২০২১ সালেও বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়েও বিশেষ কোনও লাভ হয়নি। কিন্তু এবারের উপনির্বাচনে এই বাম-কংগ্রেস জোট যে তত্যন্ত ফলদায়ী সেবিষয় সন্দেহের অবকাশ নেই।
অবশেষে কি বিধানসভায় পা রাখবেন কোনও কংগ্রেস বিধায়ক? বাম-কংগ্রেসকে আশার আলো দেখাচ্ছেন বাইরন বিশ্বাস। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের গণনায় শুরু থেকেই চমক। তৃণমূলের শক্ত ঘাটিতে নতুন করে জোড় বাড়াচ্ছে হাত। পোস্টাল ব্যলট গণনা থেকেই তৃণমূলকে পেছনে ফেলেছে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ভোটের ৪২ শতাংশই পেয়েছে কংগ্রেস। তবে তৃতীয় রাউন্ডে তৃণমূল বেশ খানিকটা ব্যবধান কমালেও গণনার এগোনোর সঙ্গে সঙ্গেই ফের বেড়েছে ব্যবধান। এখনও প্রায় আট দফার গণনা বাকি। মোট ১৬ দফার গণনা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
২০২১ সালেও বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়েও বিশেষ কোনও লাভ হয়নি। কিন্তু এবারের উপনির্বাচনে এই বাম-কংগ্রেস জোট যে তত্যন্ত ফলদায়ী সেবিষয় সন্দেহের অবকাশ নেই। সাগরদিঘির উপনির্বাচনে জয়ী হলে অনশেষে বিধানসভায় পা রাখবেন কোনও কংগ্রেস বিধায়ক। ১৯৫০ সালের গো়ড়ার দিকে এই কেন্দ্র কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি ছিল। ১৯৮৭ সাল থেকে সিপিআই(এম) সাগরদিঘি কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। পরিবর্তনের হাওয়া মুর্শিদাবের সাগরদিঘিতেই প্রথম লেগেছিল ২০১১ সালে। সেই সময় থেকেই এটি তৃণমূলের খাসতালুক। এবার অবশেষে অধীরের গড়ে ফের কংগ্রেসের প্রত্যাবর্তন হবে কি না তা এখন সময়ের অপেক্ষা। উল্লেখ্য, প্রথম থেকেই এগিয়ে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী। সময় এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ব্যবধান। এমনকী তৃণমূলের জয়ী আসনেও পুননির্বাচনে এগিয়ে কংগ্রেস। এদিন ভোট বাক্স খোলার থেকেই অশনি সংকেত শাসক দলের জন্য। শুরুতেই পোস্টাল ব্যলটের গণনায় প্রায় ৫০০-এরও বেশি ভোটে এগিয়ে যায় কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। এরপর দ্বিতীয় দফার গণনাতেও ১১ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়ে আপাতত প্রথম স্থানে কংগ্রেস। দু'দফা গণনার পর কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ১১,৪৩৫। তৃণমূল পেয়েছে ৯,৩৫৫ ভোট। অন্যদিকে বিজেপির হাতে মাত্র ৩,০৫৩ ভোট। তৃতীয় রাউন্ডের শেষে ১৯৫৯ ভোটে এগিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ১৪,৫৩৭ এবং বিজেপি পেয়েছে ৫০০০। তৃতীয় দফার শেষে খানিকটা কমল ব্যবধান।
প্রসঙ্গত, গণনা শুরুর আগেই জয়ের ব্যপারে আত্মবিশ্বাসী হলেও কমতে পারে মার্জিন, জানালেন তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন,'জয়ী হলেও আমাদের মার্জিন অনেকটাই কমবে। ব্যবধান সর্বোচ্চ হতে পারে ১৫,০০০ মতো। তবে উল্টো সুর শোনা গেল কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের গলায়। তিনি জানিয়েছেন,'এবার তৃণমূলের গড় যে পঞ্চায়েতগুলিতে সেখানে চমকে দেওয়ার মতো ফল হবে। সংখ্যালঘু এলাকায় খুব ভালো ভোট পেয়েছি। জয়ের ব্যবধান কোনও মতেই ২০,০০০-এর কম হবে না। বিধানসভায় খাতা খুলতে চলেছি আমরা। উপনির্বাচনে এবার অধীর এবং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে এক মঞ্চে দেখা না গেলেও স্থানীয় স্তরে যে এবার বাম-কংগ্রেস বোঝাপড়া এবার অনেক বেশি পোক্ত তা দাবি করেছে দুই শিবিরই। জয়ের জন্য কংগ্রেস প্রার্থীর প্রয়োজন ন্যূনতম ৫০ হাজার ভোট। গত নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩৬ হাজার। বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে এবার সংখ্যাটা ছাড়াতে পারে ৬০ হাজারের গণ্ডি। বিজেপির ভোট শতাংশে খুব বেশি হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন -
সাগরদিঘিতে কি প্রত্যাবর্তন কংগ্রেসের? ক্রমেই শাসকদলের সঙ্গে বাড়ছে ব্যবধান
সাগরদিঘিতে কি প্রত্যাবর্তন তৃণমূলের? নাকি বদলাবে সমীকরণ? সকাল ৮টা থেকে শুরু হল ভোট গণনা
প্রথম রাউন্ডের গণনা শেষ সাগরদিঘিতে, শুরুতেই ৫২৭ ভোটে এগিয়ে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী