'বিরোধীদের সঙ্গে দলের একাংশ মিলে আমাকে অপহরণ করেছে', প্রধানের কথায় অস্বস্তিতে শাসকদল

অপহরণ থেকে উদ্ধার হওয়ার পরেই গুরুতর অসুস্থ শাসকদলের পঞ্চায়েত প্রধান।' বিজেপি এবং কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে দলের একাংশ চক্রান্ত করে আমাকে অপহরণ করেছে', অভিযোগ প্রধানের।

Asianet News Bangla | Published : Jul 29, 2021 12:24 PM IST / Updated: Jul 29 2021, 05:57 PM IST


মালদা-তনুজ জৈনঃ- মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে দৌলত নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অনাস্থা নিয়ে সরগরম এলাকার রাজনীতি। ক্রমশ বাড়ছে উত্তেজনা। অপহরণ পাল্টা অপহরণের অভিযোগ। গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রধান। বিজেপি কংগ্রেসের সঙ্গে মিলিত হয়ে দলের একাংশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ। প্রকাশ্যে গোষ্ঠী কোন্দল। চরমে তৃণমূল বিজেপির মধ্যে বাদানুবাদ। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে শাসকদলকে তীব্র কটাক্ষ বিজেপির।

আরও পড়ুন, 'পেগাসাসের বিষ ছড়াচ্ছে BJP', কালো কাপড় বেঁধে কালো ঘোড়ায় রাজপথে প্রতিবাদ মদনের

উল্লেখ্য, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের অন্তর্গত দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আনাস্থা আনে। সেই অনাস্থা নিয়ে জল গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। তারপর হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে অনাস্থা আনা ১২ জন সদস্যকে ব্লকে ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু অভিযোগ ২৭ তারিখ মঙ্গলবার ওই সদস্যদের ব্লক চত্বর থেকে অপহরণ করা হয়। অভিযোগের তীর যায় প্রধানের দলবলের দিকেই। পাল্টা প্রধানকেও অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ কিন্তু তার পরের দিনই সেই অপহৃত সদস্যরা উদ্ধার হয়। দুই পক্ষের মধ্যে মীমাংসাও হয়ে যায়। কিন্তু তারপর ২৭ তারিখ তেল চেন্না সুইচ গেটের কাছে প্রধানের দলীয় কার্যালয়ে একশো থেকে দেড়শো জন চড়াও হয়। অভিযোগ সেখানে দলীয় অফিস ভাঙচুর করা হয়। মারধর করা হয় প্রধানকে। 

আরও পড়ুন, রাজ্যসভার নির্বাচনে প্রার্থী দেবে না BJP, জানালেন শুভেন্দু


তারপর প্রধান নাজিবুর রহমানকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়।  বিহারে নিয়ে গিয়ে বন্ধ ঘরে প্রধানকে আটকে রাখা হয়, তারপর হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ আইসির নেতৃত্বে প্রধানকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পরেই অসুস্থ হয়ে যান প্রধান নাজিবুর রহমান। প্রথমে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হন।তারপর মালদা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। প্রধানের মূলত অভিযোগ,' বিজেপি এবং কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে দলের একাংশ চক্রান্ত করে আমাকে অপহরণ করেছে।' ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্যদের অপহরণের ঘটনাও সাজানো। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূল নেতৃত্বের। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব জানাচ্ছে সমস্ত ব্যাপার খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।যারা দোষী তাদের পাশে দাঁড়াবে না দল। এদিকে এই ঘটনার পর থেকে উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী।

আরও পড়ুন, চালু হবে না লোকাল ট্রেন, ১৫ অগাস্ট অবধি কড়া বিধি-নিষেধ জারি রাজ্যে

দৌলত নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নাজিবুর রহমান বলেন,'আমার দলীয় কার্যালয় থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। যারা এসেছিল প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। বোমাবাজি করা হয়। বিজেপি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে দলের একাংশ আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। আমি দলকে বলেছি আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ হলে দল ব্যবস্থা নেবে। আমাকে যেভাবে তুলে নিয়ে  আটকে রাখা হয়েছিল পুলিশ এসে  না করলে আমার কিছু হয়ে যেত।' যদিও প্রধানের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবদুল গফফর নামে পঞ্চায়েত সদস্য। যিনি কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন,' অনাস্থা প্রক্রিয়া আটকানোর জন্য প্রধানের লোক আমাদেরকে অপহরণ করেছিল। সেই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে প্রধান এইসব সাজাচ্ছে।'

আরও পড়ুন, কোভিড আবহেই রমরমিয়ে মধুচক্রের ঠেক, পুলিশের জালে ২ মহিলা পান্ডা সহ ২১

তৃণমূল জেলা সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত শর্মা বলেন,'নিজেদের মধ্যে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। সমস্ত ব্যাপার খতিয়ে দেখা হবে। কেউ দোষী হলে প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে। দলের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল বলেন ,'এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ খোঁজা হাস্যকর। বিজেপির এই ঘটনায় কোনো যোগাযোগ নেই। এটা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। যারা সেদিন ওই জায়গায় ছিল প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। খতিয়ে দেখুক। বিজেপির নাম জড়িয়ে লাভ নেই।' হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানান,'পায়খানা মোড় সুইচ গেটের কাছে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। যে কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সচেষ্ট পুলিশ। সমস্ত ঘটনার দিকে নজর রাখা হচ্ছে।'

তবে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। অনাস্থা জটিলতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছে দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে। শেষ পর্যন্ত যা নিয়ে ঘটে গেল অপহরণের ঘটনা। দুই পক্ষই অভিযোগ করলো একে অপরের বিরুদ্ধে। শাসক দল শেষ পর্যন্ত এই ঘটনাকে কিভাবে সামাল দেয়, বা ঘটনার মোড় কোন দিকে নেই তাই দেখার বিষয়।

 আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে  

আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়  

আরও পড়ুন, রাজ্য়ের সর্বনিম্ন সংক্রমণ এই জেলায়, বৃষ্টিতে হারাতেই পারেন পুরুলিয়ার পাহাড়ে

আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ  

আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা 

আরও পড়ুন, বনগাঁ লোকাল নয়, জাপানে ঠেলা মেরে ট্রেনে তোলে প্রোফেশনাল পুশার, রইল পৃথিবীর আজব কাজের হদিস 

 

 

Share this article
click me!