বিজেপি নেতারা অনেক বার দাবি করেছেন। কিন্তু খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কয়েকদিন আগে বাংলায় প্রচারে এসে বিতর্কটা উস্কে দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দাবি ছিল, চল্লিশজন তৃণমূল বিধায়ক সরাসরি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিজেপি রাজ্য নেতাদের অবশ্য দাবি, সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি।
এ বার অবশ্য আর বিজেপি-র কোনও নেতা নয়। তৃণমূলের টিকিটে জিতেও ভোটের পরেও শাসক দলের অনেক নেতাই হাওয়া বুঝে বিজেপি বা অন্য দলে চলে যেতে পারেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের দাবি, কে কোন দলে যাবেন তা ধরতেও পারবেন না তৃণমূল নেত্রী।
গত ২৯ এপ্রিল হুগলিতে প্রচারে এসে তৃণমূল বিধায়কদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের দাবি করেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দাবি ছিল, "দিদি, ২৩ তারিখের পর আপনার অনেক বিধায়কই আপনার সঙ্গে আর থাকবেন না। ছেড়ে চলে আসবেন। অন্তত চল্লিশ জন বিধায়ক আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন!”
অনেকটা একই সুরে বৃহস্পতিবার উত্তর চব্বিশ পরগনার সোদপুরে প্রচারে গিয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। মমতার উদ্দেশে বলেন, "আপনার যে ক'জন প্রার্থী জিতবেন, তাঁরা যদি জেতার পরে দেখেন গতি ভাল না, বেগতিক অবস্থা, তাহলে মুখ্যমন্ত্রী আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ করে বলছি, সবাইকে আপনি ধরে রাখতে পারবেন না। এঁরা কে যে কোনখানে যাবেন, তা আপনি ঠিকঠাক ধরতেও পারবেন না।"
তবে তৃণমূলের জেতা বিধায়করা কোন দলে যাবেন, তা অবশ্য বলেননি সিপিএম রাজ্য সম্পাদক। একই সঙ্গে তিনি এমন দাবিও করেননি যে বামেরা এ রাজ্যে দারুণ ফল করবে। তবে ভোটের ফলের উপরে যে তৃণমূল দলের সংগঠন অনেকটাই নির্ভর করছে, সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর দাবি অবশ্য প্রত্যাশিতভাবেই খারিজ করেছিল তৃণমূল। নির্বাাচন কমিশনেও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেঅভিযোগ জানায় রাজ্যের শাসক দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, "পারলে একজনকে বিধায়ককে নিয়ে দেখান।"
ভোটের পরে কী হবে তা বলা মুশকিল হলেও ভোটের আগেই অবশ্য টিকিট না পেয়ে বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছিলেন দুই তৃণমূল সাংসদ এবং বিধায়ক। সেই তালিকায় রয়েছেন অনুপম হাজরা, সৌমিত্র খাঁ এবং অর্জুন সিংহ। এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন তাঁরা। সব্যসাচী দত্তের মতো বিধায়ককে নিয়েও দলবদলের জোর জল্পনা ছড়িয়েছিল।