সংক্ষিপ্ত
দেবাদিদেব মহাদেব এবং কুবেরের কথোপকথনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন পার্বতী-পুত্র গণেশও। জেনে নিন সেই অজানা পৌরাণিক কাহিনী।
কুবের ছিলেন যক্ষের রাজা। যক্ষ একটি মধ্যবর্তী জীবন, এই জীবন ইহকাল বা পরকাল, উভয় কালেই সম্পূর্ণরূপে উপস্থিত নয়। একবার লঙ্কার রাজা রাবণ ভগবান কুবেরকে লঙ্কা থেকে বিতাড়িত করেন, তখন কুবেরকে সেখান থেকে মূল ভূখণ্ডে চলে যেতে হয়। নিজের রাজ্য ও প্রজা হারানোর হতাশায় কুবের ভগবান শিবের উপাসনা শুরু করেন এবং শিবের ভক্ত হয়ে ওঠেন।
-
ভগবান শিব দয়া করে কুবেরকে একটি রাজ্য এবং প্রচুর ধনসম্পদ দিয়েছিলেন এবং এইভাবেই কুবের বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়ে ওঠেন। এরপরেই কুবের শিবের পরম ভক্ত হয়ে ওঠেন। কিন্তু, কুবের অনুভব করতে লাগলেন যে, তিনিই শিবের সর্বশ্রেষ্ঠ ভক্ত, কারণ তিনি শিবকে অনেক কিছু দিয়েছিলেন। উলটোদিকে, ভগবান শিব তাঁর দেওয়া প্রসাদ থেকে শুধুমাত্র বিভূতি ছাড়া আর কিছুই স্পর্শ করেননি। কিন্তু কুবের নিজেকে মহান ভাবতে শুরু করেন, কারণ, তিনি শিবকে নৈবেদ্য হিসাবে অনেক কিছু দিতেন।
একবার কুবের শিবের কাছে গিয়ে বললেন, “আমি আপনার জন্য কি করতে পারি? আমি আপনার জন্য কিছু করতে চাই।” শিব তাঁকে বললেন, “তুমি আমার জন্য কী করতে পারবে? কিছুই না! কারণ আমার কিচ্ছু লাগবে না। আমি একদম ঠিক আছি! কিন্তু আমার ছেলে…” এবার তিনি গণপতির দিকে ইশারা করে বললেন, "এই ছেলে সবসময় ক্ষুধার্ত থাকে। ওকে ভালো করে কিছু খাওয়াও।"
-
কুবের বললেন, “এ তো খুবই সহজ কাজ।” এর পর গণপতি কুবেরের সঙ্গে গেলেন। কুবের গণপতিকে খাবার খাওয়াতে লাগলেন এবং গণেশ সবকিছু খেতে থাকলেন। কুবের শতাধিক রাঁধুনিকে কাজে লাগালেন এবং প্রচুর পরিমাণে খাবার রান্না করাতে লাগলেন। তারা এই সমস্ত খাবার গণপতিকে পরিবেশন করলেন এবং সিদ্ধিদাতা সেই সব খাবার খেতে থাকলেন।
গণেশকে সবকিছু খেয়ে নিতে দেখে কুবেরের দুশ্চিন্তা বাড়ল। তিনি বললেন, “ আরে থামো! এত খেতে থাকলে তো তোমার পেট ফেটে যাবে!” তখন গণপতি বললেন, “পেট নিয়ে চিন্তা ক'রো না। দেখছ না… আমি একটা সাপকে কোমরে বেল্টের মতো বেঁধে রেখেছি। তাই আমার পেট নিয়ে চিন্তা করো না। আমি খুব ক্ষুধার্ত। তুমিই তো বলেছিলে যে, তুমি আমার ক্ষুধা মেটাতে পারবে।”
কুবের নিজের সমস্ত ধন-সম্পদ ব্যয় করে ফেললেন। অন্যান্য জগত থেকেও খাবার আনিয়ে তিনি গণপতির খিদে মেটানোর চেষ্টা করতে লাগলেন। কিন্তু, সমস্ত খাবার খেয়ে শেষ করে ফেলেও গণপতি বললেন, “আমি এখনও ক্ষুধার্ত, আমার খাবার কোথায়?” তখন কুবের নিজের দূরদর্শিতার অভাব বুঝতে পারলেন। তিনি ভগবান শিবের সামনে প্রণাম করে বললেন, “আমি বুঝতে পেরেছি, আমার সমস্ত ধন-সম্পত্তি আপনার সামনে সামান্য খড়ের থেকেও ক্ষুদ্র নগণ্য। আপনি আমাকে যা দিয়েছেন, তার মাত্র সামান্য কিছু অংশ আপনাকে অর্পণ করে আমি নিজেকে সবচেয়ে বড় ভক্ত ভেবে ফেলেছিলাম। আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।"
এই ঘটনার পর থেকেই দেবতা কুবের ভগবান শিবের অনুগত ভক্ত হয়ে যান।
-
শিব পুরাণে ১০টি ইচ্ছাপূরণের রহস্য! মহাশিবরাত্রিতে এই উপকরণে তৈরি করুন শিবলিঙ্গ, মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবে অতি শীঘ্রই
Festivals In March: মহাশিবরাত্রি থেকে দোল পূর্ণিমা, মার্চ মাসে একের পর এক পবিত্র উৎসব! দেখুন তালিকা
Maha Shivratri: মহা শিবরাত্রিতে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে নন্দী-র, কেন শিবপূজার সময় ষাঁড়ের পুজো করা জরুরি?