সংক্ষিপ্ত

বিদেশে পড়াশুনার প্ল্যান করার সময় থেকেই টাকর বিষয়ও প্ল্যানিংটা সেরে ফেলতে হবে। শেষ মুহুর্তের জন্য কিন্তু কোনও কিছু ফেলে রাখা চলবে না। জেনে নেওয়া যাক বিদেশে পড়ার জন্য আপনার ফিন্যানসিয়াল প্ল্যানিংটা ঠিক কীরকম হওয়াা উচিত। 

প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ দেশের মাটিতে হলেও বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করার একটা সুপ্ত বাসনা(Foreign Education plan) অনেকেই থাকে। কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সেই স্বপ্নপূরণের মাঝে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় টাকার অঙ্ক। বিদেশের বিভিন্ন নামী দামী প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য যে মোটা অঙ্কের টাকার প্রয়োজন হয় সেটা সবসময় সকলের পক্ষে একবারে মোটেই জোগাড় করা সম্ভব হয় না। তবে কোনও কাজই তো অসম্ভব নয়, কঠিন কাজকে কীভাবে সহজ করা যাবে সেই উপায় অবশ্যাই খুঁজে বের করতে হবে। আর তার জন্য দরকার একটা সঠিক প্ল্যানিং। আর ঠিক সময় ঠিক সিদ্ধান্তটি নিলে প্রয়োজনের সময় প্রাথমিকভাবে অবশ্যই বেশ কিছুটা টাকা আপনার হাতে থাকবে। তাই বিদেশে পড়াশুনার প্ল্যান করার সময় থেকেই টাকর বিষয়ও প্ল্যানিংটা সেরে ফেলতে হবে। বিদেশ পড়ার জন্য এন্ট্রান্স পরীক্ষা দেওয়ার পরই তোড়জোড় শুরু করতে হবে। শেষ মুহুর্তের জন্য কিন্তু কোনও কিছু ফেলে রাখা চলবে না। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক বিদেশে পড়ার জন্য আপনার ফিন্যানসিয়াল প্ল্যানিংটা(Financial Plan) ঠিক কীরকম হওয়াা উচিত। 

সঠিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাই
 
বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য সঠিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাছাই করাই হল প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ব্েশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্য়ে তুলনা করে দেখুন যে বিষয় উচ্চ শিক্ষালাভ করার উদ্দেশ্য সেই বিষয় কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোর্সের কোয়লিটি ভালো, খরচ কেমন, সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কলারশিপের ব্যবস্থা আছে কিনা, প্লেসমেন্টের সুযোগ কেমন। এছাড়াও বিদেশে থাকা-খাওয়া বাবদ যে খরচ সেই খরচের কিছুটা সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই পাওয়া যাবে কিনা। অর্থাৎ সেই ক্যাম্পাসের ভিতরেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে কিনা। সব দিক গুলো বিচার বিবেচনা করেই সঠিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে যাতে ভিষ্যতে আপনার পকেটে টানা পড়ে। 

আরও পড়ুন-Vidyasagar University: ন্যাকের নম্বরেই নাক কাটা গেল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের, বন্ধের মুখে ‘দূর-শিক্ষা’

আরও পড়ুন-Govt Caution against ed-techs: অনলাইন কোর্সের আড়ালেই জালিয়াতির ফাঁদ, কীভাবে এড়াবেন

আরও পড়ুন-TET Case: 'নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে ত্রুটি থেকে গিয়েছে', হাইকোর্টে স্বীকার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের

এডুকেশন লোনের ব্যবস্থা

উচ্চশিক্ষার জন্য এডুকেশন লোন নেওয়া অন্যতম সহজ একটি উপায়। তবে সেক্ষেত্রও কিন্তু বেশ কিছু শর্তাবলী রয়েছে। সেগুলো পূরণ হলে তবেই উচ্চশিক্ষার জন্য লোন পাওয়া সম্ভব। এডুকেশন লোন নেওয়ার জন্য আপনাকে প্রমান দিতে হবে আপনি একজন ভারতীয় নাগরিক। এরপর আপনি বিদেশের যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে চাইছেন সেখানকার একচটি করফারমেশন চিঠি লাগবে। কোনও ব্যাঙ্ক যখন উচ্চশিক্ষা লাবের জন্য কোনও শিক্ষার্থীকে ঋণ দেয় তখন ব্যাঙ্ক সেই ঋণের জন্য একশো শতাংশ সিকিওরিটি চায়। বেশির ভাহে নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কো-অ্যপ্লিকেন্টের দাবি করে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বাবা-মা বা নিজের ভাই-বোন কো-অ্যাপ্লিকেন্ট হয়ে থাকে। এই সমস্ত বিষয় ঠিকঠাকভাবে এগলে বিদেসে উচ্চশিক্ষার জন্য আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন। 

