তৃণমূল কর্মী খুনে ১৫ বছর পর সাজা ঘোষণা চুঁচড়া আদালতের, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ৮ সিপিএম নেতার

Published : Nov 11, 2025, 08:56 PM IST
Prison Cell

সংক্ষিপ্ত

Hooghly News: তৃণমূল কর্মী খুনে আট সিপিএম নেতার যাবজ্জীবন সাজা শোনাল আদালত। বিশদে জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন… 

Hooghly News: পনেরো বছর আগে গুড়াপে তৃণমূল কর্মী খুন। ৮ সিপিআইএম কর্মীর যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল চুঁচুড়া আদালত। গত ৬ নভেম্বর অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। হুগলির গুড়াপে তৃণমূল কর্মী ক্ষুদিরাম হেমব্রম খুন হন গত ১৮ মার্চ ২০১০ সালে। মঙ্গলবার চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সঞ্জয় কুমার শর্মা অভিযুক্ত আট সিপিআইএম কর্মীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের সাজা শোনান।

কী সাজা শোনালো আদালত?

সাজাপ্রাপ্ত সিপিআইএম কর্মীরা হল তৎকালীন গুড়বাড়ি -১পঞ্চায়েত প্রধান লালু হাঁসদা,রবি বাস্কে, লক্ষীরাম বাস্কে, সিদ্ধেশ্বর মালিক, সনাতন মালিক, গণেশ মালিক, লক্ষ্মীনারায়ন সোরেন, নাড়ু টুডু। ঘটনায় অমর রুইদাস ও নেপাল মালিক নামে আরও দুই জন বাম কর্মী অভিযুক্ত ছিলেন, যারা বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন মারা যান।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ১৮ মার্চ গুড়াপে খুন হয়েছিলেন তৃণমূল কর্মী ক্ষুদিরাম হেমব্রম।সেদিন মৃত ক্ষুদিরামের ছেলে সুনীল হেমব্রমের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ছিল । মাঠে কাজ করে বন্ধু তপন রুইদাসের মেয়ের দেখাশোনার জন্য তার বাড়ি গিয়েছিলেন ক্ষুদিরাম।তারপর আর বাড়ি ফেরেননি।পরদিন ১৯ তারিখ ডিভিসি র ক্যানেল থেকে বস্তা বন্দী রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় ক্ষুদিরামের।

রাজনৈতিক কারনে তৃণমূল কর্মী ক্ষুদিরাম হেমব্রমকে কুপিয়ে খুন করে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সো সময় ঘটনায় তোলপার হয়। ১৯শে মার্চ রাতে গুরাপ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তপন রুই দাস।

গুড়াপ থানার পুলিশ তদন্তে নেমে দশজন সিপিআইএম কর্মিকে গ্রেফতার করে।ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, তথ্য প্রমান লোপাট, অস্ত্র হাতে অপরাধ সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। চুঁচুড়া আদালতে চার্জ শীট জমা দেয় পুলিশ।২৭ শে জুন ২০১৭ সালে চার্জ গঠন হয়।বিচার পক্রিয়া শুরু হয়।১২ জন সাক্ষী দেন এই মামলায়। ঘটনায় ৪জন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। বিচার পর্ব চলার সময় দুই অভিযুক্তের মৃত্যু হয়।

আটজন জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। গত ৬ নভেম্বর তাদের দোষী সাব্যস্ত করেন চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সঞ্জয় কুমার শর্মা। আজ সাজা ঘোষনা হয়।

রায় ঘোষনার আগে বাদী -বিবাদী দু পক্ষের আইনজীবী র কাছে থেকে তাদের মতামত জানতে চায় আদালত।গত ৭ নভেম্বর সাজা ঘোষনার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়।আদালত ৮জন অভিযুক্তদের পৃথক সেলে রাখার নির্দেশ দেয়।আজ হয় চূড়ান্ত রায় দান।

সরকারী আইনজীবী চন্ডী চরন ব্যানার্জী বলেন, আমরা দোষীদের সর্বোচ্চ সাজার আবেদন জানিয়েছিলাম।আদালত তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের সাজা শুনিয়েছে।দশ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন,অনাদায়ে এক বছর জেলের সাজা শুনিয়েছেন।নৃশংসভাবে ক্ষদিরামকে খুন করা হয়েছিল।

হুগলি জেলা আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,প্রায় ১৫ বছর সময় লেগে গেল এই মামলার রায়দান হতে।তবে এর জন্য সরকারি আইনজীবী বা আদালত কেউই দায়ী নয়।মামলা চলাকালীন আসামি পালিয়ে গিয়েছিল তাকে ধরা এবং তথ্য প্রমাণ যোগাড় করে পুলিশ চার্জশিট দিয়েছিল তারপর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।এই খনে যে নৃশংসতা ছিল সেই কারণেই আদালত 8 জন দোষীকেই যাবজ্জীবন সবসময় কারাদণ্ড সাজা শুনিয়েছে।

ক্ষুদিরামের স্ত্রী মালতি হেমব্রম বলেন,ফাঁসি হলে ভালো হত।আমার স্বামী চিরজীবনের মত চলে গেলো।ছেলেমেয়েরা ছোটো ছিলো তাদের অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছি। ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র বলেন,ধনেখালিতে সিপিআইএম অনেক তৃণমূল কর্মীকে খুন করেছে।তাদের হার্মাদ বাহিনী অত্যাচার চালাতো।২০১১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিবারগুলোকে বিচার দেওয়ার চেষ্টা করছি।ক্ষুদিরাম কে তপন রুইদাসের বাড়িতে তার পরিবারের সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়।তারপর মেঝেতে পড়ে থাকা সেই রক্ত বাড়ির মহিলাদের দিয়ে মুছতে বাধ্য করা হয়।

মৃতদেহ লোপাট করে টেনে নিয়ে গিয়ে ডিভিসির খালে ফেলে দেয়।এবং এই ঘটনা যারা প্রত্যক্ষদর্শী তাদেরকে হুমকি দেওয়া হয়।আদালত তাদের সঠিক বিচার করেছ। আদালত থেকে বেরোনোর সময় দোষীরা জানিয়েছেন , তারা সিপিএম করেন বলে তাদের ফাঁসানো হয়েছে।।।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

Babri Masjid News: অবশেষে বাবরি মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হুমায়ুনের, কী মন্তব্য নওশাদের?
Humayun Kabir: বাবরি মসজিদ নিয়ে বড় পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিলেন হুমায়ুন! দেখুন কী বলছেন