আষাঢ় মাসের অম্বুবাচীতে ধরিত্রীমাতা ঋতুমতী হন। এই সময় মাঙ্গলিক কাজ, দেবী দর্শন, পুজো-পাঠ নিষিদ্ধ। ভুল করে কিছু কাজ করলে নেমে আসতে পারে বিপদ।

বাংলা আষাঢ় মাসের সাত তারিখ থেকে শুরু হয় অম্বুবাচী। যা মূলত ধরিত্রীমাতার রজঃস্বসা দশার প্রতীক। এই সময়টা প্রকৃতি ও দেবী মাতৃশক্তির বিশ্রামের কাল বলে বিবেচিত হয়। শাস্ত্র মতে, আষাঢ় মাসের মৃগশিরা নক্ষত্রের তৃতীয় পদ শেষ হলে ধরিত্রীমাতা ঋতুমতী হন। এই সময় সকল মাঙ্গলিক কাজ বন্ধ থাকে। দেবী দর্শনও থাকে নিষিদ্ধ। বন্ধ রাখা হয় কামাক্ষ্যা মন্দিরের দ্বার। পুজো পাঠ ও সকল শুভ কাজ থাকে নিষিদ্ধ। এই সময় ভুলেও এই কয়ট কাজ করবেন না। এই ভুলে জীবনে নেমে আসবে বড়সড় বিপদ।

এই সময় ধরিত্রীমাতার ঋতুমতী অবস্থায় থাকেন। সে কারণে ভূমি কর্ষণ অর্থাৎ চাষাবাদ বা গাছ রোপন করবেন না। এতে শস্যানাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এই সময় গৃহপ্রবেশ, বিবাহ, নামকরণ, উপনয়ন, অন্নপ্রাশন ইত্যাদি শুভ কাজ করবেন না। এতে পরিবারে অশান্তির সম্ভাবনা বাড়বে।

এই সময় পুজো পাঠ বন্ধ থাকে। তবে, অনেক সময় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা এই সময় পড়ে। জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা পালিত হয় কারণ তা নিত্যকর্ম। কিন্তু, কাম্য কর্ম যেমন মানতের পুজো, সংকল্পপুজো, নবগ্রহপুজো ইত্যাদি এ সময় বারণ হয়।

যারা কালী, দুর্গা, জগদ্ধাত্রী, চণ্ডী, শীতলা ইত্যাদি দেবীর পুজোর করেন, তাঁদের মূর্তি বা পট লাল কাপড়ে ঢেকে রাখতে হয়। এই সময় দেবী মাতৃশক্তি বিশ্রামে থাকেন। তাই স্পর্শ, স্নান, সাজানো, নতুন বস্ত্র প্রদাশ নিষিদ্ধ করা থাকে।

অম্বুবাচীর সময় কোনও মন্ত্রপাঠ নয়। তেমনই ধূপ প্রদীপ জ্বালাবেন না। এই সময় দেবীকে স্পর্শ করবেন না।

এই সময় তুলসী গাছ স্পর্শ করবেন না। এই সময় যারা তান্ত্রিক বা শাক্তমন্ত্রে দীক্ষিত, তারা জপ করতে পারেন। কারণ জপে কোনও দোষ নেই।

এই সময় গুরুপুজো অব্যাহত থাকে। গুরু মাতা হলেও পুজোয় কোনও বাধা নেই। এই সময় গুরু পুজোয় ভালো লাভ হবে।

কী কী করবেন?

তেমনই এই সময় ইষ্টমন্ত্র জপ করতে পারেন। অম্বুবাচীর তিন দিন ও চতুর্থ দিন এই জপ করলে জীবনে শান্তি আসবে।

কামাখ্যা মন্দিরের সৌভাগ্যকুণ্ডের পশ্চিম পারে স্নান, তর্পন ও গণেশের পুজো করলে জীবনের সকল বিপদ থেকে মেলে মুক্তি।

এই সময় ইষ্টমন্ত্রের বিধি মেনে অগ্নিস্থাপন করলে সিদ্ধিলাভ হয়। অর্থ, যশ ও শক্তি অর্জন করতে পারবেন।

অম্বুবাচীর সময় মধ্যরাতে ধ্যানস্থ হয়ে মা কামাখ্যার নিকট গোপন মনে প্রার্থনা করলে মনের সকল ইচ্ছা পূরণ হবে।

এই সময় আম ও দুখ খান। এতে সর্পভয় এক বছর দূর থাকে। মেনে চলুন এই সকল টোটকা।

শাস্ত্র মতে, অম্বুবাচীর কটা দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় পুজো-পাঠ বন্ধ রাখুন। তেমনই দেবীকে স্পর্শ করবেন না। তবে, এই সময় এই কয়টি কাজ করলেও মিলবে উপকার।