সংক্ষিপ্ত

  •  শরদিন্দু মানেই ব্যোমকেশ নাকি ব্যোমকেশ বক্সী মানেই শরদিন্দু
  •  গোয়েন্দা সাহিত্যে যার লেখনিতে প্রাণ পেয়েছেন তিনি হলেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
  • চিত্রনাট্যকার হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
  • ১৯৩৮ সালেই বম্বে টকিজে চিত্রনাট্যকার হিসেবে পথচলা শুরু

সাহিত্যিক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় এই নামটার সঙ্গেই যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ব্যোমকেশ বক্সী। শরদিন্দু মানেই ব্যোমকেশ নাকি ব্যোমকেশ বক্সী মানেই শরদিন্দু। গোয়েন্দা সাহিত্যে যার লেখনিতে প্রাণ পেয়েছেন তিনি হলেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। গোয়েন্দা সাহিত্যে আজও জনপ্রিয় চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সী। সালটা ১৮৯৯। আজকের বিশেষ দিনেই জন্ম ব্যোমকেশ স্রষ্টা শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের। 

 

সাহিত্যিক হিসেবে পথচলার পাশাপাশি চিত্রনাট্যকার হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর কলকাতার বরাহনগরের কুঠিঘাট এলাকায় জন্ম শরদিন্দুর। বয়স তখন মাত্র ২০, ১৯১৫ সালে বিদ্যাসাগর কলেজে পড়াশোনা চলাকালীন প্রথম সাহিত্য প্রকাশিত হয় শরদিন্দুর। কলকাতার হোস্টেল, মেসেই কেটেছে তার দিন। কলেজ জীবনে অজিতই  ছিল তার সাহিত্যচর্চার সঙ্গী। ১৯১৮ -১৯২০-র শরদিন্দুর ডায়েরি থেকেই জানা গেছে, কীভাবে সদ্য যুবকের মনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল সাহিত্যচর্চা। 

আরও পড়ুন-ফের করোনার ভয়ঙ্কর দাপট বাংলায় ,সস্ত্রীক কোভিড ১৯-আক্রান্ত টলি অভিনেতা ভরত কল...

একদিকে সাহিত্যচর্চা অন্যদিকে বিয়ের তোড়জোড়। পাত্রীও ঠিক ছিল মুঙ্গেরে। পাটনা থেকে আইন পাশ করে বাবার জুনিয়র হিসেবে যোগ দিলেও নিজের কক্ষপথটা যেন বারবার স্পষ্ট হতে থাকল শরদিন্দুর। ওকালতি জীবনে বসুমতীতে ছাপা হল প্রথম গল্প উড়ো মেঘ। ধীরে ধীরে প্রবাসী, ভারতবর্ষ তার লেখা নিতে থাকল। তারপরই ওকালতি থেকে হাত তুলে নিলেন শরদিন্দু।  লেখকের বাবাও বুঝে গিয়েছিলেন এই পথ শরদিন্দুর নয়, সাহিত্যই তার সাধনা। তাতে রোজগার কম হলেও মিলবে শান্তি।

আরও পড়ুন-বছরে আয় মাত্র ১০ লক্ষ, নেই নিজের বাড়ি-জমি, জেনে নিন BJP তারকা প্রার্থী তনুশ্রীর সম্পত্তির পরিমাণ...

সালটা ১৯৩২ । শরদিন্দুর লেখনীতে আত্মপ্রকাশ ঘটে 'ব্যোমকেশ বক্সী'র। আষাঢ়, অঘ্রান আর মাঘের 'বসুমতী 'তে বেরোল পরপর তিনটি গল্প। 'পথের কাঁটা', 'সীমন্তহীরা' আর 'সত্যান্বেষী'। পরের বছর এর সঙ্গে 'মাকড়সার রস' গল্পটি যুক্ত হয়ে প্রকাশ পেল ব্যোমকেশের প্রথম বই, 'ব্যোমকেশের ডায়েরি'। অজিত, অতুল, হ্যারিসন রোডের মেস বাংলা সাহিত্যে চিরজীবী হয়ে গেল।সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি শরদিন্দু মন দিয়েছিলেন চিত্রনাট্যকারের কাজেও । ১৯৩৮ সালেই 'বম্বে টকিজ' চিত্রনাট্যকার হিসেবে পথচলা শুরু। 'ভাবী', 'বচন', 'দূর্গা', 'কঙ্গন', 'নবজীবন', 'আজাদ', 'পুনর্মিলন'-বম্বে টকিজে এই সাতটি ছবিরই গল্প লিখেছিলেন শরদিন্দু । তারপর সত্যজিৎ রায়ের 'চিড়িয়াখানা', 'ঝিন্দের বন্দি', তরুণ মজুমদারের 'দাদার কীর্তি'-র মতো বিখ্যাত সিনেমার গল্প তার লেখনী। 

তারপর  সিনেমার কাজ ছেড়ে সাহিত্যচর্চার মাধ্যমেই দিন কাটান শরদিন্দু। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলির মধ্যে অন্যতম হল,  'কুমারসম্ভবের কবি', 'তুঙ্গভদ্রার তীরে' 'কালের মন্দিরা', 'গৌড়মল্লার', 'তুমি সন্ধ্যার মেঘ',। 'জাতিস্মর', 'ব্যুমেরাং', 'চুয়াচন্দন'-এর মতো গল্পসংকলন। তবে, সাহিত্যিকের সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সী, যা আজও গেথে রয়েছে বাঙালির মননে।'তুঙ্গভদ্রার তীরে'র জন্য পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার। সাহিত্যিক-চিত্রনাট্যকারের পাশাপাশি অভিনয়ও করেছেন শরদিন্দু। ১৯৩৬ সালে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে রেডিওয় লেখকদের নিয়ে 'বৈকুন্ঠের খাতা'-য় কেদারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এছাড়াও বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সঙ্গেও অভিনয় করেছিলেন।