বাঁকুড়া দুই পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে ছাগল বিতরণের পরিকল্প নেওয়া হয়েছিল। রাজ্য প্রাণী সম্পদ দফতরের উদ্যোগে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। তাতেই কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের যুব নেতার বিরুদ্ধে।
রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের জমানায় এবার সামনে এল আরও এক দুর্নীতি। অভিযোগ উঠেছে ছাগল বিলি নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে এই রাজ্যে। আবাস যোজনা, নিয়োগ দুর্নীতি-সহ একাধিক দুর্নীতির পর এবার রাজ্যে ছাগল দুর্নীতি ঘনটাও প্রকাশ্যে এসেছে। ঘটনাস্থল বাঁকুড়া। স্থানীয়রা কাঠগড়ায় তুলেছেন তৃণমলের স্থানীয় নেতা জয়ন্ত দত্তকে। যদিও অভিযুক্ত তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন।
বাঁকুড়া দুই পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে ছাগল বিতরণের পরিকল্প নেওয়া হয়েছিল। রাজ্য প্রাণী সম্পদ দফতরের উদ্যোগে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির প্রত্যেকটির সদস্যদের হাতে ১০টি করে ছাগল তুলে দেওয়া হবে। এই তালিকায় নাম ছিল আদিবাসী অধ্যুষিত বাঁকুড়া দুই নম্বর ব্লকের ধনশিমূল আদিবাসী বীরবাহ গাঁওতার। কিন্তু এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের অভিযোগ তাদের কাছ থেকে প্রথমে ছাগলের বিনিময় কাঠমানি চাওয়া হয়েছিল।
ধনশিমূল আদিবাসী বীরবাহ গাঁওতা নামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা জানিয়েছেন তাঁরা নির্দিষ্ট দিনেই পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে গিয়েছিল ছাগল আনতে। কিনেতু সেখানে তাদের জানান হবে তাদের নামে ১০টি ছগল বরাদ্দ হলেও দেওয়া হবে মাত্র পাঁচটি ছাগল। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা জানিয়েছেন, সেখান থেকে তাদের বলা হয়েছিল বাকি পাঁচটি ছাগল পঞ্চায়েত সমিচিক কর্তাব্যক্তি ও আধিকারিকদের দেওয়া হবে। কিন্তু পরে গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে ৯টি ছাগল তুলে দেওয়া হয়। সেই সময় তাদের জানান হয় তাদের ভাগের বকি একটি ছাগল দেওয়া হবে যুব তৃণমূলের নেতা জয়ন্ত দত্তকে। একই সঙ্গে সেই সময় তাদের প্রস্তাব দেওয়া হয় তারা যদি ছাগল দিতে না চায় তাহলে তাদের তিন হাজার টাকা দিতে হবে তৃণমূল নেতাকে। আর ওই টাকা দিলে পরবর্তীকালে সরকারি প্রকল্পের সুবিধে তারা পাবে।
কিন্তু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা জানিয়েছেন তাঁদের কাছে টাকা ছিল না। তাই দরদস্তুর করে ৪০০ টাকা তারা বাধ্য হয়ে তৃণমূল নেতাকে দেন। পাল্টা ১০টি ছাগল হাতে পান। তবে এই খবর জানাজানি হতেই আসনে নামে তৃণমূল নেতা জয়ন্ত দত্ত। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। পাল্টা জানান তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই কাজ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাঁকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জানিয়েছেন এই ধরনের কোনও খবর তাঁর কাছে নেই। তবে ছাগল বিলির জন্য আর্থিক লেনদেন হয়ে থাকলে তার দায় পঞ্চায়েত সমিতির নয়। এটি একান্তভাবে সেই ব্যক্তি ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বিষয়।
আরও পড়ুনঃ
বীরভূমে বিক্ষোভ 'দিদির দূত' শতাব্দী রায়কে ঘিরে, দেবাংশু ভট্টাচার্যের অবস্থাও তথৈবচ
তৃণমূল নেতার হোটেলে ম্যারাথন তল্লাশি, ৩৫ ঘণ্টা পর হোটেল ছাড়ল আয়কর দফতর