রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া হাওড়ায়, ১০ দিন ধরে মেয়ের মৃতদেহ আগলে মা

মেয়ের সঙ্গেই থাকতেন দীপ্তি মল্লিক। মাস দুয়েক ধরে তাঁরা দুজনেই অসুস্থ ছিলেন। হাঁটা চলারও ক্ষমতা ছিল না। বাড়ির লাগোয়া আত্মীয় স্বজনরা রয়েছেন। কিন্তু, কেউই তাঁদের দেখাশোনা তো দূরের কথা খোঁজ খবরই কেউ নেয়নি। 

রবিনসন স্ট্রিটে (Robinson Street) ৬ মাস ধরে দিদি (Sister) ও দুই কুকুরের (Pet Dog) মৃত দেহ আগলে রেখেছিলেন ভাই (Brother)। সেই মৃতদেহের (Dead Body) সঙ্গেই একই বাড়িতে দিনের পর দিন বসবাস করেছিলেন তিনি। ৬ মাস পর ওই দেহগুলি পুলিশের তরফে উদ্ধার করা হয়েছিল। এই ঘটনায় শিউরে উঠেছিলেন রাজ্যবাসী। আর এবার সেই ঘটনার ছায়া দেখা গেল হাওড়ায়। মেয়ের মৃত্যু হয়েছিল ১০ দিন আগেই। পরিবারে আর কোনও সদস্যই ছিলেন। মা ও মেয়েকে নিয়েই ছিল সংসার। এদিকে হাঁটাচলার ক্ষমতা ছিল না ৭০ বছর বয়সী দীপ্তি মল্লিকের। ফলে মেয়ের মৃত্যুর খবরও কাউকে দিতে পারেননি তিনি। অবশেষে আজ শ্যামলী মল্লিকের (৪৫) দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শিবপুর থানার (Shibpur Police Station) অন্তর্গত মল্লিক পাড়া এলাকায়। 

প্রায় চার কাঠা জমির উপরে দীপ্তি মল্লিকের বাড়িটি রয়েছে। কিন্তু, বাড়ির প্রতিটি কোণাতেই অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। বহু দিন ধরেই বাড়ির কোনও যত্ন করা হয়নি। বাড়ির পাশেই বেড়ে উঠেছে গাছ-পালা। বাড়িটি যে একেবারেই দেখাশোনা করা হয় না তা স্পষ্টই ফুটে উঠেছে। জানা গিয়েছে, মেয়ের সঙ্গেই থাকতেন দীপ্তি মল্লিক। মাস দুয়েক ধরে তাঁরা দুজনেই অসুস্থ ছিলেন। হাঁটা চলারও ক্ষমতা ছিল না। বাড়ির লাগোয়া আত্মীয় স্বজনরা রয়েছেন। কিন্তু, কেউই তাঁদের দেখাশোনা তো দূরের কথা খোঁজ খবরই কেউ নেয়নি। শ্যামলীর ভাইয়ের ছেলে শুভদীপ মাঝে মধ্যে তাঁদের বাড়িতে যেতেন। কিছু খাবার দিয়ে যেতেন। ১০দিন আগে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। আর আজ সকালেই সেখানে যান। এরপর বাড়ির কাছে গিয়েই দুর্গন্ধ পান তিনি। 

Latest Videos

আরও পড়ুন- বিছানায় মিশেছে দেহ, পড়ে রয়েছে কঙ্কাল, ৩ মাস বাবার মৃতদেহ আগলে ছেলে

এরপর ঘরে ঢুকতেই তাঁর চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগার হয়েছিল। ঘরে ঢুকে দেখেন শ্যামলীর পচা গলা দেহ পড়ে রয়েছে বিছানায়। আর সেই মৃত দেহের পাশেই পড়ে রয়েছেন দীপ্তিদেবী। সঙ্গে সঙ্গে তিনি খবর দেন শিবপুর থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। তবে এতদিন ধরে এই ঘটনার কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি স্থানীয়রা। 

আরও পড়ুন- শোভন-শুভেন্দুকে আজও খুবই মিস করেন, নস্টালজিয়ায় ভেসে জানালেন ফিরহাদ

দীপ্তি মল্লিক জানান, তাঁদের কেউ দেখাশোনা করত না। তাঁর স্বামী একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। বছর তিনেক আগে মারা যান। তারপর মা-মে একসঙ্গেই থাকতেন তাঁরা। শুভদীপ মল্লিক জানান, তিনি মাঝে মধ্যে খাবার দিয়ে যেতেন। কিন্তু, শ্যামলী ও দীপ্তিদেবীর অসুস্থতার কথা জানা সত্ত্বেও কেন তাঁদের চিকিৎসা করানো হল না তার কোনও সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। সম্পত্তি দখলের জন্যই এই গাফিলতি কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

আরও পড়ুন- 'পেগাসাস থেকে বাঁচবার জন্য গান্ধীজির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছে বিজেপি', বিস্ফোরক ফিরহাদ

গত বছর নভেম্বর মাসেও এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল গড়ফা থানার (Garfa Police Station) গাঙ্গুলি পুকুর এলাকার প্রিন্ম আনোয়ার শাহ রোড কানেক্টরে। তিন মাস (3 Months) ধরে বাবার মৃতদেহ (Father's body) আগলে রেখেছিলেন ছেলে (Son)। অনেকদিন আগেই দেহে পচন ধরতে শুরু করে দিয়েছিল। এরপর প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

Share this article
click me!

Latest Videos

গোপন অভিযান চালিয়ে হতবাক পুলিশ! এ কী উদ্ধার হলো নদীয়া থেকে, দেখুন | Nadia News Today
‘পুলিশ বিজেপি নেতাদের ছবি তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠায়’ মমতাকে তুলোধোনা করলেন সুকান্ত, দেখুন কী বললেন
অশোকনগরে ট্রেন অবরোধে তুলকালাম! কেন এই পরিস্থিতি হল? দেখুন | Ashoknagar News
উত্তর ব্যারাকপুরে শোকের ছায়া! নিজের বাড়ির ছাদ থেকেই পাওয়া গেল নিথর দেহ | North 24 Parganas News
গোপন অভিযানে এ কী উদ্ধার করলো পুলিশ! চাঞ্চল্য ভাঙড়ে | South 24 Parganas News Today