সংক্ষিপ্ত

দেশের অনেকেই যেখানে এখনও করোনাভাইরাস টিকা (Coronavirus Vaccine) পাননি, বিহারের এক বৃদ্ধ নিয়েছেন ১১টি ডোজ! কোউইন (CoWIN) পোর্টালের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। 
 

যেদিন থেকে ভারতে টিকাকরণ (Covid-19 Vaccination) শুরু হয়েছে, সেই দিন থেকে বিহার (Bihar) রাজ্যে টিকাকরণ নিয়ে অদ্ভূত অদ্ভূত খবর আসতে শুরু করেছে। এই রাজ্যে যেমন মৃত মানুষের ফোনে সফল টিকাকরণের বার্তা এসেছে, তেমনই কোউইন অ্যাপের তথ্য অনুযায়ী এই রাজ্যেই টিকায়িত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Pm Narendra Modi) থেকে শুরু করে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi), বলিউড তারকা অমিতাভ বচ্চনরা (Amitabh Bachchan)। এবার আরও একটি মাথা খারাপ করে দেওয়ার মতো খবর এল নীতীশ কুমারের রাজ্য থেকেই। দেশের অনেকে যেখানে এখনও ভ্যাকসিনের পুরো ডোজ পাননি, সেই সময় দাঁড়িয়ে বিহারের এই ব্যক্তি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ১১ টি ডোজ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন!

বিহারের মাধেপুরা (Madhepura) জেলার উড়াকিশুনগঞ্জ মহকুমার অন্তর্গত ওরাই গ্রামের বাসিন্দা ৮৪ বছরের ব্রহ্মদেব মন্ডল। গত বছরের  ১৩ ফেব্রুয়ারি, তিনি করোনাভাইরাস টিকার (Coronavirus Vaccine) প্রথম ডোজটি নিয়েছিলেন। তারপর থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি বিভিন্ন বিনামূল্যের টিকাদান কেন্দ্র থেকে ১১টি ডোজ নিয়েছেন। সম্প্রতি ১২ তম ডোজ নিতে গিয়ে তাঁর এই মুড়ি-মুড়কির মতো কোভিড-১৯ টিকার ডোজ নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। আর তাতে বেশ সমস্যায় পড়েছেন তিনি। কারণ, মাধেপুরা জেলার সিভিল সার্জন বলেছেন, কীভাবে ওই প্রাক্তন ডাক-কর্মী এতগুলি করোনা টিকার ডোজ নিতে পেরেছেন, সেই বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে।

১৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ব্রহ্মদেব মন্ডল তিনি দ্বিতীয় ডোজটি নিয়েছিলেন ঠিক একমাস পর, ১৩ মার্চ। তার মাসদুই পর অন্য এক টিকাদান কেন্দ্র থেকে ১৯ মে তিনি তৃতীয় ডোজ নেন। একমাস পর ১৬ জুন, আরেকটি কেন্দ্র থেকে নিয়েছিলেন চতুর্থটি। পঞ্চম ডোজ নিয়েছিলেন ২৪ জুলাই, এক হাইস্কুলের টিকাদান কেন্দ্রে। ষষ্ঠ ডোজ নেন ৩১ অগাস্ট। এরপর শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই তিনৃতিনটি ডোজ নেন তিনি - ১১ সেপ্টেম্বর সপ্তম, ২২ সেপ্টেম্বর অষ্টম এবং ২৪ সেপ্টেম্বর নবম। দশম ও একাদশতম ডোজ দুটি নেন ভিন্ন জেলায় - যথাক্রমে খাগরিয়া এবং ভাগলপুরে। 

প্রথম আটবার টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি তাঁর আধার কার্ড এবং তাঁর ফোন নম্বর ব্যবহার করেছিলেন। পরের তিনবার তাঁর ভোটার আইডি কার্ড এবং তাঁর স্ত্রীর ফোন নম্বর ব্যবহার করেন। আর তাতেই সকলের নজর এড়িয়ে গত একবছরে ১১টি করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ নিয়ে গিয়েছেন তিনি। এতবার বৈধভাবেই টিকা নেওয়ায় কোউইন অ্যাপের সিস্টেমের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে, বিহারের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা দাবি করেছেন, অফলাইন ক্যাম্পগুলিতে আসলে কোউইন অ্যাপের ইকোসিস্টেমকে ধোকা দেওয়া যেতে পারে। অফলাইন ক্যাম্পগুলিতে আধার কার্ড এবং ফোন নম্বর সংগ্রহ করে পরে ডাটাবেসে বসানো হয়। কখনও কখনও, একই বিবরণ থাকলে সিস্টেমে তথ্য নিতে চায় না। ফলে কম্পিউটারের তথ্য এবং অফলাইন রেজিস্টারে মাঝে মাঝে পার্থক্য হয়ে যায়। 

কিন্তু, কেন এতবার করোনা টিকা নিলেন  ব্রহ্মদেব মন্ডল? তাঁর ভয় করেনি? ব্রহ্মদেব জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন ডোজগুলি নিয়ে তাঁর শরীর ও স্বাস্থ্যের দারুণ উপকার হয়েছে। এই কারণেই তিনি বারবার টিকার ডোজ নিয়েছেন। শুধু তই নয়, তিনি দেশের সকলকে টিকা নেওয়ার জন্য আবেদনও করেছেন।, বলেছেন, 'সরকার একটি চমৎকার জিনিস তৈরি করেছে। এটা সবার নেওযা উচিত।' তবে, বিষয়টা হল, তিনি যদি আর কারোর জন্য টিকা রাখেন, তাহলেই বাকিরা টিকা নিতে পারবে।