
নদীয়া জেলার শান্তিপুর ব্লকের নবলা পঞ্চায়েতের প্রমোদপল্লি এলাকায় এসআইআর ফর্ম বিতরণকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পেশায় টোটো চালক গোবিন্দ রায় অভিযোগ করেছেন, তাঁদের পরিবারের মোট পাঁচ সদস্যের জায়গায় ভুলভাবে ছয়টি এনিউমারেশন ফর্ম দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত ফর্মটিতে নাম রয়েছে যেই ব্যক্তির—শান্তনু রায়—তাকে পরিবারের কেউই চেনেন না।
গোবিন্দ রায় জানান, বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা সুভাষচন্দ্র রায়, স্ত্রী ও ১১ বছরের কন্যা। মা বহু বছর আগেই প্রয়াত। দুই ভাইয়ের পরিবার-সহ মোট পাঁচটি ফর্ম পাওয়ার কথা থাকলেও হঠাৎ একটি অতিরিক্ত ফর্ম হাতে আসে। তিনি অভিযোগ করেন, বুথ লেভেল অফিসার (BLO) আশা মণ্ডল জোর করে সেই ফর্মটি জমা নিতে চান এবং জানান—শান্তনুর বাবার নামও ‘সুভাষচন্দ্র রায়’, তাই ফর্মটি এই বাড়িতেই দেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বৃদ্ধ সুভাষচন্দ্র রায় জানান, শান্তনু নামে কাউকে তিনি কোনও দিন দেখেননি। এতে সামাজিকভাবে পরিবারের অসম্মান হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁর। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এতে ভবিষ্যতে সম্পত্তি বা পরিচয় সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি হতে পারে।
গোবিন্দ রায় নিজে বিজেপির BLA–2 হওয়ায় তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তাঁর বক্তব্য, “ভুল ফর্ম জমা দিলে ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তাই বিডিওর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত না হয়ে আমি কোনও ফর্ম ফেরত দেব না।” স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিজেপির সাগরী দাসও মনে করছেন, এমন ত্রুটি আইনি জটিলতার কারণ হতে পারে। তবে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান সুদীপ প্রামানিক বলছেন, “এটা সাধারণ ভুল। প্রশাসন দেখলে ঠিক হয়ে যাবে, অযথা রাজনীতি করার কিছু নেই।”
এই ঘটনাকে ঘিরে মূল প্রশ্ন উঠছে—এসআইআর ফর্ম বিতরণের আগে কি যথাযথ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে? একই বাবার নাম থাকলেই কি অচেনা ব্যক্তির নথি অন্য বাড়িতে তুলে দেওয়া হবে? দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।