ভোর রাত থেকে সতর্কতার ছবি একেবারেই উধাও হয়ে গিয়েছে গঙ্গাসাগরে। ভোরের আলো ফোটার আগে রাত থেকেই স্নান শুরু করে দেন বহু পুণ্যার্থী। আর ভোরের দিকে সমুদ্র সৈকতে আরও বাড়তে থাকে ভিড়।
আজ মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti)। সকাল থেকেই গঙ্গাসাগরে (Gangasagar) শুরু হয়ে গিয়েছে পুণ্যস্নান। ভোর হতে না হতেই গঙ্গাসাগরের সৈকতে জনজোয়ার। আলো ফোটার আগেই সেখানে ফুটে উঠেছে বিধিভঙ্গের ছবি। কাতারে কাতারে পুণ্যার্থী (Devotee) ভিড় জমিয়েছেন সমুদ্র সৈকতে। ভোরের আলো ফোটার আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় স্নান। তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ই-স্নানের উপরই বেশি জোর দিয়েছে প্রশাসন। গঙ্গাসাগর মেলায় যাতে করোনাবিধি (Corona Restriction) সঠিকভাবে পালন করা হয় সেই বিষয়ে তৎপর জেলা প্রশাসন। যদিও প্রশসানের নিয়মকে তোয়াক্কা না করেই চলছে পুণ্যস্নান।
ভারতীয় বৈদিক সংস্কৃতি ও সাহিত্যে গঙ্গাসাগর সঙ্গম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মহাতীর্থ। প্রাচীন কাল থেকেই সাধক, মুনিঋষি, সাধুসন্তগণ গঙ্গার তটভূমিতে আশ্রয় নিয়ে প্রাপ্তি লাভ করেছিলেন। অগণিত মঠ, মন্দির, দেবালয়, তীর্থক্ষেত্র গড়ে উঠেছে গঙ্গার তীরে। এই এলাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। কথিত আছে, এই এলাকায় যা কিছু অনুষ্ঠিত হয় তা ভালো ফল দান করে। আর সেই কারণেই মকর সংক্রান্তিতে সাগরের তীরে ভিড় করেন বহু মানুষ। ভোরের আলো ফোটার আগেই কনকনে ঠান্ডার মধ্যে পুণ্যস্নান শুরু করে দেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- 'বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী BJP', গঙ্গাসাগর মেলা পরিদর্শনের পথে তোপ ফিরহাদের
তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে স্নানের উপর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল হাইকোর্টের (Kolkata High Court) তরফে। সংক্রমণ এড়াতে ই-স্নানের উপরই বেশি জোর দিয়েছে প্রশাসন। এমনকী, পুলিশ প্রশাসনের তরফেও মাকিং করে ওই এলাকায় পুণ্যার্থীদের সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু, কোনও কিছুকে তোয়াক্কা না করেই পুণ্যস্নানে মগ্ন পুণ্যার্থীরা। ভোরের আলো ফোটার আগেই সমুদ্রে স্নান করতে শুরু করে দেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী। ভোর থেকেই ভিড় দেখা গিয়েছে সৈকতে। মানা হচ্ছে না করোনা সংক্রান্ত কোনও বিধিনিষেধই। বরং মাস্ক ছাড়াই, গাদাগাদি করে স্নান করতে দেখা গিয়েছে পুণ্যার্থীদের।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে জলস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এরপর সবদিক বিচার করে সংক্রমণ ঠেকাতে একাধিক বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। গঙ্গাসাগরে ই-স্নানের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রশাসনের তরফে চালানো হচ্ছিল নজরদারি। বিনা মাস্কে দেখলেই সতর্ক করা হয় পুণ্যার্থীদের। পাশাপাশি মাইকে করে প্রচারও চালানো হয়েছে। এছাড়া ড্রোনের সাহায্য জল তুলে এনে তা পুণ্যার্থীদের মাথায় ঢালা হবে বলেও জানানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন- আশঙ্কা সত্যি করে গঙ্গাসাগরই কী হচ্ছে সুপার স্প্রেডার, ভিড় বাড়াচ্ছে চিন্তা
কিন্তু, ভোর রাত থেকে সতর্কতার ছবি একেবারেই উধাও হয়ে গিয়েছে গঙ্গাসাগরে। ভোরের আলো ফোটার আগে রাত থেকেই স্নান শুরু করে দেন বহু পুণ্যার্থী। আর ভোরের দিকে সমুদ্র সৈকতে আরও বাড়তে থাকে ভিড়। ক্রমশ সেই ভিড় বেড়েই চলেছে। আর ওই বিপুল পরিমাণ পুণ্যার্থীকে সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা পুলিশ প্রশাসনের। কার্যত সকাল থেকেই করোনাবিধি তোয়াক্কা না করেই চলছে পুণ্যস্নান।