মমতা বলেন কাল তো প্রায় সরকার পড়ে যাচ্ছিল। কেন পড়ে যাচ্ছিল? শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল। এ বার কাউকে কাউকে রিকোয়েস্ট করে, আমরা জানি তারা কারা। নামগুলি বলে আর তাঁদের অবস্থা দুর্বিষহ করতে চাই না।
বৃহস্পতিবার নতুন করে বোমা ছুঁড়লেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিশানায় অবশ্যই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। বাজেট পেশের দিনই প্রতিক্রিয়ায় একে অমাবস্যার অন্ধকার বলে জানিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বর্ধমান থেকেও বাজেট নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন 'গতকাল তো প্রায় সরকার পড়ে যাচ্ছিল, কারণ শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল। যাঁদের শেয়ার পড়ে যাচ্ছিল তাদেরকে ফোন করে হাজার হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। আমি নামগুলি আর বলতে চাই না। পরিকল্পনা না থাকলে, এই দিয়ে সরকার চলে না। গতকাল কেন্দ্রীয় সরকার একটি বাজেট করেছে। বেকারদের জন্য সেখানে একটি কথাও খরচ করা হয়নি। নির্বাচন এলে বলে ২ কোটি লোককে চাকরি দেব আর ভোট চলে গেল ৪ কোটি চাকরি খেয়ে নেয়। কারণ সব শিল্প বন্ধ হয়ে গিয়েছে। '
এদিন শেয়ার বাজার নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট সামনে আসার পর গত সপ্তাহে আদানি গোষ্ঠী জানিয়েছিল তারা এফপিও ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসবে না। সেইসঙ্গে আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থাগিতে দেওয়া ৮১৩ পাতার জবাবে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ভারত ও দেশের প্রতিষ্ঠান ও আর্থিক বৃদ্ধির ওপর আক্রমণ বলেও সমালোচনা করেছিল। গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আদানি এন্টারপ্রাইস এফপিওতে শেয়ার বিক্রি করেছে। কিন্তু হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সামনে আসার পরে গত শুক্রবার প্রথম দিনে এই শেয়ার কিনতে আবেদন পড়েছিল মাত্র ১ শতাংশ। উল্টে শেয়ার বিক্রি ও তার দরে বিপুল পতনের জেরে লগ্নীকারীরা হারিয়েছেন প্রায় ৫ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
এই প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন ‘‘কাল তো প্রায় সরকার পড়ে যাচ্ছিল। কেন পড়ে যাচ্ছিল? শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল। এ বার কাউকে কাউকে রিকোয়েস্ট করে, আমরা জানি তারা কারা। নামগুলি বলে আর তাঁদের অবস্থা দুর্বিষহ করতে চাই না। ৬-৮ জনকে ফোন করে বলেছে, কাউকে ২০ হাজার কোটি টাকা দাও। মানে যাদের শেয়ার পড়ে যাচ্ছিল তাদেরকে দাও। কাউকে বলেছে ৩০ হাজার কোটি টাকা দাও। কাউকে বলেছে ১০ হাজার কোটি টাকা দাও। এই দিয়ে সরকার চলে যদি পরিকল্পনা না থাকে?’’
বাজেট পেশের পরে মমতা বলেছিলেন 'বাজেটে কোনও আশার আলো নেই, পুরোপুরি অমাবস্যার অন্ধকার।' বীরভূমের সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,'গরিব-মধ্যবিত্তের কোনও লাভ নেই। বাজেটে শুধু একশ্রেণির মানুষই সুবিধা পাচ্ছে। দরিদ্ররা বঞ্চিত হয়েছে। মুদ্রাস্ফিতি আকাশ ছোঁয়া। ট্যাক্সে ছাড় দিয়ে কী হবে?' এখানেই শেষ নয় সেলফ হেল্প গ্রুপ, আইসিডিএস-এর জন্য কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন,'বিনামূল্যে গ্যাস দেওয়ার জন্য উজ্জ্বলা প্রকল্প চালু করা হয়েছে, কিন্তু কেউ কি গ্যাস পেয়েছে?'