গত এক বছরে বাংলা দেখেছে 'দিদিকে বলো', 'বাংলার গর্ব মমতা'-র মতো প্রচার
সেই তালিকায় নতুন সংযোজন 'বাংলা বাঁচাও'
তৈরি হল ক্লিক সংগ্রহের নতুন ওয়েবসাইট
তা আগামী নির্বাচনে কতটা সুবিধা করে দিতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে
গত কয়েক বছর ধরেই বাংলায় বিজেপির উত্থান অব্যাহত। গত লোকসভা নির্বাচনের ফল অবশ্যই শাসক দল তৃণমূলের কাছে অবশ্যই সতর্ক বার্তার মতো ছিল। তারপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগাযোগ করেছিলেন পেশাদার রাজনৈতিক পরামর্শদাতা পিকে, অর্থাৎ প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে। তারপর থেকে বাংলা দেখেছে 'দিদিকে বলো', 'বাংলার গর্ব মমতা'-র মতো নানাবিধ প্রচার। কিন্তু কোনওটাই সেভাবে দাগ কাটেনি মানুষের মনে। এবার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন বাংলা বাঁচাও।
আরও পড়ুন - 'আপনাকে কেউ আক্রমণ করবে না', রাজ্যপালের উদ্বেগ দূর করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আরও পড়ুন - কেন মনমোহনকেই প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন সনিয়া, ফের ঝড় তুলল ওবামা-র স্মৃতিকথা
আরও পড়ুন - লাদাখ মানচিত্র বিতর্ক, ভারতের কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হল টুইটার
বস্তুত, সাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের মতো অনলাইনে ক্লিক সংগ্রহের একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। নাম সেভ বেঙ্গল ফ্রম বিজেপি ডট কম (savebengalfrombjp.com)। সেখানে, 'আপনি কি অসাম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান', 'আপনি কি বিভেদের রাজনীতি ঘৃণা করেন', 'আপনি কি ঘৃণার বিরুদ্ধে' - জাতীয় বেশ কিছু প্রশ্ন রয়েছে। আর তার সঙ্গে রয়েছে একটি বোতাম, যাতে লেখা 'ক্লিক করুন / নিজেকে বিজেপির থেকে সুরক্ষিত করুন'। সেই বোতামে ক্লিক করলেই 'বিজেপির থেকে সুরক্ষিত'দের তালিকায় একটি ক্লিকের সংখ্যা বেড়ে যাবে।
সেভ বেঙ্গল ফ্রম বিজেপি-র ওয়েবসাইট
এদিন এই ওয়েবসাইটের কথা জানিয়ে তৃণমূল নেতা তথা পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১০ লক্ষের বেশি মানুষ এইভাবে বিজেপির থেকে নিজেকে সুরক্ষিত করেছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওয়েবসাইটটির নিজস্ব হিসাব বলছে, ক্লিক করেছেন ১০,২৩,২৬১ জন। তবে মজার বিষয় হল, ওয়েবসাইটটির কোথাও তৃণমূলের প্রতীক বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া হয়নি। বাংলা, ইংরাজি, হিন্দি তিনটি ভাষায় ব্যবহার করা যাবে সাইটটি। বোতামটিতে ক্লিক করলে প্রতিটি প্রশ্নের বিষয়ে একটি করে ভিডিও-ও দেখা যাবে।
তবে, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সমস্যা হল, সাইটে দেওয়া প্রশ্নের বেশ কয়েকটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিরোধীরাই অভিযোগ করে থাকেন। যেমন স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ-এর প্রশ্নে অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে কার্টুন কাণ্ডে যাদবপুরের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের গ্রেফতার হওয়ার কথা। আবার দুর্গাপূজা বা মৌলবীদের টাকা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বিভেদের রাজনীতিকে উসকানি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করে থাকেন বিরোধীরা। এছাড়া একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে বরাবরই রয়েছে। এছাড়া, এতদিন তৃণমূলের প্রচার হতো মমতার সাফল্য কেন্দ্রিক, এই প্রচার কিন্তু একেবারেই নেতিবাচক, মমতার পক্ষে নয়, বিজেপির বিপক্ষে।