টাকার সঠিক পরিমান নির্ধারন করা

উচ্চশিক্ষার জন্য যখন বিদেশ বিভুঁইতে যাবেন তার আগে একটা বাজেট অবশ্যই ঠিক করে নিতে হবে। কলেজ বা ইউনিভার্সিটির খরচ, যাতায়াতের খরচ, থাকা ও খাওয়াদাওয়া বাবদ কত খরচ হতে পারে এই সব বিষয়গুলোকে মাথায় নিয়েই একটা বাজেট করতে হবে। যদি আন্তর্জাতিক কোর্স ফি বাবদ লোন চান তাহলে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যায়। কিন্তু যদি এডুকেশন লোন নিতে চান তাহলে মার্জিন লেভলে লোন নিতে হবে। মার্জিন লেভল কতটা হবে সেটা বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ওপর নির্ভর করে। এডুকেশন লোনের ক্ষেত্রে কিন্তু একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, প্রথমে কিছুটা টাকা নিজের পকেট থেকেই দিতে হবে। বাকি টাকা লোন মারফত পাবেন।  

সুরক্ষিত ও অসুরক্ষিত ঋণ

এডুকেশন লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কাছে দুধরনের অপশান রয়েছে। সুরক্ষিত লোন ও অসুরক্ষিত লোন। যদি সুরক্ষিত লোন নিতে চান তাহলে লোনের জন্য একজন গ্যারেন্টার প্রয়োজন। যদিও ৪ লাখ টাকার নীচে কোনও ব্যাঙ্ক গ্যারেন্টারের জন্য দাবি করে না। কিন্তু ৪ লাখ টাকার বেশী লোন নিলে সেক্ষেত্রে একজন গ্যারেন্টারের প্রয়োজন হবেই। গ্যারেন্টার হিসাবে আপনি কোনও ব্যক্তিকে যেমন নিযুক্ত করতে পারেন তেমনই  কোনও ফিক্সড ডিপোজিট, সোনা, প্রপারটি বা অন্য কিছু জমা রাখতে পারেন। 

সঠিক ঋণদাতা নির্বাচন

উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য যখন ঋণ নেবেন তখন সঠিক ঋণদাতা খুঁজে ঋণ নেওয়াই বাঞ্চনীয়। এক্ষেত্রে কোনও ব্যাঙ্ক বা নন ব্য়াঙ্কিং ফিন্যানসিয়াল সংস্থা বা NBFC থেকে লোন নিলে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন। যে প্রতিষ্ঠান থেকেই লোন না কেন, তার আগে কয়েকটি বিষয়ের ওপর অবশ্যই নজর রাখতে হবে। যেমন ধরুন., সুদের হার, প্রসেসিং চার্জ, সর্বোচ্চ লোনের সীমা, প্রসেসিং টাইম, মার্জিন মানি লেভল কতটা-এই ধরনের জরুরি বিষয়গুলোর ভিত্তিতেই লোন নেওয়া শ্রেয়। 

মার্জিন মানি লেভল

বিদেশে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ব্যাঙ্ককে কিন্তু মার্জিন মানি লেভলের টাকাটা অবশ্যই প্রদান করতে হয়। আর সেই মার্জিন লেভল হল ৫ শতাংশ তেকে ১৫ শতাংশ।  উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যদি আপনার মোট ৫০ লাখ টাকার দরকার হয় তাহলে আপনাকে ২.৫ লাখ টাকা থেকে ৭.৫ লাখ টাকা দিতে হবে। তাই লোন নেওয়ার আগে আপনার পকেটে মার্জিন লেভলের টাকাটা থাকা কিন্তু আবশ্যক। বিদেশ উচ্চশিক্ষার প্ল্য়ানিং-র জন্য যদি ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে কিন্তু আগে থেকেই এই টাকার পরিমান জোগাড় করতে হবে। অনেক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আবার মার্জিন লেভলের টাকার পরিমান ভালো হলে সেক্ষেত্রে সুদের হার অনেকটা কমিয়েও দেয়। 

আজকাল সরকারের তরফেও উচ্চশিক্ষার জন্য অনেক রকমের সাহায্য পাওয়া যায়। তবে বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা লাভের স্বপ্নপূরণের জন্য যদি লোন নিতে চান তাহলে এই বিষয়গুলো অবশ্যইউ মাথায় রাখবেন।