সংক্ষিপ্ত
'আজও মিস করি শোভন-শুভেন্দুকে', শনিবার রাতে সংবাদমাধ্যমকে একথা জানান ফিরহাদ। পুরোনো বন্ধুত্বের ছবি আজও অক্ষয় তাঁর স্মৃতিকে। সেই গোপন আবেগই ঝরে পড়ল তাঁর গলায়।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) আগে দলবদলের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে (West Bengal)। সে সময় বহু তৃণমূল নেতাকেই শিবির বদল করতে দেখা গিয়েছিল। প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ দল পরিবর্তন করছিলেন। আর সেই সময় বহু শীর্ষ নেতৃত্বকেও দল বদলাতে দেখা গিয়েছিল। অবশ্য ভোট (Election) মিটে যাওয়ার পর সেই ছবিটা অনেকটাই বদলে যায়। নিজেদের 'ভুল' বুঝতে পেরে ফের ঘর ওয়াপসি হয়েছে অনেকেরই। তবে এখনও পর্যন্ত এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা এখনও পর্যন্ত পুরনো দলে ফিরতে পারেননি। এই অবস্থায় প্রাক্তন সেই সব নেতাদের খুবই মিস করছেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। নস্টালজিয়ায় ভাসলেন তিনি।
'আজও মিস করি শোভন-শুভেন্দুকে', শনিবার রাতে সংবাদমাধ্যমকে একথা জানান ফিরহাদ। পুরোনো বন্ধুত্বের ছবি আজও অক্ষয় তাঁর স্মৃতিকে। সেই গোপন আবেগই ঝরে পড়ল তাঁর গলায়। নির্বাচনের আগে বিজেপিকে বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়ে সেই দলের উপর ভরসা রেখে তৃণমূল ছেড়েছিলেন অনেকেই। সেই তালিকায় রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), মুকুল রায় (Mukul Roy), শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee), রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) মতো একাধিক নেতা। কিন্তু, নির্বাচনের পর বিজেপির (BJP) ভরাডুবি দেখে ফের পুরনো দলের ফেরার চেষ্টা করেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই মুকুল, রাজীব দলে ফিরে গিয়েছেন। শুভেন্দু-শোভনের মতো কয়েক জন নেতার।
আরও পড়ুন- 'পেগাসাস থেকে বাঁচবার জন্য গান্ধীজির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছে বিজেপি', বিস্ফোরক ফিরহাদ
তবে শুধুমাত্র দলই নয়, বিশেষ বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Baishakhi Banerjee) জন্য পদ, পরিবার, সন্তান, সম্মান সবই ছেড়েছিলেন মমতার আদরের কানন। মাঝে একই সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন-বৈশাখী। কিন্তু, বেশিদিন তাঁরা সেখানে থাকত পারেননি। তারপর আর তৃণমূলেও তাঁদের ফেরা হয়নি। আর এবার সেই শোভনের কথা চিন্তা করে নস্টালজিক হয়ে পড়লেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, "শোভন আমার অনেক পুরনো বন্ধু। একসঙ্গে অনেক আন্দোলন করেছি। ও যে এভাবে চলে যাবে কখনও ভাবিনি। শোভনকে মিস করি আজও। আমি চাই, পুরনো যাঁরা সেই প্রথমদিন থেকে মমতা দি’র সঙ্গে পথচলা শুরু করেছিলাম, তাঁরা একসঙ্গে থাকব। হঠাৎ করে যে ও চলে যাবে তা ভাবিনি।"
আরও পড়ুন- "গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার হয়ে যাচ্ছে রাজ্য", গান্ধীজির প্রয়াণ দিবসে ফের তোপ রাজ্যপালের
শোভনকে দলে ফেরাতে বহু চেষ্টাই করেছিলেন ফিরহাদ। দল ছাড়ার পর একবার ভাইফোঁটা নিতে মমতার বাড়িতেও হাজির হয়েছিলেন কানন। তা নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা। মনে করা হচ্ছিল তাহলে হয়তো পুরোনো দলে ফিরতে পারেন তিনি। কিন্তু, তা হয়নি। এনিয়ে ফিরহাদের দাবি, "ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি যখন জাহাজ মাঝ সমুদ্রে ডুবতে থাকে তখন ইঁদুরেরা লাফ দিতে শুরু করে। কিন্তু ইঁদুররা গিয়ে পড়ে একেবারে সমুদ্রে। যেখানে মৃত্যু নিশ্চিত। আমি মনে করি দল বদলে খুব বেশি সম্মান থাকে না। একটা দলে সারাজীবন থাকলে যে সম্মান পাওয়া যায়, পালিয়ে গেলে সেটা আর কিছুতেই থাকে না।"
আরও পড়ুন- ইছাপুরে বাড়ির কাছেই খুন তৃণমূল নেতা, গ্রেফতার অর্জুন ঘনিষ্ঠ
শুভেন্দু প্রসঙ্গেও আক্ষেপের সুর শোনা যায় ফিরহাদের গলায়। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে শুভেন্দু কি কখনও তৃণমূলে ফিরবেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, "ও কেন দল ছেড়ে গেল তা নিয়ে আমার নিজেরও প্রশ্ন আছে। আমার নিজের কাছেও উত্তর নেই তার। কী পেল গিয়ে? গান্ধীবাদ ছেড়ে গডসেবাদ করা যায় না। মানুষের কাছে বিশ্বাস যোগ্যতাই নষ্ট হয় শুধু।"