এ এক অন্য লড়াই! মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পূজার জীবনের ঘটনা সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে

Published : Feb 16, 2025, 03:57 PM IST
secondary school student

সংক্ষিপ্ত

তার বাবা অরুণ সিং প্রায় ১৫ বছর আগে দূর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। বাবা রিকশা চালাতেন। তখনও অভাবের সংসার ছিল। তবু কোনও মতে দিন কাটছিল। বাবা মারা যাওয়ার পরে মায়ের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন হয় তার। মায়ের সঙ্গে প্রায় দশ বছর আগে থেকে যোগাযোগ নেই। 

জন্ম থেকেই মূক ও বধির পূজা। মূলত ইশারাতেই তার সঙ্গে কথা বলতে হয়। কিন্তু সেই মেয়ে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিচ্ছে এবছর। বালুরঘাট খাদিমপুর গার্লস হাই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পূজা সিং। মাত্র এক বছর বয়সে তার বাবা গায়ে আগুন লেগে মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার কয়েক বছর পরেই মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পূজার। ছোটবেলাতেই আবার হৃদপিণ্ডে ছেদও ধরা পড়ে। দুর্গাপুর থেকে অস্ত্রপচার হয়েছে। মাধ্যমিক দেওয়ার জন্য তার জীবনের লড়াই দেখে অবাক প্রতিবেশী থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষিকারা।

পূজার বয়স এখন ১৬ বছর। কিন্তু জীবনের মূল মন্ত্র সে এই বয়সেই বুঝে গিয়েছে। কোনও অজুহাত নয় পড়াশোনাই যেন তার ধ্যানজ্ঞান। শারীরিক অক্ষমতাকে হেলায় উড়িয়ে সে এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে । পূজা থাকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের খাদিমপুর বৈদ্যনাথ পাড়ায়। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি পরীক্ষা দিয়ে সে ইশারাতেই জানিয়ে দিয়েছে তার পরীক্ষা ভালো হয়েছে। তার বাবা অরুণ সিং প্রায় ১৫ বছর আগে দূর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। বাবা রিকশা চালাতেন। তখনও অভাবের সংসার ছিল। তবু কোনও মতে দিন কাটছিল। বাবা মারা যাওয়ার পরে মায়ের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন হয় তার। মায়ের সঙ্গে প্রায় দশ বছর আগে থেকে যোগাযোগ নেই। সেই ছোটবেলা থেকেই দিদার কাছেই মানুষ পূজা। দিদার বাড়িতে থেকেই তার পড়াশোনা। মাধ্যমিক দিলেও তার একজনও গৃহশিক্ষক ছিল না। পরিবার সূত্রে দানা যায়, মাঝেমধ্যেই গভীর ভাবনায় হারিয়ে যায় সে। সামনে বই খোলা রেখে মাঝেমধ্যেই ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। কেন এমন করে তা কেউ জানে না। কারণ সেটা ভাষায় প্রকাশ করতেও অক্ষম সে। প্রতিবেশীদের মতে, অনেক সুস্থ মানুষও মাধ্যমিক দেওয়ার পর্যায়ে পৌঁছতে পারে না। সেই জায়গায় পূজা অদম্য ইচ্ছাশক্তির এক জ্বলন্ত উদাহরণ।

পূজার স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সুলভা মন্ডল জানান, 'শরীর ভাল থাকলে কখনও স্কুল কামাই করে না সে। শিক্ষিকারা যতটুকু পেরেছে তাকে পড়িয়েছে। তাকে আলাদা করেও পড়া দেখানো হতো। স্কুলের তরফে তাকে অনেক বই বিনামূল্যে দেওয়া হয়। স্কুলের বেতনও তার জন্য মুকুব। ওর ইচ্ছা শক্তি প্রবল। তার পরীক্ষা দেওয়ার জেদ সুস্থ কোন পড়ুয়াকেও হার মানাবে।'

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

PREV
click me!

Recommended Stories

LIVE NEWS UPDATE: ডিসেম্বরে আর ঠিক কতটা শীত পড়বে? রইল আবহাওয়ার আপডেট
৭ জেলায় ঘন কুয়াশার সতর্কতা, আরও কত ডিগ্রি নামবে তাপমাত্রা? রইল আপডেট