সংক্ষিপ্ত
- খেজুরি বিধানসভাটি ‘অধিকারী-গড়’ কাঁথি লোকসভার কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে
- এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র প্রার্থী শান্তনু প্রামাণিক
- তৃণমূলের প্রার্থী পার্থপ্রতিম দাস
- বাম-কংগ্রেস জোটের তরফে প্রার্থী সিপিএমের হিমাংশু দাস
সমিকা মাইতি, প্রতিনিধি-- খেজুরি বিধানসভা কেন্দ্রটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। খেজুরি ১ ও ২ ব্লক ছাড়াও ভগবানপুর ২ ব্লকের গড়বাড়ি ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। এসসি প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত এই আসনে এবার শান্তনু প্রামাণিককে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তৃণমূল প্রার্থী করেছে পার্থপ্রতিম দাসকে। সিপিএমের হয়ে লড়বেন হিমাংশু দাস।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের নিরিখে এই বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২২৮২২০। ভোট পড়েছিল ১৯৮৩৬০। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শিশির অধিকারী এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৯৬,৫০৬টি ভোট পেয়েছিলেন। বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস সামন্ত পেয়েছিলেন ৯০৯৫৩টি ভোট। সিপিএমের পরিতোষ পট্টনায়ক পেয়েছিলেন ৭২১৫টি ভোট। শিশির অধিকারীর ছেলে তথা পূর্ব মেদিনীপুরের অবিসংবাদী নেতা শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছেন। তৃণমূল সরকারের কাজকর্ম নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ-বিক্ষোভও রয়েছে। সব মিলিয়ে, এবার তৃণমূলের হ্যাটট্রিক করার সম্ভাবনা নেহাতই ক্ষীণ।
খেজুরি বিধানসভা আসনে কে-কত বার জয়ী
স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত আসনটি কংগ্রেসের দখলে ছিল। ১৯৬৯-এ বাংলা কংগ্রেস এই আসনে জেতে।
পাঁচ দফায় এই আসনে জিতেছেন সুনির্মল পাইক- ১৯৭৭ জনতা পার্টি, ১৯৮২-৮৭ নির্দল, ১৯৯১ সিপিআই(এম), ২০০১ ডব্লিউবিএসপি।
২০০১, ২০০৬ সালে এই আসনে হারে তৃণমূল কংগ্রেস।
২০১১ ও ২০১৬-তে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী রণজিৎ মণ্ডল।
স্বাধীনতার পরে ১৯৫১ সালে প্রথম নির্বাচনের সময় খেজুরি বিধানসভা আসনটিই ছিল না। দু’টি আসনে বিভক্ত এই এলাকার দু’টিতেই কংগ্রেস প্রার্থী জিতেছিলেন তখন। ১৯৫৭ সালের পর থেকে খেজুরি আসনে ভোট হয়। ১৯৬২ তে কংগ্রেস প্রার্থী অবন্তী কুমার দাস এই আসন থেকে জেতেন। ১৯৬৭ সালে কংগ্রেস প্রার্থী বি পাইক এই আসন থেকে জেতেন। তারপর ১৯৬৯ সালে বাংলা কংগ্রেসের হয়ে পরেশ দাস জয়ী হন। ১৯৭১ সালে সিপিএআই(এম) প্রার্থী জগদীশ চন্দ্র দাস এই আসনে জিতলেও তার পরের বছরই কংগ্রেস প্রার্থী বিমল পাইকের কাছে ভোটযুদ্ধে হেরে যান। ১৯৭৭ সালে এই আসনটি দখল করে জনতা পার্টি। সিপিআই(এম)-এর সুনীল সিটকে হারিয়ে দেন জনতা পার্টির সুনির্মল পাইক। এই সুনির্মলবাবুই এরপরে ১৯৮২ আর ১৯৮৭ তে পরপর দু’বার নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে এই আসন থেকে জেতেন। ১৯৯১ সালে সুনির্মলবাবু সিপিআই(এম)-এর হয়ে দাঁড়িয়ে ফের ভোটে জেতেন। কংগ্রেস প্রার্থী শান্তিরাম দাস ছিলেন তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী। পরের বার অর্থাৎ ১৯৯৬ সালের ভোটে সুনির্মলবাবু ফের দল বদলে কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়ান। কিন্তু সেবার সিপিআই(এম) প্রার্থী রামচন্দ্র মণ্ডলের কাছে হেরে যান তিনি। ২০০১ সালে ফের দল বদলে ডব্লিউবিএসপি-র হয়ে ভোটে দাঁড়ান সুনির্মলবাবু। ততদিনে রামচন্দ্রবাবু তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। সেবার রামচন্দ্রবাবুকে হারিয়ে দেন সুনির্মলবাবু। ২০০৬ সালে তৃণমূল এই আসনে প্রার্থী করে পার্থপ্রতিম দাসকে (২০২১-এও ইনিই তৃণমূলের প্রার্থী)। ডব্লিউবিএসপি প্রার্থী স্বদেশ পাত্র তাঁকে হারিয়ে দেন। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে এই আসন থেকে জয়ী হন তৃণমূলের প্রার্থী রণজিৎ মণ্ডল। তিনি ৮৭,৮৩৩টি ভোট পান। শতাংশের নিরিখে ৫৩.১১। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজবাদী পার্টি-র অসীম মণ্ডল পান ৭১,৬৭৩টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী কালীপদ মণ্ডল ৩৯২৪টি ভোট পেয়ে ছিলেন তৃতীয় স্থানে। নির্দল প্রার্থী সচ্চিদানন্দ দাস পান ১,৯৩৯টি ভোট।