আংটি ও বালা দেখে ঝলসে যাওয়া দেহটি সনাক্ত করেছেন পরিবারের লোকেরা। মালদহে তরুণীকে পুড়িয়ে মারার ঘটনার কিনারাও করে ফেলল পুলিশ। মৃতের প্রেমিককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে ওই তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে তাঁর প্রেমিকই। এরপর প্রমাণ লোপাটের জন্য জ্বালিয়ে দেওয়া হয় দেহটি। তবে ওই তরুণীকে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেই জানা গিয়েছে।
এক সপ্তাহের আগে মালদহের কোতুয়ালি পঞ্চায়েতে টিপাজনি গ্রামে আমবাগান থেকে এক তরুণীর অর্ধনগ্ন ও অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু মৃতার পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। পুলিশের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ যেমন বাড়ছিল, তেমনই চড়ছিল রাজনৈতিক পারদও। সংসদের বিষয়টি তোলেন বিজেপি সাংসদ। শেষপর্যন্ত মৃতার পরিচয় জানতে আধপোড়া হাত ও আংটির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মালদহ জেলা পুলিশ। বুধবার মালদহে এসে আংটি ও বালা দেখে মৃতাকে সনাক্ত করেন পরিবারের লোকেরা।
জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির বাসিন্দা ওই তরুণী বিবাহবিচ্ছিন্না। বছর দশেক আগে শিলিগুড়িরই এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। কিন্তু সেই বিয়ে টেকেনি। কয়েক বছরের মধ্যে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিবাহ বিচ্ছেদের পর এক সন্তানকে নিয়ে শিলিগুড়িতে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ওই তরুণী। শুধু তাই নয়, সন্তানকে একা থাকার সময়েই ছোটন ঘোষ নামে এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ছোটনের বাড়ি মালদহে। কাজের সুবাদে সে শিলিগুড়িতে থাকত। প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে আগেও বেশ কয়েকবার মালদহে এসেছেন ওই তরুণী। জানা গিয়েছে, দেহ উদ্ধার হওয়ার তিন দিন আগে, গত ২ ডিসেম্বর ছোটনের সঙ্গে দেখা করতে ফের মালদহে এসেছিলেন ওই তরুণী। ছোটন নিজে গিয়ে মালদহ টাউন স্টেশন থেকে প্রেমিকাকে নিয়ে আসে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ছোটন বিবাহিত। শিলিগুড়ির ওই তরুণীর সঙ্গে বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্ক ছিল তার। কিন্তু, গত বেশ কয়েকদিন ধরেই ছোটনকে বিয়ের জন্য় চাপ দিচ্ছিলেন তার প্রেমিকা। এদিকে আবার স্বামীর বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্কে কথা জেনে যান ছোটনের স্ত্রীও। পরিবারে অশান্তি শুরু হয়। শেষপর্যন্ত শিলিগুড়ির ওই তরুণীকে খুনের ছক কষে ছোটন। গত ৫ ডিসেম্বর প্রেমিকার হাতে খুন ওই তরুণী। প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহটি জ্বালিয়ে দেয় অভিযুক্ত। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় অপরাধ স্বীকারও করেছে ছোটন। বৃহস্পতিবার তাকে তোলা হবে আদালতে।