ইট দিয়ে তৈরি 'তাসের ঘর', সূর্য ডুবতেই বাড়ি ছেড়ে পালান কিষাণ মাণ্ডিতে

বহুবছর ধরে ভাঙাচোরা কাঁচা বাড়িতে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছেন বাগমুন্ডি বাজারের বাসিন্দা কার্তিক খাঁ ও ঝুমা খাঁ। তাঁদের দুই সন্তান। বাড়ি বলতে ইটের উপর ইট সাজিয়ে দেওয়াল তৈরি করে তার উপর কাঠের মাচা তৈরি করে দেওয়া রয়েছে ত্রিপল।

ঘর তো নয়, যেন তাসের ঘর। ইটের উপর ইট সাজিয়ে তৈরি হয়েছে দেওয়াল। দেওয়ালের উপর ছাউনি নেই রয়েছে ছেঁড়া ফাটা ত্রিপল। সামান্য ঝড় বৃষ্টি হলেও পুরো ঘর দুলতে থাকে। দিনের বেলা কোনরকমে কাটলেও রাতের বেলা বউ, বাচ্চাদের নিয়ে সরকারি কিষাণ মাণ্ডিতে রাত কাটান দম্পতি। পুরুলিয়ার বাগমুন্ডি ব্লকের বাগমুন্ডি বাজারের এমনই ছবি ধরা পড়ল খাঁ দম্পতির বাড়িতে। 

আরও পড়ুন- টাকার বিনিময়ে মিলত টিকা, ভুয়ো টিকাকরণ শিবির সোনারপুরে, গ্রেফতার ১

Latest Videos

 

বহুবছর ধরে ভাঙাচোরা কাঁচা বাড়িতে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছেন বাগমুন্ডি বাজারের বাসিন্দা কার্তিক খাঁ ও ঝুমা খাঁ। তাঁদের দুই সন্তান। বাড়ি বলতে ইটের উপর ইট সাজিয়ে দেওয়াল তৈরি করে তার উপর কাঠের মাচা তৈরি করে দেওয়া রয়েছে ত্রিপল। জরাজীর্ণ ত্রিপলে একটু বৃষ্টি পড়লেই ঘরের মধ্যে থৈ থৈ করে জল। দিনের বেলা বাচ্চাদের নিয়ে কোনরকমে পার হয়ে গেলেও অন্ধকার নামলেই ভয় গ্রাস করে তাঁদের। বর্ষাকালে একটু ঝড় বৃষ্টি হলেই যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে বাড়ি। তাই রাত হলেই একটু দুরে সরকারি কিষাণ মাণ্ডিতে গিয়ে রাত কাটান তাঁরা। 

আরও পড়ুন- ইট দিয়ে চিহ্ন নয়, টিকা নিতে দাঁড়াতেই হবে লাইনে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রাত্রিযাপন স্থানীয়দের

কার্তিক পেশায় দিনমজুর। ঠেলা গাড়িতে মাল বহন করে কোনওরকমে দিন গুজরান করেন। বাড়ি তৈরি তো দূরের কথা মেরামত করারও ক্ষমতা নেই। আবাস যোজনার বাড়ির আবেদন করেও বঞ্চিত দীর্ঘদিন। ভোট আসে ভোট যায় তবুও মেলেনি তাঁদের একটি সরকারি বাড়ি। প্রত্যেক দিন কোথাও না কোথাও আবেদন জানিয়ে চলেছেন। আবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে বলেও কোনও সুরাহা হয়নি। 

 

কার্তিক খাঁ বলেন, "ঠেলা গাড়ি চালিয়ে কোনরকমে পরিবার চালাতে হয়। বাড়ি তৈরির ক্ষমতা নেই। বহুবার গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আবেদন করেছি। এখনও ঘর পাইনি। পাওয়ার মধ্যে চারটি রেশন কার্ড। রেশনের চাল গম পাই বলে কোনরকমে বেঁচে আছি।" তাঁর স্ত্রী বলেন, "আমাদের ৮ বছর ধরে এই অবস্থা। ভগবানের উপর ভরসা করে কোনরকমে বেঁচে আছি। দিন পার করার পর রাত হলেই কিষাণ মাণ্ডিতে গিয়ে থাকতে হয়। গ্রাম পঞ্চায়েত ব্লকে আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। আর এই বর্ষাতে বাড়ির পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে যায়। কখন যে হঠাৎ কাঁচা বাড়িটি ভেঙে পড়ে যাবে তা কেউ বলতে পারবে না। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি তথা ব্লক অফিসে সরকারি বাড়ির জন্য খোঁজ নিতে গেলে বলা হয়, এখনও আসেনি কাগজপত্র। এলেই জানানো হবে। আবার কয়েকবার সরকারি লোকজন ভাঙা বাড়ির ছবিও তুলে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কিছুই সমাধান করেননি। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের বললে তাঁরা বলেন, এবারে যদি আসে তাহলে অবশ্যই সরকারি প্রকল্পের বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে। এখনও আমরা সরকারি সাহায্যের আশায় বসে আছি।"

আরও পড়ুন- ঘর ভেঙেছে অন্ধ বাপির, মুখ খুলতেও বাধা, গুরুতর অভিযোগ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আসানসোলে

এবিষয়ে বাঘমুন্ডির বিডিও দেবরাজ ঘোষ বলেন, "তাঁরা যদি আবেদন করে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই সেই প্রাপ্য বাড়ি পাবেন। প্রশাসনের দিক দিয়ে বিষয়টা নজর দিয়ে দেখা হচ্ছে। যাতে তাঁদের কাঁচা বাড়ি যাতে পড়ে না যায় তার শীঘ্রই ব্যবস্থা করা হবে।" বাগমুন্ডি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বীরবল মাছুয়াড় বলেন, "যে সময় আবাস যোজনার বাড়ি সার্ভে চলছিল সেই সময় কার্তিক খাঁ বাড়িতে ছিলেন না। তিনি শ্বশুর বাড়িতে ছিলেন, তাই বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় আবাস যোজনার বাড়ি থেকে ওই দম্পতি বাদ পড়ে গিয়েছেন। চেষ্টা চলছে কীভাবে বাড়ি দেওয়া যায়।" কিন্তু, কতদিন পরে আবাস যোজনার বাড়ি পাবেন খাঁ দম্পতি, এই উত্তর জানা নেই কারও।

Share this article
click me!

Latest Videos

Narendra Modi Live: আদিবাসী গর্ব দিবস পালনে মোদী, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
Suvendu Adhikari Live: পূর্ব মেদিনীপুরের বাজকুলে জনসভা শুভেন্দুর, দেখুন সরাসরি
'দুর্নীতি করবে বলেই এরা এই প্রকল্প চালু করেছে' ট্যাব দুর্নীতিতে সরব অধীর রঞ্জন চৌধুরী
ক্যামেরা ছিনিয়ে সাংবাদিকের উপর তাণ্ডব! তীব্র বিক্ষোভ মুর্শিদাবাদের রানিতলায় | Murshidabad News Today
‘জনগণের কষ্টের টাকায় মুখ্যমন্ত্রী উৎসব করবেন!’ মমতাকে ধুয়ে দিলেন সুকান্ত, দেখুন কী বললেন | Sukanta M