গীতার এমন ঘোষণা শুনে স্বাভাবিকভাবেই হতবাক হয়ে যান সিপিএম কর্মী ও সমর্থকরা। কিন্তু জয়ী হয়েও কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি? প্রশ্ন উঠছিল বিভিন্ন মহলে।
ভোটে জিততেই দলবদলের সিদ্ধান্ত। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল কাটোয়ায়। কাটোয়া ১ পঞ্চায়েতে জয়ী হন সিপিআইএম প্রার্থী গীতা হাঁসদা। জয়ের পরই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে বাম সমর্থকেরা। গীতা হাঁসদাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন সকলেই। এমন সময় আচমকাই দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের লোকজন বিশাল চিৎকার শুরু করেছে গীতা হাঁসদা-র নামে। ঘটনায় স্বভাবতই অবাক হয় বাম কর্মী-সমর্থকরা। এরপরই জানা যায় সিপিআইএম ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন গীতা হাঁসদা। মিডিয়ার মুখোমুখি হয়েও তিনি জানান গণনাকেন্দ্রের মধ্যেই তাঁর জয়ের ঘোষণা হতেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন তিনি।
গীতার এমন ঘোষণা শুনে স্বাভাবিকভাবেই হতবাক হয়ে যান সিপিএম কর্মী ও সমর্থকরা। কিন্তু জয়ী হয়েও কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি? প্রশ্ন উঠছিল বিভিন্ন মহলে। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে চাউর হয় আরও একটি খবর, জানা যায় দলবদলের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে গীতাকে। এক বিশিষ্ট সিপিএম নেতা এক টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলকে জানান, গীতার শিশুপুত্রকে অপহরণ করে তাঁকে জোর করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। যদিও গীতা জানিয়েছে তৃণমূলের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণেই তৃণমূল ছেড়েছিলেন তিনি, তাই আবার দলে ফিরে এলেন। কিন্তু কিচ্ছুক্ষণ পড়েই জানা যায় অন্য এক গল্প। কালনার সিপিএম নেতা আলিম শেখ সাফ জানান, শিশুপুত্রকে অপহরণের কোনও ঘটনা ঘটেনি, গীতার সঙ্গেও কথা হয়েছে, গীতা এবং তাঁর পরিবার বহুদিন ধরেই এলাকায় সিপিএম-এর কর্মী ও সমর্থক। কিন্তু, কী কারণে এমনভাবে দলবদল করেছেন গীতা তা নিয়ে কোনও সদর্থক উত্তর তাঁর কাছে নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। মোটের উপর ঠিক কী কারণে এই দলবদলের সিদ্ধান্ত তা স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি।
গীতা সিপিএম-এর প্রতীকচিহ্নে কালনার কাকুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়াতের ১০৭ নম্বর বুথ থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। কাঁকুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১৮টি আসন- এরমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ১৭টি-তেই জয়ী হয়েছে, আর একটিতে জয়ী হয়েছে সিপিএম, কিন্তু, গীতার জয় করা এই আসনটিও এখন তৃণমূলের কাছে চলে গিয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা চঞ্চল সিংহরায় জানিয়েছেন, কাঁকুড়িয়ায় ১৮টি আসনের মধ্যে ১৭টি পেয়েছে তৃণমূল, ১টি সিপিএম, এবার গীতার মনে হয়েছে ১টি আসন নিয়ে সিপিএম কিছুই করতে পারবে না, তাই দল বদল করে নিয়েছেন। গীতা অবশ্য জানিয়েছেন, কাঁকুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সব আসনই প্রায় পেয়েছে তৃণমূল, ১টি আসন সিপিএম-এর। এই ১টি আসন দিয়ে বিরোধী দল হয়ে এলাকার কোনও উন্নয়ন করা সম্ভব নয়, তাই তিনি দল বদল করেছেন, তবে, দলবদলের পিছনে আরও কারণ রয়েছে, সেগুলো এখনই তিনি কাউকে বলতে পারবেন না।