সংক্ষিপ্ত

সম্প্রতি হোটেল অ্যাসোসিয়েসন অফ ইন্ডিয়া (HAI) অর্থমন্ত্রকের কাছে আবেদন করেছে তাদের ইন্ডাস্ট্রির দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য। কেন্দ্রীয় সরকার ইউনিয়ন বাজেটে নতুন দিশা দেখাবে বলে আশাবাদী হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রি। 

অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতে (Covid) মানুষের যেমন প্রাণহানি হয়েছে তেমনই মারাত্মক প্রভাব পড়েছে কর্মজীবনেও। একদিকে বহু মানুষ যেমন খুঁইয়েছে তাঁর কর্মসংস্থান তেমনই আবার অনেক কর্মচারীদের মাস মাইনেতেই চলেছে কাঁচি। বলা ভাল সেই ধারা আজও অব্যাহত। অনেক কর্মচারী আজও সম্পূর্ণ মাস মাইনে পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। করোনা বিভিন্ন ধাপে তার চরিত্রের বদল ঘটিয়ে ক্রমশ ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করছে। বর্তমানে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন আতঙ্কে প্রতিনিয়ত জীবন কাটাচ্ছে গোটা বিশ্বের প্রতিটি মানুষ। সেই সঙ্গে সবচেয়ে বেশী করে যে আতঙ্ক গ্রাস করছে সেটি হল কর্মসংস্থান খোয়ানোর আশঙ্কা। কোভিডের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে যেভাবে বেকারত্বের যন্ত্রনায় ভুগেছে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির কর্মীরা সেই জন্যই সিদুরে মেঘ দেখে স্বাভাবিকভাবেই ভয় পাচ্ছেন কর্মচারীরা। এক্ষেত্রে হোটেল ইন্ডাস্ট্রির কর্মচারীরা বিশেষভাবে ভুক্তভোগী। করোনা আবহে বিভিন্ন হোটেলে তালা ঝুলেছে। ব্যাবসা একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছিল। এই রকম পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই করা হয়েছে কর্মী ছাটাই। সেই সঙ্গে মাস মাইনেতেও চলেছে দেদার কাঁচি। কিন্তু মাঝখানে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ার দরুণ ফের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল হোটেল ইন্ডাস্ট্রিগুলো। কিন্তু তার মাঝে গলার কাঁটা হয়ে বিঁধল করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এই অবস্থায় হোটেল ইন্ডাস্ট্রির (Hospitality) তাকিয়ে রয়েছে ২০২২-২৩ -এর আসন্ন ইউনিয়ন বাজেটের (Union Budget FY 2022-23) দিকে। 

সম্প্রতি হোটেল অ্যাসোসিয়েসন অফ ইন্ডিয়া (HAI) অর্থমন্ত্রকের (Ministry Of Finance) কাছে আবেদন করেছে তাদের ইন্ডাস্ট্রির দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য। তাদের তরফে আবেদন করা হয়েছে যাতে আসন্ন ইউনিয়ন বাজেটে বেশ কিছু নয়া নির্দেশিকা জারি করে হোটেল ইন্ডাস্ট্রির অস্তিত্বকে পুনরায় নিজের জায়গায় ফিরিয়ে আনা যায়। বারবার করোনার কামড়ে একেবারে জেরবার হয়ে যাচ্ছে হোটেল ইন্ডাস্ট্রিগুলো। তাই এই ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচানোর তাগিদেই হোটেল অ্যাসোসিয়েসন অফ ইন্ডিয়া অর্থমন্ত্রকের কাছে আবেদন পেশ করেছে। হোটেল অ্যাসোসিয়েসন অফ ইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে যে করোনার প্রভাবে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সেক্টর। বিভিন্ন ধরনের হোটেল এবং হসপিটালিটি কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে।

আরও পড়ুন-ইউনিয়ন বাজেটে ওয়ার্ক ফর্ম হোমে সুবিধা প্রদানের সম্ভবনা, চালু হতে পারে ওয়ার্ক ফর্ম হোম অ্যালাউন্স, কমতে পারে কর

আরও পড়ুন-Budget session: ৩১শে জানুয়ারি থেকে শুরু অধিবেশন, ১লা ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ

আরও পড়ুন-Budget Session: করোনার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বাজেট অধিবেশনে, সংসদের অধিবেশনে সময় ভাগাভাগি

এশিয়া নেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষভাবে ভুক্তহোটেল এক ইন্ডাস্ট্রির কর্মী (Hotl Worker) শ্বেতা গাঙ্গুলির (Sweta Gangully) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি আমাদেরকে জানিয়েছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন আছড়ে পড়ে তখন ধীরে ধীরে নড়বড়ে হতে থাকে তাজ বেঙ্গলের মত পাঁচতারা হোটেলের পরিষেবাও। করোনার প্রকোপ যখন ধীরে ধীরে আরও বাড়ছিল তখন দূরের কর্মীদের হোটেল আসা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই সময় দুই থেকে তিন মাস তাঁরা মাস মাইনে পেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরই তাঁদের কাছে নোটিশ আসে, দূরের কর্মীদের আপাতত আর কাজে আসার দরকার নেই। পরিস্থিতি ঠিক হলে আবার চিন্তা ভাবনা করা যাবে। এই রকম একটা সিদ্ধান্তে রীমিমত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মত অবস্থা হয়েছিল সেই হোটেল কর্মী শ্বেতা গাঙ্গুলির। করোনা পরিস্থিতিতে নতুন করে চাকরি পাওয়াটাও সেই সময় খুব সমস্যা ছিল। এদিকে মাস মাইনে বন্ধ হয়ে গেলে সংসারের ওপরও চাপ পড়বে। সব মিলিয়ে কোভিডে খুবই সাঙ্ঘাতিক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিল বলে জানিয়েছেন তাজ বেঙ্গল হোটেলের প্রাক্তন কর্মী শ্বেতা গাঙ্গুলি। 

ভারতের অর্থনীতিতে এই সেক্টরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার যদি আসন্ন ইউনিয়ন বাজেটে (Union Budget) এই ইন্ডাস্ট্রির ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করে তাহলে এই হোটেল ইন্ডাস্ট্রির অস্তিত্ব বজায় থাকবে। ভারতের মোট জিডিপি-র প্রায় ৯ শতাংশ প্রদান করে থাকে হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রি। ভারতের প্রায় ৪.৫ কোটি জনতা প্রত্যক্ষ ভাবে এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত। এছাড়াও অনেকেই পরোক্ষ ভাবে এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। প্রায় ১৬ কোটির মতো মানুষ এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এই সব দিক বিচার বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় সরকার ইউনিয়ন বাজেটে নতুন দিশা দেখাবে বলে আশাবাদী হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রি।