হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে, লোকলজ্জা ও অপমানের জেরেই তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে দাবি পরিবারের। পুলিশ সূত্রে খবর তিনি চন্ডীপুরের বাসিন্দা ছিলেন।
তিনি বেআইনী ভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, এমনকী তাঁর নাম ছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনের অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকায়। সেই অপমানেই কি আত্মঘাতী হলেন দেবীপুর মিলন বিদ্যাপীঠের বাংলা শিক্ষিকা টুম্পারানি মণ্ডল? প্রাথমিক ভাবে তেমনই সন্দেহ করছে পুলিশ। জানা গিয়েছে রবিবার সন্ধেয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের দেবীপুর মিলন বিদ্যাপীঠের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকার দেহ উদ্ধার হয়।
তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে, লোকলজ্জা ও অপমানের জেরেই তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে দাবি পরিবারের। পুলিশ সূত্রে খবর তিনি চন্ডীপুরের বাসিন্দা ছিলেন।
এদিকে, কলকাতা হাইকোর্টের কড়া নির্দেশের পর বৃহস্পতিবার বিকেলেই, ১৮৩ জন অযোগ্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। অবশেষে প্রকাশ্যে আসে 'অযোগ্য' শিক্ষকদের তালিকা। এই সমস্ত শিক্ষকদের চাকরি এবার প্রশ্নের মুখে পড়ে। ১৮৩ জনের নাম প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। জানা যায় এই তালিকায় যে ১৮৩ জনের নাম রয়েছে, তাঁরা ভুল পথে চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছিলেন।
২০১৬ সালের এসএসসি নবম-দশমের ১৮৩ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয় এদিন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। অবৈধ শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অযোগ্য শিক্ষকদের নাম প্রকাশ করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এই নির্দেশ পাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশ করে এসএসসি।
বিচারপতির নির্দেশ ছিল, ‘‘তিন দিনের মধ্যে কমিশনকে এই তথ্য জানাবেন জেলা স্কুল পরিদর্শকেরা।’’ আগামী ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে পরবর্তী রিপোর্ট পেশ করার জন্য এসএসসি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নবম-দশমে কতজন অবৈধ উপায়ে সুপারিশপত্র পেয়েছেন, বুধবার এই প্রশ্নের জবাবে ১৮৩ জনের কথা আদালতে জানিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। জানা গিয়েছে তেসরা ডিসেম্বর সএসসি কর্তৃপক্ষ, মামলাকারী এবং সিবিআই নিজেদের মধ্যে বৈঠক করবেন। গাজিয়াবাদ এবং এসএসসির দফতর থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া হার্ডডিস্ক থেকে ইতিমধ্যেই ওএমআর শিট (পরীক্ষার খাতা)-এর যে নমুনা দেওয়া হয়েছে, তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে সিবিআই।
তবে সিবিআইয়ের চূড়ান্ত রিপোর্টে সেই সংখ্যা হাজারের কাছে যেতে পারে। উল্লেখ্য, এসএসসির নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ এবং নন-টিচিং স্টাফদের যোগ করলেন সংখ্যাটি যে কয়েকগুণ বেড়ে যাবে তা বলাই যায়। যদিও বৃহস্পতিবার শুনানির পরে ১৮৩ জনের নাম প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। এই মামলায় আবেদনকারীর পক্ষের দাবি, সিবিআই রিপোর্ট অনুযায়ী ভুয়ো সুপারিশ দেওয়া হয়েছে ৯৫২ জনকে। ফলে আপাতত ১৮৩ জন শিক্ষকের চাকরি যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
আরও পড়ুন
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে চড়া সুদ কেন? রাজ্য সরকারের প্রশ্নের মুখে ব্যাঙ্ক আধিকারিকরা
ঝালদা পুরসভার রাজনৈতিক টানাপোড়েন নিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ অধীররঞ্জন চৌধুরী, লিখলেন চিঠি