মামলায় দাবি করা হয়েছে যে গুগল ব্যবহারকারীদের অনুমতি ছাড়াই জিমেইল, চ্যাট এবং মিট থেকে ডেটা অ্যাক্সেস করেছে। এই ঘটনাটি এআই-এর যুগে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে এবং গুগলকে আদালতের নোটিশের সম্মুখীন করেছে।

Google Gemini AI: বিশ্বব্যাপী দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জনকারী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। কোম্পানিগুলি যখন এআই-এর মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং খরচ কমানোর জন্য কাজ করছে, তখন টেক জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে তার এআই সহকারী "জেমিনি"-এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ট্র্যাক করার অভিযোগ উঠেছে।

পুরো বিষয়টি কী?

ক্যালিফোর্নিয়ার সান জোসে ফেডারেল কোর্টে দায়ের করা একটি মামলায় দাবি করা হয়েছে যে গুগল গোপনে জেমিনি এআই সহকারী ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত যোগাযোগের ডেটা - যেমন জিমেইল, চ্যাট এবং মিট - ট্র্যাক করেছে।

হলফনামায় বলা হয়েছে যে ব্যবহারকারীদের আগে এই প্ল্যাটফর্মগুলিতে এআই প্রোগ্রাম "চালু" করার বিকল্প দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ২০২৫ সালের অক্টোবরে, অ্যালফাবেট ইনকর্পোরেটেড, কোনও নোটিশ ছাড়াই, এই সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে জেমিনিকে ডিফল্টভাবে চালু করে দেয়। এই প্রক্রিয়ায়, ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ডেটা - ইমেল, সংযুক্তি এবং চ্যাট ইতিহাস - তাদের অনুমতি ছাড়াই অ্যাক্সেস করা হয়েছিল।

ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার জন্য হুমকি

আবেদনে আরও বলা হয়েছে যে গুগল ব্যবহারকারীদের জেমিনি "বন্ধ" করার বিকল্পটি দিলেও, এই বিকল্পটি গোপনীয়তা সেটিংসের গভীরে লুকিয়ে রয়েছে, যা সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাক্সেস করা কঠিন। ব্যবহারকারী যদি ম্যানুয়ালি টুলটি নিষ্ক্রিয় না করেন, তাহলে গুগল সকল ইমেল এবং সংযুক্তিতে অ্যাক্সেস রাখতে পারবে।

আবেদনকারীদের অভিযোগ, গুগল ১৯৬৭ সালের ক্যালিফোর্নিয়া ইনভেসন অফ প্রাইভেসি অ্যাক্ট লঙ্ঘন করেছে, যা সকল পক্ষের সম্মতি ছাড়া ব্যক্তিগত যোগাযোগ রেকর্ডিং বা অ্যাক্সেস নিষিদ্ধ করে।

জেমিনি এআই কী?

জেমিনি হল গুগলের উন্নত এআই সহকারী, যা চ্যাটিং, ইমেল রচনা, মিটিং সারাংশ এবং ডেটা বিশ্লেষণের মতো কাজের জন্য তৈরি। কোম্পানি দাবি করেছে যে জেমিনি "ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য" তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু এখন এটি গোপনীয়তা লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে। আদালত গুগলকে নোটিশ জারি করে বিষয়টির ব্যাখ্যা চেয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে, এই মামলাটি কেবল গুগলের সুনামের জন্য একটি বড় আঘাত হবে না বরং বিশ্বব্যাপী এআই ডেটা গোপনীয়তা নিয়ে একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।

এআই মানুষের কাজ সহজ করে তুললেও, ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন ক্রমশ চাপের মধ্যে পড়ছে। এই এআই বিতর্কে আদালতের সিদ্ধান্ত কোন দিকে যাবে তা দেখার বিষয়।