কম আয় হলেও আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন কেন? রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কারণ
কিছু কিছু ক্ষেত্রে আয়করের সীমার মধ্যে না থাকলেও আয়কর রিটার্ন দাখিল করা প্রয়োজন। কম আয় হলেও, আইটিআর দাখিল করলে ঋণ পাওয়া, ভিসার আবেদন ইত্যাদিতে সুবিধা হয়।

সকল আয়কারী ব্যক্তির বার্ষিক আয় সরকারের কাছে জমা দেওয়া উচিত। একে “আয়কর রিটার্ন (ITR)” দাখিল বলা হয়। অনেকে “আমি করের সীমার মধ্যেই আছি” ভেবে এড়িয়ে যান। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আয়কর দাখিল বাধ্যতামূলক।
- ভারতীয় আয়কর আইনের অধীনে নিম্নলিখিত সীমা অতিক্রম করলে, আইটিআর দাখিল বাধ্যতামূলক:
- সাধারণ শ্রেণি (৬০ বছরের কম): বার্ষিক ₹২,৫০,০০০ এর বেশি আয়
- বয়স্ক নাগরিক (৬০-৮০ বছর): ₹৩,০০,০০০ এর বেশি আয়
- অতি বয়স্ক নাগরিক (৮০ এর বেশি): ₹৫,০০,০০০ এর বেশি আয়
- নতুন কর ব্যবস্থায়: ₹৩,০০,০০০ এর বেশি (সকলের জন্য)
TDS (Tax Deducted at Source) কর্তনকারীদের জন্য
ব্যাংক সুদ, FD, বেতন ইত্যাদিতে TDS কর্তন করা হলে, সেই টাকা ফেরত পেতে আইটিআর দাখিল জরুরি।
ব্যবসা/স্ব-উদ্যোগীদের জন্য
ব্যবসা, স্ব-উদ্যোগী (ফ্রিল্যান্সিং, পরামর্শ) ব্যক্তিদের, যে কোন আয়ের জন্য আইটিআর দাখিল করতে হবে।
বিদেশী সম্পত্তি বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলে
বিদেশে সম্পত্তি বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলে আইটিআর দাখিল করতে হবে।
১ কোটি টাকার বেশি ব্যাংক লেনদেন
কোন ব্যক্তি তার সঞ্চয় বা ওভারড্রাফ্ট অ্যাকাউন্টে ₹১ কোটি বা তার বেশি লেনদেন করলে, আইটিআর দাখিল করতে হবে।
বিদেশ ভ্রমণের খরচ ₹২ লাখের বেশি
কোন ব্যক্তি বা তার পক্ষ থেকে কেউ বিদেশ ভ্রমণে ₹২ লাখ বা তার বেশি খরচ করলে, আইটিআর দাখিল জরুরি।
বিদ্যুৎ বিল ₹১ লাখের বেশি
কোন ব্যক্তির বাড়ির বিদ্যুৎ বিল বছরে ₹১ লাখ ছাড়িয়ে গেলে, তাকেও আইটিআর দাখিল করতে হবে।
- বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইটিআর দাখিল গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণপত্র হিসেবে কাজ করে:
- ব্যাংক ঋণ (গৃহ ঋণ, ব্যক্তিগত ঋণ, ব্যবসায়িক ঋণ) পেতে
- ভিসার আবেদন
- উচ্চ মূল্যের বিনিয়োগ (শেয়ার, জমি, অর্থ লেনদেন)
- সঠিক আয়ের প্রমাণ (Income Proof)
- TDS ফেরত (Refund) পেতে
- আপনার আয় ₹২.৫ লাখের মধ্যে হলে, আইনত কর দাখিল বাধ্যতামূলক নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে আইটিআর দাখিলের মাধ্যমে সুবিধা পাওয়া যায়:
- ব্যাংকে TDS কর্তন ছাড়াই Form 15G/H ব্যবহার করতে পারবেন
- বয়স্ক, ছাত্র, নাবালকদের বিনিয়োগের আয় দেখাতে পারবেন
- ভবিষ্যতের ঋণের জন্য প্রমাণপত্র বা আইটিআর ইতিহাস তৈরি হবে
আইটিআর দাখিল কেবল কর দেওয়াই নয়, একজন ব্যক্তির আর্থিক নিয়মানুবর্তিতা এবং সামাজিক বিশ্বাসযোগ্যতার প্রতীক। আয়করের সীমা অতিক্রম করলে অবশ্যই দাখিল করতে হবে। এছাড়া, আপনার অর্থ লেনদেন, ভিসার আবেদন, ঋণের আবেদনে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণপত্র হিসেবে কাজ করে। কম আয় হলেও আয়কর রিটার্ন দাখিল করুন। এতে শুধু সুবিধাই, কোন অসুবিধা নেই!

