কর্মীসভা শেষে করেই শুভেন্দু যান দেবেন মাহাত গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের খোঁজ নিতেই সেখানে গিয়েছিলেনি তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়া বিধানসভার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় এবং পুরুলিয়া লোকসভার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাত।
হাসপাতালের ভিতরে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মী রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করছেন। ডেপুটি সুপার শুভেন্দু অধিকারীকে বসার জন্য নিজের ছেড়ে দিচ্ছেন। চেয়ার ছেড়ে দেওয়ার পর হাতজোড় করে তাঁকে প্রণাম করছেন। এমনই সব ভিডিও (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এশিয়ানেট নিউজ বাংলা) ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর প্রতিবাদে দেবেন মাহাত গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপিকে ঘিরে আজ বিক্ষোভ দেখান বেশ কয়েকজন যুবক। গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়ে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও পাঠিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
১৬ সেপ্টেম্বর পুরুলিয়া জেলা বিজেপির পুরুলিয়া বিধানসভার কর্মী সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু। তেলকল পাড়ার একটি বেসরকারি রিসর্ট ক্যাম্পাসে ওই কর্মীসভা শেষে করেই শুভেন্দু যান দেবেন মাহাত গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের খোঁজ নিতেই সেখানে গিয়েছিলেনি তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়া বিধানসভার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় এবং পুরুলিয়া লোকসভার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাত। শুভেন্দুকে হাসপাতালে দেখেই শুরু হয় তৎপরতা।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের একজন কর্মী শুভেন্দু অধিকারীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করছেন। জানান গিয়েছে তিনি নাকি হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার। এরপরেই শুভেন্দু যান ডেপুটি সুপার সুভাষ সাহার ঘরে। সেখানে, শুভেন্দুর বসার জন্য নিজের চেয়ার ছেড়ে দেন সুভাষ সাহা। তাঁর ঠিক পাশের দুটি চেয়ারে বসেন সুদীপ মুখোপাধ্যায় এবং জ্যোতির্ময় সিং মাহাত। অন্য আরেকটি চেয়ারে বসেন ডেপুটি সুপার নিজে। এরপরেই শুভেন্দু অধিকারীকে মাথায় হাত ঠেকিয়ে করজোড়ে প্রণাম করেন তিনি। এই ভিডিওগুলি এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন- 'সবেমাত্র শুরু, এখনও অনেকের আসা বাকি রয়েছে', বাবুলের যোগদান প্রসঙ্গে বললেন অভিষেক
আর এই ঘটনার সমালোচনা করেছেন অনেকেই। কেন একজন রাজনৈতিক নেতাকে হাসপাতালে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তুষার অবস্থি নামে পুরুলিয়া শহরের এক যুবক ওই হাসপাতালে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন। পাশাপাশি হাসপাতালের সেদিনের ঘটনার বিবরণ সহ নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তুষার অবস্থি জানান, "হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় এভাবে বিরোধী দলনেতাকে পা ছুঁয়ে প্রণাম করা। চেয়ার ছেড়ে দিয়ে করজোড়ে প্রণাম করা আমরা তা বরদাস্ত করব না। আমরা যখন কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষকে সাহায্য করার জন্য পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলাম তখন আমাদেরকে পুলিশ কেস দেওয়া হয়েছে। কারও যদি প্রণাম করার থাকে বা বিশেষভাবে সন্মান জানানোর থাকে তাহলে সেই নেতার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে করুক। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের ভিতর এসব মেনে নেওয়া যায় না।" এদিকে এই ঘটনা নিয়ে দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন- বাবুল জননেতা বা দক্ষ সংগঠক নন, বিজেপির ক্ষতি হবে না, বললেন শুভেন্দু অধিকারী