কৃষকের হাতে ধান মজুত না থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা রয়েছে মিল মালিকদের হাতে। যদি কৃষকদের হাতে পর্যাপ্ত ধান মজুদ থাকলে একটা প্রতিযোগিতা তৈরি হতো খোলা বাজারে। ফলে বাজারে চালের দাম এত বাড়ত না।
ভাত না হলে একবেলাও চলে না বিশেষ করে বাঙালীদের। চালের দাম দিনকে দিন যেভাবে বাড়ছে তাতে খরচ সামলাতে চিন্তায় পড়েছে মধ্যবিত্তরা। কয়েক মাসের মধ্যে চালের দাম এক ধাক্কায় বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা।
213
পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় কৃষক বস্তা (এক বস্তায় ২৬ কেজি ধান) প্রতি ধান বিক্রি করেছিলেন। সেই কৃষককে আজ ৬০টাকা দামে চাল কিনে খেতে হচ্ছে । ছবিটা কিন্তু রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই একই রকম ।
313
চলতি বাজার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে ৪০ টাকার আশেপাশে ছিল পূর্ব বর্ধমানে রত্না চালের দাম । সেই চালের দাম পৌঁছে গিয়েছে ৫০ টাকাতে। ৩৭ টাকা লাল স্বর্ণ চালের দাম ।
413
মিনিকিট চালের দাম কয়েক মাস আগেও ছিল যেখানে ছিল ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকার আশপাশে। বর্তমানে সেই চালের দাম বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ৬২ টাকার কাছাকাছি।
513
দাম বৃদ্ধি নিয়ে চাল ব্যবসায়ীদের দাবি, ধানের উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণেই চালের দাম বেড়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা আশাপ্রকাশ করে বলেন, মাসখানেক পরে দাম কিছুটা কমতে পারে বাজারে নতুন চাল এলে।
613
এই দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ক্রেতারা বেশ অসন্তুষ্ট , এমন কি যিনি একটু ভালো চাল কেনেন তিনি এবার খরচ বাঁচাতে অপেক্ষাকৃত কম দামের চাল কিনে নিচ্ছেন।
713
এদিকে হঠাৎ করে চালের দাম বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন প্রশাসনও, কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করে জেলা প্রশাসন। টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। পাইকারি থেকে খুচরো সব ধরনের ব্যবসা করেন যারা তাদের সঙ্গে কথা বলে দামের হেরফেরের কারণ খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে ।
813
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দেড় মাসে সবচেয়ে দাম বেশি বেড়েছে মিনিকিট চালের । এই চালের দাম কেজি প্রতি আট থেকে দশ টাকা দাম বেড়েছে । লাল স্বর্ণ চালেরও দাম বেড়েছে । এছাড়াও বাঁশকাটি ও গোবিন্দভোগ চালের দাম যে হারে বাড়ছে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে আমজনতা।
913
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মরশুমে রাজ্যে ধান উৎপাদনের পাশাপাশি বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণ চাল রফতানি করা হয়েছে । বর্তমানে সেই তুলনায় বাংলাদেশে যাচ্ছে অনেক কম পরিমাণ চাল।
1013
সেক্ষেত্রে এইভাবে দাম বেড়ে যাওয়ার কোনও কারণ স্বাভাবিক অর্থে নেই । তাহলে কি চালের কৃত্রিম সংকটের পিছনে ফড়েদের হাত রয়েছে? খতিয়ে দেখছে খাদ্য দফতর৷
1113
তবে কৃষকদের দাবি, দাম বাড়লেও তারা কিন্তু সে তুলনায় ধানের দাম পাননি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধান চাষে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বহু কৃষক।
1213
এক প্রকার বাধ্য হয়ে অনেকেই ধান আড়তদারের কাছে বিক্রি করেছেন। তাই কৃষকের হাতে ধান মজুত না থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা রয়েছে মিল মালিকদের হাতে।
1313
যদি কৃষকদের হাতে পর্যাপ্ত ধান মজুদ থাকলে একটা প্রতিযোগিতা তৈরি হতো খোলা বাজারে। ফলে বাজারে চালের দাম এত বাড়ত না।