সংক্ষিপ্ত
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত তেলের দামে বৃদ্ধিতে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এমতাবস্থায় সোমবার অপরিশোধিত তেলের দাম ২০০৮ সালের দামকেও ছাপিয়ে গিয়েছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার (Ukraine Russia War) আঘাত এবার এসে পড়ল ভারতীয় অর্থনীতিতেও (Indian Economy)। কারণ টাকার দামে লাইফটাম লো বা সর্বকালীন পতন-এর ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে এখন প্রতি ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় মুদ্রার দাম পড়ছে ৭৬.৯৩ টাকা। গত কয়েক দিন ধরেই সমানে টাকার দাম পড়ছিল। কিন্তু তা কোনওভাবেই সর্বকালীন পতনের রেকর্ডকে ভাঙতে পারেনি। সপ্তাহের ছুটি কাটিয়ে সোমবার বাজার খুলতেই দেখা যায় ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় রুপি-র দাম প্রায় ৭৭ টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরিশোধিত তেলের দামে (Oil Price) বৃদ্ধিতে টাকার দামে পতনকে নিশ্চিত করেছে। ইউক্রেনের উপর হামলা করেছে রাশিয়া। এর জেরে রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলি। এই নিষেধাজ্ঞার জেরে বিশ্ববাজারে রাশিয়ার তেল ঢোকাটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে অপরিশোধিত তেলেক জোগানে বিশ্বজুড়েউ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কারণ আগেই ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞার জেরে সেই দেশ থেকে অপরিশোধিত তেল বিশ্ব বাজারে আসছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাশিয়া। যার ফলে অপরিশোধিত তেলের জোগানের অপ্রতুলতায় চাহিদার মাত্রাটা অনেক বেশি থাকায় দাম বেড়ে গিয়েছে ব্যারেল প্রতি তেলের। যদিও, বন্ডের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। মনে করা হচ্ছে অপরিশোধিত তেলের দামে বৃদ্ধি (Oil Price Hike) হওয়ায় বন্ডের দাম বেড়েছে।
আরও পড়ুন- রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আঁচ আন্তর্জাতিক তেল বাজারে, ২০০৮কে ছাপিয়ে গেছে মূল্যবৃদ্ধি
আরও পড়ুন- স্বপ্নভঙ্গ এলআইসির, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আপাতত স্থগিত হয়ে গেল সংস্থার প্রথম আইপিও
আরও পড়ুন- আর সমস্যায় পড়তে হবে না যাত্রীদের, ক্যাব চালকদের জন্য নয়া গাইডলাইন রাজ্যের
অপরিশোধিত তেলের দামে বৃদ্ধি-তে (Oil Price Hike) প্রভাব যে সুদূরপ্রসারি হবে তার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে বলেও দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারত তার তেলের দুই তৃতীয়াংশ আমদানি করে থাকে। যার জন্য অপরিশোধিত তেলের দামে বৃদ্ধি ভারতের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিটের অঙ্ককে বাড়িতে তুলবে। আর সেই সঙ্গে আমদানিতে মুদ্রাস্ফীতির অঙ্ককেও বাড়িয়ে তুলবে। অতিমারির শুরুতে ২০২০ সালের ২২ এপ্রিল টাকার দামে পতন হতে হতে ৭৬.৯০-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। এটাই ছিল এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পতন। এদিকে টাকার দামে পতন হতেই বেশ কিছু ব্যাঙ্ক সংস্থা তাদের শেয়ার বেচে দিতে থাকে। এতে বাজারে ডলারের রিজার্ভে একটু ধাক্কা লাগে বলে জানিয়েছেন এক শেয়ার বিশেষজ্ঞ। তবে বাজার ঊর্ধ্বমূখী হলে টাকার দামে পতন রোধ হবে বলেও আশা রাখছেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণত এই ধরনের পরিস্থিতি টাকার দামে পতন রুখতে সরকার অধীনস্থ ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে দিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (Reserve Bank Of India) বাজারে ডলার ছেড়ে থাকে। এই মুহূর্তে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ফরেক্স রিজার্ভ রয়েছে ৬৩১.৫৩ বিলিয়ন ডলার। বাজারের বিনিয়োগকারীদের আশা টাকার দামে পতন রুখতে এই ফরেক্স রিজার্ভ-কে নিশ্চিতভাবে কাজে লাগাবে আরবিআই।