয়টি নিয়ে অবশ্য মুকুল রায় খুব বেশি কথা বলতে চাননি। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘এই সম্পর্কে কোনও আলোচনা হয়নি। এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। এটা কোনও ঘটনা নয়। দুর্গাপুজোর পর কালীপুজো। এটা একটা পরম্পরা। আমরা সকলে একে অপরের বাড়িতে যাই, দেখা সাক্ষাৎ করি। নির্বাচনে যদি নামি, তাহলে তো নিশ্চয়ই সর্বশক্তি দিয়ে নামব। দল যদি আমাকে বলে এই কাজ তোমায় করতে হবে, তাহলে আমি নিশ্চয়ই করব। লড়াইয়ের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম এবং লড়াই করেই বেঁচে আছেন। এই নিয়ে তো কোনও দ্বিমত নেই।’
রাজনীতির অন্দরের খবর অনুযায়ী, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে মুকুল রায়কে নিয়ে আসা হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি দমিয়ে দিতে মুকুলই হবেন শাসক দলের তুরুপের তাস। তাই তাঁকে মহাসচিব পদটি দেওয়া হতে পারে। সেখানে আগে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি এখন জেলে এবং সেই কারণে তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। সেই শূন্যস্থানেই মুকুলকে নিয়ে আসতে চান তৃণমূল সুপ্রিমো। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই তৃণমূল ভবনে গিয়ে মুকুল রায় বলেছেন, ‘আমি এখনও মরে যাইনি, বেঁচে আছি।’ তাই এবার তাঁকে বড়সড় ভূমিকায় দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন-
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একের পর এক প্রকল্পকে 'স্কচ' শিরোপা, 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার', 'ঐক্যশ্রী'-র সাথে বঙ্গের বনদফতরও
অনুব্রত-হীন বীরভূমে শাসক দলের ফাঁড়া, বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাতের অন্ধকারে বেমালুম নিখোঁজ হয়ে গেলেন তৃণমূল নেতা!
অশোক গেহলটের হাত ধরে রাজস্থানে উন্মোচিত হতে চলেছে ৩৬৯ ফুট শিব মূর্তি, দেখে নিন ধ্যানমগ্ন শিবের বিশাল ভাস্কর্য