সংক্ষিপ্ত
কোভিড-১৯ রোগ সম্পর্কে সব তথ্য এখনও অজানা বিজ্ঞানীদের
রোজই নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে
সাধারণ উপসর্গগুলির বাইরে আরও বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে
এবার ডাক্তাররা বলছেন হাতের দিকে নজর রাখতে
গত ডিসেম্বরে চিনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস মহামারির উদ্ভব হয়েছিল। তারপর থেকে পাঁচ মাস-এর বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, এখনও এই নতুন রোগ সম্পর্কে সব তথ্য জেনে উঠতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। প্রায় রোজই নতুন তথ্য উঠে আসছে। এতদিন বলা হত, করোনাভাইরাসের অধিকাংশ রোগীই অ্যাসিম্পটমেটিক বা উপসর্গহীন। তবে এখন নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে প্রাথমিক উপসর্গগুলির বাইরে আরও বেশ কিছু লক্ষণ দেখে করোনা রোগীকে চিহ্নিত করা যেতে পারে। এই তালিকায় নবতম সংযোজন হাতে চিনচিনে ব্যথা।
জানা গিয়েছে, ব্রিটেনের কিছু কোভিড-১৯ রোগীর ক্ষেত্রে প্রথম এই বিষয় লক্ষ্যিত হয়েছে। তাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, তাদের হাতে একটা একটা ঘ্যানঘেনে অস্বস্তিকর ব্যথা হচ্ছে। আরেকদল আবার জানিয়েছেন, তাদের হাতের ত্বক স্পর্শ করলেই 'বৈদ্যুতিক শক' লাগার মতো অনুভূতি হচ্ছে। তাদের দেহ ঝনঝন করে উঠছে। আবার একজন রোগী জানিয়েছেন তাঁর পায়েও একই রকম চিনচিনে ব্যথা রয়েছে।
এই নতুন লক্ষণ কে বলা হচ্ছে প্যারাসথেসিয়া। এতে ত্বকে পিন বা সূঁচ ফোটার মতো অনুভূতি হয়। যারা ডায়াবেটিস আক্রান্ত এবং যারা অটোইমিউনড তাদের ক্ষেত্রেই ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রায়শই স্নায়ুর উপর চাপ বা দুর্বল রক্ত সঞ্চালনের কারণেই সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।
এই বিষয়ে নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই ডাউনটাউনের 'সংক্রমণ রোধ ও নিয়ন্ত্রণ' কেন্দ্রের ডিরেক্টর ডাক্তার ওয়ালিদ জাভেদ জানিয়েছেন, সংক্রমণের রুখতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া থেকেই এই লক্ষণগুলি দেখা দিচ্ছে। সোমবার ডাক্তার জাভেদ জানিয়েছেন, 'যা ঘটছে, তা প্রতিরোধ ক্ষমতার বহিপ্রকাশ। ভাইরাসের উপস্থিতিতে আমাদের প্রতিরোধক কোষগুলি সক্রিয় হয়ে যায়। সারা শরীরে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক প্রকাশিত হয়। তার জন্যই এরকম ঝনঝনে বা চিনচিনে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। আমাদের অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া যখন কার্যকর হয় তখম মানুষ বিভিন্ন ধরণের সংবেদন অনুভব করতে পারে। আমি এর আগে অন্যান্য অসুস্থতার ক্ষেত্রেও একইরকম অভিজ্ঞতার কথা শুনেছি'।
প্রাথমিকভাবে, হু, সিডিসি বা আইসিএমআর-এর মতো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংস্থাগুলি জানিয়েছিল কোভিড-১৯ রোগের লক্ষণ হল, জ্বর, শুকনো কাশি, পেশীতে ব্যথা, শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, গলা ব্যথা এবং শ্বাসকষ্ট। পরে এই তালিকায় জুড়েছিল স্বাদ ও গন্ধের অনুভুতি হারানো, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া। তারপর 'কোভিড টো' অর্থাৎ পায়ের আঙুল রক্ত জমে ফুলে যাওয়াকেও করোনার সম্ভাব্য উপসর্গ বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। আবার বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কাওয়াসাকি ডিজিজ-এর মতো ত্বকের অবস্থাও কোভিড-১৯'এর লক্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন অনেকে। এবার আবার আরও এক নতুন লক্ষণ সামনে এল।