লকডাউনে অভাবের তাড়নায় কন্যাসন্তানকে বিক্রি, তারপর শিশু বিক্রির নেশায় মেতে উঠলেন হাওড়ার দম্পতি

লকডাউন চলাকালীন এই দম্পতির একটি কন্যাসন্তান হয়। কিছুদিনের মধ্যেই নিজেদের মেয়েকে উলুবেরিয়ায় কোনও এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন বিশ্বজিৎ এবং রত্না।

Sahely Sen | Published : Dec 2, 2022 10:50 AM IST

কোভিডকালে দেশে লকডাউন চলাকালীন তীব্র অর্থকষ্টে ভুগছিলেন হাওড়ার দম্পতি। অভাব থেকে বাঁচতে বিক্রি করে দিয়েছিলেন নিজেদের ছোট কন্যাসন্তানকে। কিন্তু, সেই অর্থমূল্যেই শেষ হয়ে যায়নি সন্তান বিক্রি করে টাকা আয়ের লোভ। অভাবের তাড়না গিয়ে শেষ হল শিশু বিক্রির নেশায়। প্রায় দেড় মাস আগে নিজেদেরই আরও এক সন্তানকেও বিক্রি করে দেন ওই দম্পতি, দ্বিতীয় সন্তান ছিল তাঁদের পুত্র। শুধু এখানেই শেষ নয়, আরও টাকা পাওয়ার লোভে আরও দু’জন শিশুকে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। অভিযোগ পেয়েই এবার হাওড়ার এই দম্পতিকে গ্রেফতার করল হাওড়ার সাঁকরাইল থানার পুলিশ।

গ্রেফতার হওয়া দম্পতির নাম বিশ্বজিৎ বর এবং রত্না বর। কেবলমাত্র এঁরা দুজনই নন। সূত্রের খবর, শিশু বিক্রির দালাল চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ধৃতের নাম শ্যামলী নস্কর।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাঁকরাইলের উলা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ধৃত বিশ্বজিৎ এবং রত্না। স্ত্রীর সঙ্গে নিজের শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন বিশ্বজিৎ বর। লকডাউন চলাকালীন এই দম্পতির একটি কন্যাসন্তান হয়। কিছুদিনের মধ্যেই নিজেদের মেয়েকে উলুবেরিয়ায় কোনও এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন বিশ্বজিৎ এবং রত্না। ২০২২-এ দেড় মাস আগেও একইভাবে নিজেদের ছোট্ট ছেলেটিকেও বিক্রি করে দেন এই দুই অভিযুক্ত। দ্বিতীয় শিশুটিকে বিক্রি করা হয় নলপুরে। দুই সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার পর অর্থলাভের নেশা চেপে বসে বাবা ও মায়ের ওপর। আরও বেশি টাকা রোজগার হওয়ার আশায় অন্য দুই শিশুকে বিক্রি করার চেষ্টা করছিলেন দম্পতি।

তৃতীয় শিশুটিকে বিক্রি করে দেওয়ার আগেই সেই দুষ্কর্মের আঁচ পেয়ে যান তাঁদের প্রতিবেশীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে এই অভিযোগ পেয়েই তৎক্ষণাৎ বিশ্বজিৎ এবং রত্নাকে গ্রেফতার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। শিশু বিক্রির দালাল চক্রের সঙ্গে যোগ থাকার সন্দেহে নলপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় শ্যামলী নামের আরেক মহিলাকে।

ধৃত দম্পতি ও আরেক শিশু পাচারকারীর বিরুদ্ধে ‘জুভেনাইল জাস্টিস কেয়ার অব চিলড্রেন’ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাঁদের হাওড়া আদালতে হাজির করানো হয়। সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য, “ধৃতদের বিরুদ্ধে নিজের সন্তান ও অন্য শিশুদের বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এঁদেরকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।”


আরও পড়ুন-

এনআইএ-র জালে লুধিয়ানা আদালতে বিস্ফোরণের মূল চক্রী হরপ্রীত সিং, ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার
ব্যস্ততা সত্ত্বেও মানুষের জীবনের সঙ্গে আপোষ নয়, কনভয় থামিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সকে জায়গা দিতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে তরুণীদের মৃত্যু হলেও তার জন্য সরকার দায়ী নয়: সুপ্রিম কোর্টকে জানাল কেন্দ্র

Share this article
click me!