সংক্ষিপ্ত
ধনতেরাসে অনেকেই সোনা কেনেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না কেন এটি প্রচলিত। এর পিছনে রয়েছে একটি পৌরানিক গল্প।
ধনতেরাসে সোনা কেনার বিজ্ঞাপন জোরদার হয়েছে। সোনার দোকানেও লম্বা লাইন পড়ে। সকলেই সোনা কিনতে চান। কিন্তু আপনি জানেন কি, ধনতেরাসে সোনা কেনার পিছনে রয়েছে একটি পৌরানিক আখ্যান। আসুন সেই পৌরানিক গল্পই আজ আপনাদের বলি।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, হিমা নামে এক রাজার ষোল বছরের একটি পুত্র ছিল বলে মনে করা হয়। রাজা তাকে একটি মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু জ্যোতিষীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে রাজকুমার তার বিয়ের চতুর্থ দিনে সাপের কামড়ে মারা যাবে। এই ভবিষ্যৎবাণীতে রাজার রাতের ঘুম ছুটে যায়।
নববধূ অত্যান্ত দূরদর্শী এক বাালিকা। তিনি তাঁর স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। যেদিন জ্যোতিষীরা ছেলেটির মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সেদিন নববধূ রাজপ্রাসাদের সমস্ত গহনা ও সোনা সংগ্রহ করে মূল ফটকের সামনে রেখেছিলেন। তিনি রাজকুমারকে না ঘুমানোর পরামর্শ দিলেন এবং তার সাথে বসে কিছু মজার গল্প বললেন এবং কিছু সুরেলা গান গাইলেন।
ভগবান যম একদম নির্ধারিত সময়েই রাজকুমারের প্রাণ নিতে রাজপ্রাসাদের বাইরে পৌঁছে যান। একটি সাপের ছদ্মবেশ ধারণ করেন। কিন্তু প্রধান ফটক দিয়ে তিনি রাজপ্রাসাদের অন্দরে ঢোকার সময়ই বিপত্তি বাঁধে। গয়না আর মূল্যবান জিনিসের স্তূপে প্রাসাদের গেট বন্ধ হয়ে যায়। সোনার প্রবল চমকে সাপের চোখ ধাঁধিয়ে যায়। প্রাসাদে আর ঢুকতে পারেননি সাপটি। অন্যদিকে মেয়েটির সুরেলা কণ্ঠস্বর যমরাজকে মন্ত্রমুগ্ধ করে।
রাজপুত্রের মৃত্যুর জন্য গ্রহ দ্বারা নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয় এবং ভগবান যমকে সর্পের ছদ্মবেশে রাজকুমারের জীবন না নিয়েই ফিরে যেতে হয়। এইভাবে নববধূ, তার চতুর কৌশল এবং প্রভুর প্রতি ভক্তি সহ, রাজকুমারের জীবন সফলভাবে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিল।
কীভাবে রাজপুত্র মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন সেই গল্প ধনতেরাসের দিনে সোনা কেনার ঐতিহ্যকে অনুপ্রাণিত করেছিল। তাই ধনতেরাসের দিন পূজায় সোনা রাখা হয় এবং যম দীপ নামে পরিচিত একটি প্রদীপ যম ও দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেতে প্রধান ফটকের সামনে জ্বালানো হয়।
নিয়ম অনুযায়ী ধনতেরাসের দিনে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র কেনে। যারমধ্যে থাকে বাসনপত্র। বিশ্বাস করা হয় এটি করলে দেবী লক্ষ্মীর আশির্বাদ পাওয়া যায়। তবে ধনতেরাসের দিন সোনা বা রূপের মত ধাতু কেনা শ্রেয়। অ্যালুমিনিয়াম বা স্টিলের বাসন কিনতে পারেন। কিন্তু ভুলেও কাঁচ বা চিনা মাটির বাসন কিনবেন না। তাতে কুপিত হন দেবী লক্ষী।